Advertisement
০৪ মে ২০২৪

চারুচন্দ্র কলেজে হাঙ্গামা, অভিযুক্ত শোভনদেব পুত্র সায়নদেব

তখন কলেজে স্নাতক পার্ট টু-র টেস্ট চলছে। সোমবার দুপুর দেড়টা। চারুচন্দ্র কলেজের ইউনিয়ন রুমে পড়ুয়াদের সঙ্গে উপস্থিত কিছু বহিরাগত। হঠাৎ শুরু মারামারি।

গোলমাল: চলছে সংঘর্ষ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

গোলমাল: চলছে সংঘর্ষ। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ মার্চ ২০১৭ ০৩:০৭
Share: Save:

তখন কলেজে স্নাতক পার্ট টু-র টেস্ট চলছে। সোমবার দুপুর দেড়টা। চারুচন্দ্র কলেজের ইউনিয়ন রুমে পড়ুয়াদের সঙ্গে উপস্থিত কিছু বহিরাগত। হঠাৎ শুরু মারামারি। রেহাই পাননি ছাত্রীরাও। ইউনিয়ন রুমে ভাঙচুরের পাশাপাশি বাইরে ফুলের টবগুলিও আছাড় মেরে ভাঙে হামলাকারীরা।

লেক মার্কেটের ওই কলেজে হামলার ঘটনায় জড়িয়েছে তৃণমূল যুবনেতা সায়নদেব চট্টোপাধ্যায়ের নাম। তাঁর বাবা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা, রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী। কলেজের বাইরে দাঁড়িয়ে সায়নদেব বহিরাগতদের এনে হামলায় মদত দেন বলে নির্দিষ্ট ভাবে টালিগঞ্জ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন আহত একাধিক ছাত্রী।

তাঁদের এক জন, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী দিয়া রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘ইউনিয়ন রুমে ঢুকে বহিরাগতরা তখন মারমুখী। ছবি তুলতে গেলে ওরা আমার উপর চড়াও হয়। জামাও হাতের কাছে টেনে ছিঁড়ে দেয়।’’ দিয়ার অভিযোগ, ‘‘সায়নদেবই হামলার নেপথ্যে ছিলেন।’’

সায়নদেবের দাবি, ‘‘আমি অন্য একটা কাজে কলেজের কাছে এক জায়গায় গিয়েছিলাম। আমি যুব তৃণমূল করি। ছাত্র রাজনীতি নিয়ে আমার আগ্রহ নেই। কিন্তু কলেজে গোলমাল দেখে ওখানে দাঁড়িয়ে পড়ি।’’ সায়নদেবের বাবা, মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘আমার ছেলে গোলমালে জড়িত, এটা প্রমাণিত হলে আমিই ওকে জেলে ভরে দেব।’’

প্রসঙ্গত, এক সময়ে ওই কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি ছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। কিন্তু গত বছর পরিচালন সমিতির ভোটে তিনি হেরে যান।

চারুচন্দ্র কলেজে টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক রাজদীপ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সায়নদেবের নেতৃত্বে বাইরে কিছু লোক জড়ো হয়। তারাই ইউনিয়ন রুমে ভাঙচুর ও মারধর করে।’’ ক্রীড়া বিভাগের পড়ুয়াদের পাল্টা অভিযোগ, ছাত্র সংসদের সদস্যেরা বহু পড়ুয়ার পরিচয়পত্র আটকে রেখেছিল। সেটা ফের চাইলে গোলমাল বাঁধে।

গণ্ডগোল শুরু হতে পুলিশ ডাকেন অধ্যক্ষ সত্রাজিৎ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ছাত্র সংসদ কলেজে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য সাড়ে সাত লক্ষ টাকা কর্তৃপক্ষের কাছে চেয়েছিল। সেই দাবি না মানায় ওদের অসন্তোষ ছিল।’’ তবে তার সঙ্গে এ দিনের গণ্ডগোলের সম্পর্ক নেই বলে ছাত্র সংসদের দাবি।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ বলেন, ‘‘কলেজে প্রশাসক নিযুক্ত আছেন। বহিরাগতরা যাতে কলেজে ঢুকতে না পারে, সেটা ওঁকে নিশ্চিত করতে বলেছি।’’ টিএমসিপি-র রাজ্য সভানেত্রী জয়া দত্ত বলেন, ‘‘মঙ্গলবার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দলের মহাসচিবকে দেওয়া হবে।’’ তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ দিন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় ও জয়া দত্ত দু’জনের কাছ থেকে ঘটনার কথা জেনেছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE