Advertisement
১৭ মে ২০২৪

তিন মাসের ছাড় স্কুলগাড়িকে

স্কুলগাড়ি এবং বাসকে ফের তিন মাস সময় দিল রাজ্য সরকারের পরিবহণ দফতর। তার মধ্যে নিয়মকানুন মেনে গাড়ির সুরক্ষা নিশ্চিত এবং কাগজপত্র ঠিক করে নিতে হবে মালিককে। না হলে সরকার বেআইনি গাড়ি আটক করবে।

স্কুল বাস

স্কুল বাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ জুলাই ২০১৬ ০১:২৯
Share: Save:

স্কুলগাড়ি এবং বাসকে ফের তিন মাস সময় দিল রাজ্য সরকারের পরিবহণ দফতর। তার মধ্যে নিয়মকানুন মেনে গাড়ির সুরক্ষা নিশ্চিত এবং কাগজপত্র ঠিক করে নিতে হবে মালিককে। না হলে সরকার বেআইনি গাড়ি আটক করবে। স্কুলগাড়ি এবং বাসের সংগঠনগুলির সঙ্গে বৈঠকে এমনটাই জানিয়ে দিলেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। বৈঠকের শেষে তিনি নিজেই এ কথা জানিয়েছেন।

তবে একই সঙ্গে ফের নিশ্চিত করেছেন, স্কুলগাড়ির সুরক্ষার সঙ্গে রাজ্য সরকার কোনও রকম আপস করবে না।

তিন মাস বা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় দেওয়াই নয়, স্কুলগাড়ির মালিকদের একগুচ্ছ দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রেও সোমবার অনেকটাই নমনীয় অবস্থান নিয়েছে সরকার। বৈঠকের শেষে মন্ত্রী জানিয়েছেন, এত দিন পর্যন্ত স্কুলগাড়ি এবং বাসকে বাণিজ্যিক গাড়ির মতো সারা রাজ্যের পারমিট দেওয়া হত না। কিন্তু অনেক দিন ধরেই স্কুলগাড়ির মালিকেরা সারা রাজ্যের পারমিট চাইছিলেন। মন্ত্রী এ দিন স্কুলগাড়ির সংগঠনগুলিকে ওই দাবি মানার আশ্বাস দিয়েছেন। এমনকী, অবসর সময়ে স্কুলগাড়ি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য মালিকদের দাবিও মেনে নিয়েছে সরকার। মন্ত্রী সংগঠনগুলিকে আশ্বাস দিয়েছেন, দু’-এক দিনের মধ্যেই এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে।

পরিবহণ দফতরের খবর, সরকার মালিকদের জানিয়ে দিয়েছে, বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করা গাড়িও এ বার থেকে স্কুলগাড়ি হিসেবে চালাতে পারবে। সে ক্ষেত্রে অন্তত দশ জন অভিভাবককে চিঠি দিয়ে পরিবহণ দফতরে সংশ্লিষ্ট গাড়িটিকে স্কুলগাড়ির পারমিট দেওয়ার অনুরোধ করতে হবে। তবেই ওই গাড়িটি স্কুলগাড়ির পারমিটও পাবে। পাশাপাশি, ব্যক্তিগত মালিকানার গাড়িও স্কুলগাড়ির পারমিটের আবেদন জানাতে পারবে। তবে ২০০৬ সালের ১ জানুয়ারির আগের গাড়ি হলে তা পাবে না। পুরনো বা বাতিল গাড়ির মালিকেরা নতুন গাড়ি চাইলে সরকারের থেকে আবেদন সাপেক্ষে ‘গতিধারা’র টাকা পাবেন।

পরিবহণ দফতরের এক কর্তা অবশ্য বলেন, ‘‘ব্যক্তিগত মালিকানায় থাকা গাড়ি নিয়ে কেউ কেউ স্কুলগাড়ির ব্যবসা করছেন। এটা সরকার কোনও অবস্থাতেই মেনে নেবে না। কারণ, ব্যক্তিগত গাড়ির প্রতি বছর ফিটনেস শংসাপত্র নিতে হয় না। ফলে, ওই সব গাড়িতে দুর্ঘটনা হলে, তা হত্যারই সামিল। তিন মাস দিচ্ছি। তার পরেও ওই সব গাড়ি স্কুলগাড়ির পারমিট না নিলে কড়া ব্যবস্থা নেবে সরকার।

স্কুলগাড়ি মালিকদের সংগঠন ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর নেতা অরূপম দত্ত বৈঠকের পরে বলেন, ‘‘সরকার কার্যত আমাদের সব দাবিই মেনেছে। এর পরেও যদি কোনও মালিক গাড়ির সব কাগজপত্র ঠিক না করেন, সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত না করেন, তা দুর্ভাগ্যজনক হবে।’’ একধাপ এগিয়ে অরূপমবাবু জানিয়েছেন, সরকারের পরামর্শ মেনে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ প্রকল্পেও কাজ শুরু করছেন তাঁরা। আগামী রবিবার স্কুলগাড়ির চালকদের নিয়ে পুলিশের সঙ্গে যৌথ ভাবে একটি কর্মশালার আয়োজন করেছেন তাঁরা।

পরিবহণমন্ত্রীর এমন অবস্থানে স্কুলগাড়ির মালিকেরা খুশি হলেও বাসমালিকেরা খুশি নন। ওয়েস্ট বেঙ্গল কনট্র্যাক্টচুয়াল ক্যারেজ ওনার অ্যান্ড অপারেটর্স-এর নেতা হিমাদ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘আমরা নিয়ম মেনেই সব বাস চালাই। সে ক্ষেত্রে যাঁরা নিয়ম মানবেন না, তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নেওয়ার বদলে শুধুই সময় দিয়ে যাবে, এটা ঠিক নয়। তা হলে মোটা টাকা কর দিয়ে, নিয়ম মেনে লাভ কী হল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Transport Department school car
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE