Advertisement
১১ মে ২০২৪

আইন ভেঙেছে আইন কলেজ! অবাক উপাচার্য

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী আইনের পড়ুয়াদের প্রয়োজনীয় হাজিরা না থাকলে জরিমানা নেওয়ার কোনও সংস্থানই নেই। কিন্তু সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে এই খাতে ধার্য করা হয়েছিল চার হাজার টাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৭
Share: Save:

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী আইনের পড়ুয়াদের প্রয়োজনীয় হাজিরা না থাকলে জরিমানা নেওয়ার কোনও সংস্থানই নেই। কিন্তু সাউথ ক্যালকাটা ল কলেজে এই খাতে ধার্য করা হয়েছিল চার হাজার টাকা। পড়ুয়াদের আপত্তিতে তা কমিয়ে করা হয় ২১০০ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের বাইরে গিয়ে এই কাজে বিস্মিত উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ।

কিন্তু কেন এমনটা হল? অধ্যক্ষ দেবাশিস চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, অনেক পড়ুয়ার হাজিরা একেবারে শূন্য। তাই অভিভাবকদের বার্তা দিতে তিনি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রসঙ্গত, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী পড়ুয়াকে পরীক্ষায় বসতে হলে ন্যূনতম ৭০ শতাংশ হাজিরা থাকতে হয়। অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘ক্লাস না করে অনেকে টিউটরের কাছে যান। কলেজের মুখই দেখেন না। নভেম্বর থেকে এঁদের সতর্ক করছিলাম।’’

কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মের বাইরে গিয়ে এত বেশি জরিমানা নিয়ে কী ক্লাস না করা পড়ুয়াদের ক্লাসে ফেরানো সম্ভব?

বাস্তব কিন্তু অন্য কথা বলছে। ওই পড়ুয়ারা চলে গিয়েছেন আন্দোলনের পথে। শনিবার কলেজে অধ্যক্ষের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অবস্থা এমন হয় যে ডেকে আনা হয় কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি তৃণমূল বিধায়ক অশোক দেবকে। তিনি জানান, এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে আগামী সোমবার। হাজিরা না থাকা পড়ুয়াদের বক্তব্য, আগামী সোমবারই ফর্ম ফিল আপের শেষ দিন। ওই দিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে ফর্ম ফিল আপ পর্ব আদৌ শেষ হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে পড়ুয়ারা।

এই ল কলেজ কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ডিন যতীন্দ্রকুমার দাস শনিবার জানান, আইনের পড়ুয়াদের প্রয়োজনীয় হাজিরা না থাকলে জরিমানা করার কোনও নিয়ম বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই। তিনি বলেন, ‘‘নিয়মানুযায়ী ৭০ শতাংশ হাজিরা থাকলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়। সংশ্লিষ্ট কলেজের অধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বা আইনের ডিন মাত্র ৫ শতাংশ হাজিরা মকুব করতে পারেন। এর বাইরে জরিমানা দিয়ে কোনও পরিস্থিতিতেই কেউ পরীক্ষায় বসতে পারে না।’’

গোটা বিষয়টি শুনে অবশ্য বিস্মিত উপাচার্য আশুতোষ ঘোষ। প্রথমে চার হাজার টাকা এবং পরে তা কমিয়ে ২১০০ টাকা করা কী করে সম্ভব, তা বুঝতে পারছেন না তিনি। বললেন, ‘‘এত টাকা কী করে ওই কলেজ চাইছে, তা নিয়ে খোঁজ নেব।’’

সাধারণ পড়ুয়াদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি) নিয়ন্ত্রিত ছাত্র সংসদ প্রয়োজনীয় তৎপরতা দেখাচ্ছে না। অবশ্য টিএমসিপি-র দক্ষিণ কলকাতার কার্যকরী সভাপতি সঞ্জয় দে এই অভিযোগ মানতে চাননি। তাঁর বক্তব্য, কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করেছে ছাত্র সংসদই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Law College VC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE