Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

লঙ্কা-কাণ্ডের ঝাঁঝে কেশে নাকাল পাড়া

কোনও রোগ নয়, বাসিন্দাদের এমন অবস্থার নেপথ্যে রয়েছে লঙ্কার ঝাঁঝ। তাতেই অতিষ্ঠ উল্টোডাঙার দাসনগরের ডালপট্টির এলাকার বাসিন্দারা।

বিপত্তি: আগুন লেগেছিল এই গুদামেই। নিজস্ব চিত্র

বিপত্তি: আগুন লেগেছিল এই গুদামেই। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪৮
Share: Save:

কেউ গতকাল রাত থেকে ক্রমাগত হেঁচে যাচ্ছেন। কারও সমস্যা কাশির। কারও কারও আবার নিঃশ্বাসটুকু নিতেও কষ্ট হচ্ছে। ছলছল চোখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কোনও কোনও বাসিন্দা। অবস্থা এমনই যে বাড়িতে টেকাই দায়।

কোনও রোগ নয়, বাসিন্দাদের এমন অবস্থার নেপথ্যে রয়েছে লঙ্কার ঝাঁঝ। তাতেই অতিষ্ঠ উল্টোডাঙার দাসনগরের ডালপট্টির এলাকার বাসিন্দারা।

পুলিশ সূত্রের খবর, সোমবার গভীর রাতে ডালপট্টির ১৫ নম্বর কৃত্তিবাস মুখার্জি রোডের একটি শুকনো লঙ্কার গুদামে আগুন লাগে। গুদামে রাখা গুঁড়ো লঙ্কার বস্তা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে যায় দমকলের ১৫টি ইঞ্জিন। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর নেই। কিন্তু স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, পোড়া লঙ্কার ঝাঁঝে এলাকায় টেকাই মুশকিল হয়ে গিয়েছে। মঙ্গলবারও লঙ্কার ঝাঁঝ রয়েছে এলাকা জুড়ে।

দমকল সূত্রের খবর, সোমবার রাত সওয়া ১২টা নাগাদ ওই গুদামে আগুন লাগে। তখন গুদামে কয়েক জন কর্মী ছিলেন। তাঁরাই প্রথমে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারায় দমকলে খবর দেওয়া হয়। দমকলের ১৫টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিক ভাবে মনে করছে দমকল।

স্থানীয়েরা জানাচ্ছেন, ওই গুদামে লঙ্কা গুঁড়ো করা হত। লরি করে শুকনো লঙ্কা আসত সেখানে। সেগুলি গুঁড়ো করার পরে বস্তাবন্দি করে বাইরে পাঠানো হত। ওই রাতে গুঁড়ো লঙ্কার বস্তাতেই আগুন লেগে যায়। আগুন লাগার সঙ্গে সঙ্গেই লঙ্কার তীব্র ঝাঁজ ছড়িয়ে পড়ে এলাকা জুড়ে। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘লঙ্কার ঝাঁঝে টেকা যাচ্ছিল না। বাড়ি ছেড়ে সকলে মিলে রাস্তায় চলে যাই।’’ আর এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আগুন নিভিয়ে দিয়েছিল দমকল। কিন্তু লঙ্কার গন্ধ কিছুতেই যাচ্ছে না!’’ শুধু স্থানীয়েরাই নন, পুলিশ, দমকল কর্মীরাও ওই লঙ্কার ঝাঁঝে রীতিমতো অস্থির হয়ে পড়েন। ক্রমাগত হাঁচি-কাশি চলতেই থাকে।

তবে স্থানীয়দের একাংশের বক্তব্য, ডালপট্টির ওই ঠিকানায় একের পর এক গুদাম রয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ গুদামেই ন্যূনতম অগ্নি সুরক্ষা বিধি মানা হয় না। ন’বছর আগেও ওই এলাকায় একটি গুদামে আগুন লেগেছিল। তার জেরে গুদামটি এমন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল যে, সেটি পরিত্যক্ত অবস্থাতেই রয়েছে। কিন্তু তার পরেও অগ্নি সুরক্ষা বিধি মানা হয়নি। অন্য এক গুদাম মালিকের কথায়, ‘‘আগুন নেভানোর জন্য আমাদের নিজস্ব পরিকাঠামো রয়েছে। তবে সেটা সকলের নেই। এখানেই এ ভাবেই চলে।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর অনিন্দ্যকিশোর রাউত বলেন, ‘‘অগ্নি সুরক্ষা বিধির বিষয়টি অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Red Pepper Smell Fire Factory
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE