Advertisement
E-Paper

সরকারি হাসপাতালে ছুটি, হল না দেহদান

২০১০ সালে দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন জ্যাংড়ার রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা কৃষ্ণদাসবাবু। বুধবার ভোরে তিনি মারা যান।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৮ ০০:৩০
কৃষ্ণদাস পাল।

কৃষ্ণদাস পাল।

সরকারি হাসপাতালে ছুটির ফাঁদে ফের দেহদান! যার জেরে মৃত্যুর পরে শেষ ইচ্ছে পূরণ হল না বাগুইআটির জ্যাংড়ার বাসিন্দা কৃষ্ণদাস পালের (৮৩)।

২০১০ সালে দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন জ্যাংড়ার রবীন্দ্রপল্লির বাসিন্দা কৃষ্ণদাসবাবু। বুধবার ভোরে তিনি মারা যান। যে সংস্থার মাধ্যমে কৃষ্ণদাসবাবু দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন পরিবারের সদস্যেরা। বৃদ্ধের নাতি সুদীপ দেব বৃহস্পতিবার জানান, সংস্থার তরফে তাঁদের দেহ নিয়ে এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগে যাওয়ার কথাবলা হয়। সেই মতো ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ সুদীপ, তাঁর মা মিতা দেব এবং আর এক নাতি অরিন্দম পাল এন আর এস হাসপাতালে পৌঁছন। কিন্তু দেখা যায়, ছুটির দিন হওয়ায় অ্যানাটমি বিভাগ বন্ধ। সুদীপ বলেন, ‘‘বিভাগ বন্ধ দেখে সংস্থার প্রতিনিধির সঙ্গে ফের ফোনে কথা বলি। তখন আমাদের বলা হয় জরুরি বিভাগের ওয়ার্ড মাস্টারের সঙ্গে দেখা করতে। সংস্থার তরফে এক মহিলা ফোন ধরে বলেন, ওয়ার্ড মাস্টারকে বললে দেহ মর্গে রাখার ব্যবস্থা হয়ে যাবে।’’

সুদীপের দাবি, জরুরি বিভাগে বেশ কিছু ক্ষণ দাঁড়িয়েও তাঁরা ওয়ার্ড মাস্টারের দেখা পাননি। তিনি কোথায়, সেই তথ্যও কেউ দিতে পারেননি। ততক্ষণে বৃদ্ধের দেহ ফুলতে শুরু করেছে। মৃত্যুর পরে আপনজনের দেহ নিয়ে এই টানাপড়েন পরিবারের সদস্যদের ভাল লাগেনি। বাধ্য হয়ে বেলা ১২টা নাগাদ নিমতলা শ্মশানের উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা।

এ দিন সুদীপ বলেন, ‘‘মানুষের মৃত্যু তো দিন-ক্ষণ দেখে হয় না। তা হলে কি ছুটির দিনে কারও মৃত্যু হলে দেহদান হবে না? দাদুর শেষ ইচ্ছে অপূর্ণ থাকার আক্ষেপ সারা জীবন বইতে হবে।’’স্থানীয় বাসিন্দা সোমেশ্বর বাগুই বলেন, ‘‘কৃষ্ণদাসবাবুকে দেখে পাড়ার আরও অনেকে যাতে দেহদানে এগিয়ে আসেন, তা নিয়ে কিছু করার কথা ভাবছিলাম। এর পরে কি আর কেউ উৎসাহিত হবেন?’’

যে সংস্থার মাধ্যমে দেহদানের অঙ্গীকার করেছিলেন কৃষ্ণদাসবাবু, তার কর্ণধার ব্রজ রায় বলেন, ‘‘ছুটির দিনে দেহদান করতে না পারার সমস্যা আগেও হয়েছে। প্রশাসন বিষয়টি কী ভাবে দেখছে, সেটাই আসল। স্বাস্থ্য ভবনের তরফে একাধিক নির্দেশ জারির পরেও তো অবস্থার বদল হচ্ছে না।’’

এন আর এস মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপার সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অ্যানাটমি বিভাগ কলেজের অধীনে। ফলে নিয়মমাফিক সেটি ছুটি থাকার কথা। তবে এমন ক্ষেত্রে পরিবারের তরফে আগে থেকে জানালে আমরা বিশেষ ব্যবস্থা করে থাকি। এ ক্ষেত্রে তেমন কিছু আমার জানা ছিল না।’’ ওয়ার্ড মাস্টারকে না পাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে সৌরভবাবু বলেন, ‘‘এমন কোনও অভিযোগ আমার
কাছে আসেনি।’’

Donate Body NRS Nil Ratan Sarkar Hospital Anatomy
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy