ডায়মণ্ড হারবার রোডে মেট্রোর কাজ চলছে। ফলে অনেক গাড়ির ভরসা জেমস লঙ সরণি। এমনিতেই এই রাস্তায় ফুটপাথ সঙ্কীর্ণ। এই পথে নেই স্পিড ব্রেকারও। তার উপরে অনেক জায়গায় ফুটপাথ দখল হয়ে গিয়েছে। তাই পথচারীদের রাস্তায় নামতে হচ্ছে। ফলে ঘটছে বেশ কিছু দুর্ঘটনা। এমনটাই অভিযোগ বাসিন্দাদের।
ডায়মন্ড হারবার রোডের তারাতলা মোড় থেকে শুরু হয়েছে জেমস লঙ সরণি। প্রায় সাড়ে সাত কিলোমিটার দীর্ঘ এই রাস্তা জোকার কাছে আবার ডায়মণ্ড হারবার রোডেই মিশেছে। পূর্ত দফতরের আলিপুর ডিভিশন-২ এর অধীন এটি। তৈরির মাস কয়েকের মধ্যেই বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তাতে মারাও গিয়েছেন কয়েক জন। বাসিন্দাদের একাংশ জানাচ্ছেন, এর মধ্যেই কোথাও ফুটপাথ বেদখল হয়ে গিয়েছে। কোথাও ফুটপাথ খুবই সরু। ফলে ফুটপাথ ছেড়ে রাস্তা দিয়ে হাঁটেন বাসিন্দারা। এলাকায় কয়েকটি স্কুল রয়েছে। আছে বেশ কয়েকটি বাই লেনও। ডায়মন্ড হারবার রোড এবং জেমস লঙ সরণির মধ্যে চার-পাঁচটি বড় সংযোগকারী রাস্তাও রয়েছে। এই রাস্তায় স্পিড ব্রেকার নেই। বাসিন্দাদের দাবি এর জন্যই ঘটছে অঘটন।
যদিও নিত্যযাত্রীদের অভিযোগ, অঘটনের জন্য অনেকাংশে দায়ী সাইকেল, মোটরসাইকেল। আমতলা থেকে বেহালা ও তারাতলার শিল্পাঞ্চলের এলাকার অসংখ্য মানুষ প্রতি দিন সাইকেলে যাতায়াত করেন এই রাস্তা দিয়ে। এই সব যানের চালক অনেক সময়ে ট্রাফিক নিয়ম মানে না। পূর্ত দফতরের আলিপুর ডিভিশন-২ সূত্রের খবর, ওই রাস্তায় স্পিড ব্রেকার লাগানো যাবে না। আইআইএম জোকায় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির মতো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা আসেন। সে ক্ষেত্রে এই রাস্তা দিয়েই যায় তাঁদের কনভয়। স্পিড ব্রেকার থাকলে তখন তা এমনিতেই কেটে দিতে হয়। কলকাতার বহু রাস্তাতেই চওড়া ফুটপাথ দখল হওয়ায় পথচারীকে রাস্তা দিয়েই হাঁটতে হয়। তাই পরিকল্পিত ভাবেই এখানে ফুটপাথ চওড়া করা হয়নি। স্কুলগুলির সামনে রেলিং বসানোর কাজ বাকি আছে। সচেতনতা বাড়াতে নির্দেশিকা-সহ কিছু বোর্ড লাগানো হয়েছে। আরও কিছু লাগানো হবে।
তবে জেমস লঙ সরণি দিয়ে হাঁটলে নজরে পড়বে রাস্তার অনেক জায়গার ফুটপাথে স্তূপ হয়ে পড়ে আছে ইমারতি দ্রব্য। কোথাও সরু ফুটপাথ বোঝাই করে গাড়ির টায়ার রাখা আছে। কোনও ফুটপাথ চলে গিয়েছে সংলগ্ন বাড়ির দখলে। কলকাতা পুরসভার ১৪ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান মানিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে অবহেলিত ছিল রাস্তাটি। রাস্তার অনেকটাই বেদখল হয়ে গিয়েছিল। দখলদারি সরিয়ে রাস্তা হয়েছে। সমস্যা তাই আছে। তবে কোথায় কোথায় জবরদখল হয়েছে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে খবর, রাস্তার মাঝখান-সহ তিন দিকে রিফ্লেক্টিভ স্টার্স লাগানো হবে। তারাতলা থেকে চৌরাস্তা পর্যন্ত কোনও ডিভাইডার নেই। তাই চৌরাস্তা, বনমালী ঘোষাল লেন, সত্যেন রায় রোড, ভূপেন রায় রোড, রায়বাহাদুর রোড-এর মতো মোড়গুলিতে বসানো হচ্ছে সিগন্যাল। মানুষকে সতর্ক করে দিতে বোর্ডও লাগানো হচ্ছে। এই রাস্তায় গাড়ির বেগ একটু দ্রুত সেই কারণে দুর্ঘটনা এড়াতে পথচারী আর বাসিন্দাদেরও সাবধান হতে হবে।