পানীয় জল নিতে এ ভাবেই অপেক্ষা। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।
তাপমাত্রার পারদ চড়তে না চড়তেই বাঁশদ্রোণীর বিভিন্ন এলাকায় পানীয় জলের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, সারা বছরই কমবেশি এই সমস্যা থাকে। তবে গরমে তা চরম আকার নেয়। বিভিন্ন মহলে বারবার জানিয়ে কোনও সুরাহা হয়নি। শুধু প্রতিশ্রুতিই মিলেছে। বাসিন্দারা জানান, গরম এলেই বেশি পয়সা দিয়ে জল কিনে পরিস্থিতির সামাল দিতে হয়।
আতাবাগানের বি ডি ব্লক, বিবেকানন্দ পার্ক সংলগ্ন এলাকা, ঘোষপাড়া, কামডহরি বোসপাড়া, বিধানপল্লি, রামকৃষ্ণনগর, লস্করপুর, এইচ এল সরকার রোড, ব্রহ্মপুর, রায়নগর, নস্করপাড়া, সুভাষ পার্ক, আদিগঙ্গা কোঅপারেটিভ রোড সংলগ্ন এলাকা সহ বিস্তীর্ণ এই এলাকার কোথাও কলে টিপটিপ করে জল পড়ে, কোথাও আবার জলের কলের সামনে বাসিন্দাদের লম্বা লাইন। এই সব এলাকার বসিন্দাদের অভিযোগ পানীয় জল হিসেবে যতটুকু জল পুরসভার কলে আসে তার পরিমাণ নেতাতই খুব কম। তাঁরা জানান, পুরসভার কলে দিনে তিন বার জল আসার কথা থাকলেও গরমে তা কখনও এক বার, কখনওবা দু’বার আসে। বাসিন্দা সোমনাথ কর বলেন, “কল থেকে জল এত সরু হয়ে পড়ে যে যাঁরা লাইনের প্রথম দিকে থাকেন তাঁরাই জাল পান। আর চার-পাঁচ জন জল নিতে নিতেই, জল চলে যায়।”
বাঁশদ্রোণীর বিস্তীর্ণ এই এলাকা কলকাতা পুরসভার ১১১ এবং ১১২ নম্বর ওয়ার্ডের অর্ন্তগত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজনৈতিক বিরোধ দূরে সরিয়ে এই দুই ওয়ার্ডের পুর প্রতিনিধিরা বাসিন্দাদের জলের সমস্যা নিয়ে একাধিক বার পুর কর্তৃপক্ষের কাছে দরবারও করেছেন। তবুও সমস্যার সুরাহার হয়নি বলে অভিযোগ।
কিন্ত কেন এই হাল? এই প্রশ্নের উত্তরে ১১১ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম কাউন্সিলর চয়ন ভট্টাচার্য বলেন, “এই সমস্ত এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জলের সঙ্কটের জন্য তিনটি কারণ দায়ী। প্রথমত, এই সব এলাকায় জনসংখ্যা আগের চেয়ে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেলেও পরিস্রুত পানীয় জল একটি জলাধারের উপরেই নির্ভরশীল। দ্বিতীয়ত, গার্ডেনরিচের জল এলাকার সর্বত্র পৌঁছয় না। তৃতীয়ত বাণিজ্যিক কারণে ভূগর্ভস্থ জল যথেচ্ছ ভাবে ব্যবহার করায় মাটির নীচের জলের স্তর দ্রুত নেমে যাচ্ছে।” ১১২ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলর গোপাল রায় এলাকায় পরিস্রুত পানীয় জল সরবরাহে যে সমস্যা রয়েছে তা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, “এই এলাকায় অনেক বহুতল হয়েছে। জনসংখ্যাও বেড়েছে। তাই জলের এত চাহিদা। এখন যে পরিমাণ গার্ডেনরিচের জল আমার পাচ্ছি তার থেকে আরও এক জল বাড়ানোর জন্য পুর কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।”
ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা জানান, প্রতি ভোটের আগেই সব রাজনৈতিক দলের তরফ থেকে জলের সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে কিছুই হয় না।
দীর্ঘ দিন ধরে এই সব এলাকার পানীয় জলের সমস্যার কেন কোনও সুরাহা হচ্ছে না? প্রশ্নের উত্তরে কলকাতা পুরসভার জল সরবরাহ বিভাগের ডিজি বিভাস মাইতি বলেন, “ওই এলাকায় জল সরবরাহের পরিমাণ বাড়েনি। গরমে জলের চাহিদা বেড়েছে। সমস্যাটি আমাদের নজরে রয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy