দেড় বছর পরে অবশেষে বুধবার খুলল উল্টোডাঙা উড়ালপুল। এ দিন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, “উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ভেঙে পড়া ডেক জোড়া লাগানোর কাজ শেষ। আজ বিকেল থেকেই উড়ালপুলের ভিআইপি রোড থেকে ই এম বাইপাসমুখী রাস্তা খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে এখন থেকে আর পণ্যবাহী গাড়ি উড়ালপুলের উপর দিয়ে যেতে পারবে না। তাদের উড়ালপুলের নীচের রাস্তা দিয়ে যেতে হবে।” পুরোপুরি খুলে দেওয়ার আগে পরীক্ষামূলক ভাবে ওই উড়ালপুল দিয়ে কয়েকটি গাড়িও চালানো হয়।
গত বছর ২ মার্চ উল্টোডাঙা উড়ালপুলের ভিআইপি রোড থেকে বাইপাস যাওয়ার রাস্তার একটি ডেক ভেঙে পড়ে কেষ্টপুর খালে। শেষ রাতে একটি ট্রাক উড়ালপুলের ওই অংশ দিয়ে যাওয়ার সময়ে রেলিংয়ে ধাক্কা মারলে এই ঘটনা ঘটে। গুরুতর জখম হন ট্রাকের চালক ও খালাসি। এর পরেই উড়ালপুলের ভিআইপি রোড থেকে বাইপাসমুখী রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বেশ কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর পুজোর আগে ভাঙা ডেকটি মেরামতির কাজ শুরু হয়।
একটি ডেক জোড়া লাগাতেই দেড় বছর লেগে গেল কেন? কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে ডেকটি নির্মাণের সময়ে টেন্ডার প্রক্রিয়ায় একটু দেরি হয়ে যায়। কারণ ডেকটি যে ইস্পাত দিয়ে তৈরি হবে বলে ঠিক হয়, তার মানের সঙ্গে কোনও রকম আপস করা হয়নি। সেই সঙ্গে ইঞ্জিনিয়াররা জানিয়েছেন, উড়ালপুলের ওই ডেকটি ছিল অনেকটা কাস্তের মতো বাঁকা। তাই উড়ালপুলের ওই অংশটি খুব সাবধানতার সঙ্গে তৈরি করা হয়েছে বলে ইঞ্জিনিয়ারেরা জানিয়েছেন। কেএমডিএ সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন করে ডেকটি তৈরির সময়ে নিরাপত্তার দিকটিকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
পুজোর আগে উড়ালপুলের দুই অংশ খুলে যাওয়ায় উল্টোডাঙায় যানজটও অনেকটা কমে যাবে বলে মনে করছেন ওই এলাকায় কর্তব্যরত ট্রাফিক পুলিশ অফিসারেরা। কেএমডিএ-র এক অফিসার জানান, শুধু ভাঙা অংশ খোলাই নয়, উড়ালপুলের নীচের রাস্তাও মেরামত করা হচ্ছে। এর ফলে যে সব ভারী গাড়ি উড়ালপুলের উপর দিয়ে যেতে পারবে না, সেগুলিও খুব সহজেই ভিআইপি রোড থেকে বাইপাসে পড়তে পারবে বলে তাঁদের দাবি।
পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানান, প্রথমে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, আগামী সোমবার এই উড়ালপুল খোলা হবে। তবে কাজ শেষ হয়ে যাওয়ায় আর দেরি করা হয় নি। সেতু চালু হওয়ার পরে প্রথম যে গাড়িটি যায়, সেটি পুরমন্ত্রীরই। ফিরহাদ জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ফিট সার্টিফিকেটও পাওয়া গিয়েছে।