Advertisement
E-Paper

বুড়ো রেক নিয়েই খোঁড়াচ্ছে মেট্রো

সাধারণ ১৪টি রেকের মধ্যে সাতটিরই বয়স ২৫ বছর পেরিয়েছে। রেলের পরিভাষায় যাকে বলে ‘কোডাল লাইফ’ পেরিয়ে যাওয়া। তার পরেও মেরামত করে তাদের আরও তিন বছর ধরে চালানো হচ্ছে। অবসর না দিয়ে ওই রেকগুলিকে দিনরাত কাজ করালে যা হওয়ার সেটাই হচ্ছে। রোজই বিকল হচ্ছে তারা। নাভিশ্বাস উঠছে যাত্রীদের। মঙ্গলবারও দুপুরে যতীন দাস পার্ক স্টেশনে দমদমমুখী একটি সাধারণ রেক খারাপ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। মেরামতির আপ্রাণ চেষ্টা করেও সফল হননি কর্মীরা।

অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৮ জুন ২০১৪ ০৩:০৩

সাধারণ ১৪টি রেকের মধ্যে সাতটিরই বয়স ২৫ বছর পেরিয়েছে। রেলের পরিভাষায় যাকে বলে ‘কোডাল লাইফ’ পেরিয়ে যাওয়া। তার পরেও মেরামত করে তাদের আরও তিন বছর ধরে চালানো হচ্ছে। অবসর না দিয়ে ওই রেকগুলিকে দিনরাত কাজ করালে যা হওয়ার সেটাই হচ্ছে। রোজই বিকল হচ্ছে তারা। নাভিশ্বাস উঠছে যাত্রীদের।

মঙ্গলবারও দুপুরে যতীন দাস পার্ক স্টেশনে দমদমমুখী একটি সাধারণ রেক খারাপ হয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। মেরামতির আপ্রাণ চেষ্টা করেও সফল হননি কর্মীরা। অগত্যা সেটিকে ফেরত পাঠানো হয় নোয়াপাড়া কারশেডে। সেই কাজটি করতে নয় নয় করে ৩০ মিনিটেরও বেশি সময় লেগে যায়। আর ততক্ষণ আটকে থাকে ট্রেনটি। পিছন পিছন বিভিন্ন স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ে আরও অনেকগুলি ট্রেন। সব মিলিয়ে মেট্রো ব্যবস্থা তখনকার মতো ভেঙে পড়ে। বাতিল হয় আটটি ট্রেন।

এ দিন কী গোলমাল হয়েছিল? মেট্রো সূত্রে খবর, রেকটি ওই স্টেশনে পৌঁছনোর পরেই গোলযোগ শুরু হয়। চালকের কেবিনের নীচ থেকে আগুনের ফুলকি বেরোতে দেখা যায়। তৃতীয় লাইন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় ট্রেনটির বিদ্যুৎ সংযোগও। তার পরে ট্রেনটিকে আর ছাড়া যায়নি। এ দিন না হয় বৈদ্যুতিক গোলযোগ। কিন্তু সেই সঙ্গে নিত্যই লেগে আছে ব্রেক আটকে যাওয়া, দরজা বন্ধ না-হওয়া ইত্যাদি নানা রকমের গোলমাল। ফলে রোজই থমকে যাচ্ছে পরিষেবা। আর দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। কিন্তু কেন?

মেট্রো সূত্রে খবর, এখন মোট ২৭টি রেক চালানো হচ্ছে। এর মধ্যে ১৩টি বাতানুকূল, বাকিগুলি সাধারণ। বাতানুকূল রেকগুলির বয়স কম হলেও সাধারণ রেকগুলির বেশির ভাগই এখন বৃদ্ধ। রেলের নিয়মে তাদের গড় আয়ু পেরিয়ে গিয়েছে। তার পরেও সাতটিকে মেরামত করে অতিরিক্ত তিন বছর চালানোর অনুমতি দিয়েছিল রেল বোর্ড। সেই সময়ও শেষের মুখে। ফলে জরাজীর্ণ ওই রেকগুলি প্রায়ই মাঝপথে বিকল হয়ে আটকে পড়ছে।

কিন্তু বাতানুকূল রেকগুলির বেশির ভাগের বয়স তো মাত্র আট বছরের কাছাকাছি। তাতেও কেন গোলমাল হচ্ছে? মেট্রোকর্তারা সদুত্তর দিতে পারেননি। তবে মেট্রোর একটি সূত্রে খবর, ১৩টি বাতানুকূল রেকের প্রায় ১২টিই পরীক্ষামূলক ভাবে বানানো। রেলের পরিভাষায় ‘প্রোটোটাইপ’ রেক। এই রেকগুলি কিছুদিন চালিয়ে তার ত্রুটিবিচ্যুতি দেখে তবেই নতুন রেক তৈরি করার কথা। কিন্তু ভোটের কথা মাথায় রেখে ‘রাজনৈতিক চাপে’ এই সব পরীক্ষামূলক রেকগুলি নিয়মিত ভাবে লাইনে নামিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়াতেই এখন এই ধরনের বিপত্তি বাধছে বলে মনে করছেন মেট্রোকর্তাদেরই একাংশ।

তা হলে এখন সুষ্ঠু পরিষেবা দেওয়ার উপায় কী? মেট্রোকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে আরও দু’টি নতুন বাতানুকূল নতুন রেক আসছে। ২০১৫ সালের মাঝামাঝি আরও তিনটি। সেগুলি হাতে এসে গেলে এই অবস্থা অনেকটাই সামাল দেওয়া সম্ভব হবে বলে তাঁদের আশা।

তা হলে কী আগামী আরও এক বছর এ ভাবেই খোঁড়াতে খোঁড়াতে চলবে মেট্রো? প্রশ্ন করতে মেট্রোকর্তারা অবশ্য মুখটা ঘুরিয়ে নিয়েছেন অন্য দিকে। যেন শুনতে পাননি।

amitabha bandyopadhyay metro rail old metro reck
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy