ছয় বেহারার চরণদাঁড়ে... শহরের পথে দুলকি চালে। উপলক্ষ, কলেজ স্কোয়ার বইমেলা। সোমবার, কলেজ স্ট্রিটে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
“এত দিনে তার সঠিক ঠিকানা পেল বইমেলা”— কলেজ স্কোয়ারে নববর্ষ বই-উৎসবে এসে এ কথাই বললেন সাহিত্যিক নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তাঁর মতে, বইপাড়াই বইমেলার আসল ঠিকানা।
বই-উৎসবে হাজির সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়, নবনীতা দেবসেন, নৃসিংহপ্রসাদ ভাদুড়ী, নিমাই ভট্টাচার্য, শুভাপ্রসন্নরাও একবাক্যে স্বীকার করছেন নববর্ষে কলেজ স্কোয়ারে এই বই-উৎসব অনেক আগে শুরু হলে ভাল হত। সমরেশ মজুমদার আবার কলেজ স্কোয়ারের নতুন নামই দিয়ে ফেললেন। বললেন, “বই-উৎসব উপলক্ষে গোলদিঘির নাম হোক বইদিঘি।”
পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাঝেমধ্যেই বলতেন পার্ক স্ট্রিট যদি ইংরেজি নববর্ষ পালন করতে পারে, তা হলে কলেজ স্ট্রিট পাড়া কেন বাংলা নববর্ষ করবে না? তাঁর ভাবনা থেকেই এই উৎসবের অনুপ্রেরণা।” ফানুস উড়িয়ে সোমবার মেলার সূচনা করেন উপস্থিত সাহিত্যিকেরা। সূচনার আগেই কলেজ স্কোয়ার-সহ কলেজ স্ট্রিট শুনেছে ধামসা-মাদল ও ঢাকের আওয়াজ। দেখা গিয়েছে ট্রাম লাইনের উপর দিয়ে পুরুলিয়ার শিল্পীদের ছো নাচ। ট্রামলাইনের উপর দিয়ে কেউ হাঁটলেন রণপা পরে, কেউ দেখালেন লাঠি খেলা। প্রকাশক ও পাঠকেরা দেখলেন কলেজ স্ট্রিট, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিটে সুসজ্জিত পাল্কি। বাংলার পুরনো সংস্কৃতিকে উসকে দেওয়া এই মিছিল ঘুরল কলেজ স্কোয়ার, কলুটোলা স্ট্রিট, বিধান সরণি, বঙ্কিম চ্যাটার্জি স্ট্রিট, সূর্য সেন সরণি। ত্রিদিববাবু বলেন, “এই উৎসবে শুধু বই কেনা-বেচাই নয়, বাঙালির পুরনো সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকেও তা এক বার মনে করিয়ে দেবে। একটা সময়ে নববর্ষে কলেজ স্ট্রিটে প্রকাশক ও সাহিত্যিকদের মধ্যে যে একটা উৎসবের আমেজ আসত, তা-ই ফিরিয়ে আনবে এই বই-উৎসব।”
আগামী ২০ তারিখ পর্যন্ত চলবে মেলা। কলকাতা আন্তর্জাতিক বইমেলার মতোই এখানেও প্রথম দিনে দেখা গেল স্টল তৈরির কাজ চলার চেনা ছবিই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy