—প্রতীকী ছবি।
একাধিক ভুয়ো সংস্থা খুলে সেগুলির মাধ্যমে চলছিল ভুয়ো লেনদেন। যার ফলে পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) বাবদ সরকারের ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ৬৩ কোটি টাকা। প্রতারণার এ হেন অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমে এক ব্যবসায়ীকে সোমবার গ্রেফতার করলেন কলকাতা পুলিশের এনফোর্সমেন্ট শাখার অফিসারেরা। ধৃতের নাম অশোককুমার আগরওয়াল ওরফে গুল্লা। তদন্তের সুবিধার জন্য আদালত ধৃতকে পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে। এই ঘটনায় আরও এক অভিযুক্ত রোহিত মানসারিয়া ওরফে মিকু বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত পলাতক। এর আগে রোহিতের আগাম জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রোহিত এবং অশোক মিলে বছর দেড়েক আগে ১৫টিরও বেশি ভুয়ো সংস্থা খোলে। ‘রেজিস্ট্রার অব কোম্পানিজ’-এ ভোজ্য তেলের সংস্থা হিসেবে সেগুলির নাম নথিভুক্ত করা হয়। অভিযোগ, বাস্তবে ওই সংস্থাগুলির কোনওটিরই উৎপাদন বা পরিষেবা বলে কিছু ছিল না। সংস্থাগুলির নামে খোলা ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে চলত লেনদেন। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘কর ফাঁকি দেওয়ার পাশাপাশি কালো টাকা সাদা করার কাজ করত ওই প্রতারণা-চক্রটি। বড়বাজার এবং কলকাতার বিভিন্ন এলাকায় এমন প্রচুর ভুয়ো সংস্থার নাম পাওয়া গিয়েছে। তদন্তে উঠে এসেছে একাধিক ব্যক্তির নাম। তাদেরও খোঁজ চলছে।’’
লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরের গোড়ায় এই প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসে। মূলত ইনপুট ট্যাক্সের নথি খতিয়ে দেখে জালিয়াতির বিষয়টি ধরতে পারেন রাজ্য সরকারের বিক্রয়কর দফতরের অফিসারেরা। তাঁদের তরফে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এন্টালি থানায় জিএসটি ফাঁকি দেওয়া, প্রতারণা-সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। তারই ভিত্তিতে তদন্তে নামেন এনফোর্সমেন্ট শাখার গোয়েন্দারা। তাঁরা জানিয়েছেন, উদ্ধার হয়েছে বহু নথিপত্র।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অভিযুক্তেরা রিকশাওয়ালা থেকে শুরু করে বিভিন্ন জনের ব্যক্তিগত নথি হাতিয়ে ওই ভুয়ো সংস্থাগুলি খুলেছিল। তারা নিজেদের মধ্যেই লেনদেন করত। এক জন বিক্রি করত, অন্য জন কিনত। আদতে যা ছিল শুধু কাগজে-কলমে। তদন্তকারী এক অফিসার জানান, জিএসটি-র নিয়ম অনুযায়ী, কোনও সংস্থা অন্য সংস্থার থেকে জিনিস কেনার সময়ে জিএসটি দেয়। সেই ক্রেতা সংস্থা ওই পণ্য বাজারে বিক্রির মাধ্যমে জিএসটি আদায় করে। ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিটের সাহায্যে আগের জিএসটি জমা দেওয়ার নথি দেখিয়ে পণ্যে ছাড় পায় ক্রেতা সংস্থা। পুলিশ জানাচ্ছে, ভুয়ো সংস্থা খুলে সরকারের থেকে ওই ছাড় আদায় করে ধৃতেরা প্রতারণা চক্রটি চালাত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy