রোদে-ঘামে নাজেহাল। তবু তো পয়লা বৈশাখ-ই। এবং ভরপুর বাঙালিয়ানা।
বছরভর যতই জিন্স-কুর্তা-স্কার্টে দৌড়ে বেড়ান, এই দিনটায় সকাল-সন্ধে একটু বাঙালি হয়ে ওঠার সাধ জাগেই। আর সাজতে বসে? আলমারি ঠাসা জামাকাপড়ের ভিড়েও চোখে পড়ে যায় প্রিয় শাড়িটাই।
গ্রীষ্মের ঢের আগে থেকেই এ বছর গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। তাই সুতির শাড়িতেই বছর শুরু করার পরামর্শ দিচ্ছেন ডিজাইনারেরা। নানা রঙের প্যাস্টেল শেডে হাল্কা সুতি কিংবা বড়জোর জর্জেট, শিফন বা নেটের শাড়ি আরামদায়কও হবে, সাজেও আনবে স্নিগ্ধতা বলছেন তাঁরা।
ডিজাইনার অভিষেক দত্তের মতে, কাঠফাটা গরমেও নতুন বছরের শুরুটাকে রঙিন করে তুলতে কমবয়সীরা বেছে নিতে পারেন ফুশিয়া, রাস্পবেরি, মভ, হলুদ বা কমলার মতো উজ্জ্বল রঙের প্যাস্টেল শেডে হাল্কা কাজের জর্জেট বা নেটের শাড়ি। সঙ্গে একটা কনট্রাস্ট রঙের ব্লাউজ। “শাড়ির পাড়টা একটু ইন্টারেস্টিং হতে পারে। কিংবা এখন বেশ চলছে কম্বিনেশন শাড়ি। মানে, জর্জেটের শাড়িতে আঁচলটা নেটের। সঙ্গে একটা ব্যাকলেস, ফিতে বাঁধা কিংবা লটকন ঝোলানো সাহসী ব্লাউজে জমে যাবে সাজ। তবে হ্যাঁ, সে ক্ষেত্রে আপনার কিন্তু চাই ঠিকঠাক ফিগার এবং ঝকঝকে ত্বক,” বলছেন তিনি। সেই সঙ্গেই বয়স্কদের জন্য অভিষেকের টিপ্স: “একেবারে সাদা শাড়ি না পরে বেছে নিন হাল্কা গোলাপি, ম্যাজেন্টা, ফিরোজার মতো শেডের তাঁত। সঙ্গে কনট্রাস্ট রঙের ব্লাউজ।”
আর এক ডিজাইনার চন্দ্রাণী সিংহ ফ্লোরা বলছেন, “এ বারে গরমটা অনেক বেশি। ফুলিয়ার তাঁত, একেবারে হাল্কা এমব্রয়ডারি বা অ্যাপ্লিকের সুতি, ব্লক প্রিন্ট কিংবা হাতে বোনা শাড়ি পরুন। নতুন শাড়িতে এক বার ইস্ত্রি চালিয়ে নিয়ে মাড়ের খরখরে ভাবটা চলে যায়। যা পরেও আরাম, আবার নরম শাড়িতে ফিগারটাও ভাল দেখায়। সকালের দিকে বেছে নিন হাল্কা হলুদ, কমলার মতো হ্যাপি কালার্স। সাদার সঙ্গে কম্বিনেশন করে অন্য রঙের কাজ করা বা প্রিন্টেড ব্লাউজও পরা যায়। রাতের দিকের বাছাইয়ে থাক লাল বা অন্য উজ্জ্বল রং। শাড়িটা যেহেতু এথনিক এবং হাল্কা কাজের, তাই নিজের স্বাচ্ছন্দ্য অনুযায়ী ডিপ নেক কিংবা পিঠখোলা ব্লাউজ পরার সাহসও দেখাতেই পারেন।”
শহরের এখানে-ওখানে পোশাক বিপণি থেকে বুটিক সর্বত্র বৈশাখী সম্ভারেও তাই পাল্লা ভারী হাল্কা শাড়িরই। আইসিসিআরে ক্রাফ্টস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া-র বিপণি ‘কমলা’য় রয়েছে হাল্কা রঙের শান্তিপুরী, বেগমপুরী এবং ফুলিয়ার তাঁত, হাল্কা প্যাস্টেল শেডের চান্দেরি, মাহেশ্বরী। রয়েছে নানা রঙের তেলিয়া, লাল-হলুদের মতো উজ্জ্বল রঙের হাল্কা কাজের শিবোরি, গাদোয়াল, অন্ধ্র্রের ব্লক প্রিন্ট, চেন্নাইয়ের চেট্টিনাড, মঙ্গলগিরি, কলমকারি শাড়ি, গরমের উপযোগী হাল্কা সিল্কের শাড়িও।
সুইনহো স্ট্রিটের একটি বুটিকে মিলছে নানা ধরনের হাতে বোনা, চান্দেরি, মাহেশ্বরী এবং কোটা শাড়ি। সঙ্গে রয়েছে কাঁথাস্টিচ, হাতে ডাই করা এবং ব্লক প্রিন্টের শাড়িও। নানা রঙের প্যাস্টেল শেডে সমস্ত শাড়িগুলোর বেশির ভাগেই আরামদায়ক হাল্কা কাজ।
লেক রোডের আর একটি শাড়ি বিপণির সংগ্রহেও এখন হাল্কা শাড়িই বেশি। সামার কালার্সে শিফন প্রিন্ট এবং বোনা জর্জেটের শাড়ি, ভেজিটেবল কালারে ছাপা সুতির শাড়ির পাশাপাশি পয়লা বৈশাখ কিংবা গ্রীষ্ম সন্ধ্যার নানা উপলক্ষের কথা মাথায় রেখে এ দোকানের সম্ভারে রয়েছে নানা ধরনের প্যাস্টেল শেডে চান্দেরি, প্লেন এবং ব্লক প্রিন্টের মাহেশ্বরী, গাদোয়াল এবং সাউথ কটনের শাড়ি। রয়েছে কাঞ্চিপুরমের হাল্কা সুতির শাড়ি, সুতির বেনারসী, কোরা এবং সুপারনেটও।
তা হলে?
তুমুল গরমে হাল্কা শাড়িতেই স্বাগত নতুন বছর?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy