Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বছর পেরিয়েও কাজ থমকে নিউ টাউন দমকল কেন্দ্রের

শিল্যানাসের পরে কেটে গিয়েছে এক বছরেরও বেশি সময়। কিন্তু এখনও কাজ আরম্ভ হল না নিউ টাউনের দমকল কেন্দ্রের। যদিও ক্রমশই নিউ টাউনে বাড়ছে বহুতলের সংখ্যা, বেড়েছে আবাসন, তথ্যপ্রযুক্তি অফিস থেকে শুরু করে নানা ধরনের অফিস।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৪ ০১:৩৬
Share: Save:

শিল্যানাসের পরে কেটে গিয়েছে এক বছরেরও বেশি সময়। কিন্তু এখনও কাজ আরম্ভ হল না নিউ টাউনের দমকল কেন্দ্রের। যদিও ক্রমশই নিউ টাউনে বাড়ছে বহুতলের সংখ্যা, বেড়েছে আবাসন, তথ্যপ্রযুক্তি অফিস থেকে শুরু করে নানা ধরনের অফিস। ফলে বাসিন্দাদের দাবি, নিউ টাউনে দমকল কেন্দ্র তৈরি করা ক্রমশই জরুরি হয়ে উঠেছে।

নিউ টাউনে যে দমকল কেন্দ্র তৈরি করা খুবই প্রয়োজনীয়, তা স্পষ্টই বোঝা যায় সাম্প্রতিক কিছু ঘটনা থেকে। মাস খানেক আগে ওই এলাকার একটি বহুতলের পাঁচতলায় আগুন লাগে। খবর দেওয়া হয় দমকলকে। তবে দমকলের ইঞ্জিন পৌঁছনোর আগেই স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই আগুন নিভিয়ে ফেলেন। ঘটনার দিন এলাকাবাসীর একাংশ দমকলের দেরি করে আসা নিয়ে অভিযোগ করেন। তাঁদের অভিযোগ, আগুন বড় আকার ধারণ করেনি বলেই সে দিন তাঁরা বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু বড় আগুন হলে কী হত?

নিউ টাউনে আগুন লাগলে দমকল আসে সল্টলেক থেকে। কিন্তু অ্যাকশন এরিয়া ওয়ান থেকে থ্রি পর্যন্ত এলাকা এতটাই বড় যে ক্রমশই বাড়তে থাকা অলিগলিতে দ্রুত দমকলের পরিষেবা পেতে গেলে এলাকার একটি নিজস্ব দমকল কেন্দ্র থাকা জরুরি বলে মনে করেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, নিউ টাউনের বহুতলগুলিতে অগ্নিনির্বাপক ব্যবস্থা থাকলেও তা যথেষ্ট নয়। আগুন কী ভাবে নেভাতে হয়, সে প্রশিক্ষণও নেই ওই সব বহুতলের বাসিন্দাদের। অভিযোগ, বড় আগুন লাগলে পরিস্থিতি আয়ত্তের বাইরে চলে যেতে কয়েক মিনিট লাগবে।

কিন্তু বছর খানেক আগে অ্যাকশন এরিয়া ওয়ানের ওই দমকল কেন্দ্রের শিল্যানাস করতে গিয়ে নিউ টাউনের এই সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছিল রাজ্য সরকারের দমকল দফতর। নিউ টাউনের ওই শিল্যানাস অনুষ্ঠানে মন্ত্রী ও আমলারা জানিয়েছিলেন, আধুনিক ওই দমকল কেন্দ্রে থাকবে উন্নত মানের কন্ট্রোল রুম, জিপিএস (গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম) প্রযুক্তি। দমকলের গাড়িতেও থাকবে জিপিএস সিস্টেম। যার মাধ্যমে কোথাও আগুন লাগার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই জায়গাটি চিহ্নিত করা যাবে। এ ছাড়াও, কোন রাস্তা দিয়ে দ্রুত পৌঁছনো যাবে ঘটনাস্থলে, তা-ও ওই জিপিএস পরিষেবাই বলে দেবে বলে দাবি করেছিলেন দমকল মন্ত্রী জাভেদ খান। তিনি জানিয়েছিলেন, ওই আধুনিক দমকল কেন্দ্রে থাকবে উন্নত মানের ল্যাডার থেকে শুরু করে আরও নানা আধুনিক যন্ত্রপাতি। কেনা হবে বেশ কয়েকটি নতুন গাড়িও। দিন কয়েকের মধ্যেই কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে দাবি করেছিলেন মন্ত্রী।

কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে দিন কয়েক নয়, কেটে গিয়েছে এক বছর। কিন্তু দমকল কেন্দ্রের জন্য নির্ধারিত দু’ একর জায়গায় কোনও কাজই শুরু হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রশ্ন তুলেছেন, পরিকল্পিত নিউ টাউনে গত এক বছরে কিছু পরিষেবা চালু হয়েছে ঠিকই, কিন্তু এখনও কেন দমকলের মতো একটি জরুরি পরিষেবা চালু হল না? শিল্যানাসের পরে কেন থেমে গেল কাজ? হিডকোর চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন অবশ্য বলেন, “আমরা ওদের পরিকল্পনা মতোই নিউ টাউনের অ্যাকশন এরিয়ার ওয়ানে খুবই ভাল জায়গায় রাস্তার ধারে জমি দিয়েছি। হিডকোর তরফ থেকে যে যে পরিষেবা দেওয়ার কথা তা সবই দেওয়া হয়েছে। কাজ কেন এগোয়নি তা রাজ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরই বলতে পারবে।”

দমকল মন্ত্রী জাভেদ খান অবশ্য আগের মতোই একই ভাবে আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি বলেন, “লোকসভা ভোট কেটে গেলেই দ্রুত কাজ শুরু হয়ে যাবে।” কিন্তু এতদিন ধরে কাজ এগোলো না কেন? জাভেদ খান বলেন, “এক বছরে কাজ এগোয়নি বলা ভুল। ইতিমধ্যে দমকলকেন্দ্রের কোথায় কী থাকবে, তার ড্রয়িং ও চূড়ান্ত পরিকল্পনার কাজ হয়ে গিয়েছে। দমকল কেন্দ্র বানানোর জন্য যে অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে তা-ও।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE