ভেজা পথের কাব্য: মহানগরের জল-ছবি। রবিবার সন্ধ্যায়, নিউ টাউনে। ছবি: শুভাশিস ভট্টাচার্য।
সময়ের ফারাক তিন ঘণ্টার। কিন্তু এই সময়ের মধ্যেই কলকাতার তাপমাত্রার ফারাক ছুঁল প্রায় ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস! সৌজন্যে রবিবার বিকেলের জোরালো বৃষ্টি। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, এ দিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকায় প্রায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।
দিনের শুরুটা হয়েছিল ভ্যাপসা গরম দিয়ে। ছুটিবারে পথে বেরিয়ে দরদর করে ঘেমেছেন মানুষ। নিতান্ত প্রয়োজনে অফিসমুখোদেরও জামা-কাপড় ঘামে জবজবে। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, দুপুর আড়াইটে নাগাদ শহরের তাপমাত্রা ছিল ৩৭.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঘড়ির কাঁটা তিনটে পেরোতেই ছবিটা হঠাৎই বদলাতে শুরু করে। মিনিট পনেরোর মধ্যে আকাশ কালো করে আসে। বিকেল সওয়া তিনটেয় সন্ধ্যার আঁধার নেমে আসে মহানগরে। কিছুক্ষণের মধ্যেই শুরু হয় বৃষ্টি। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় তাপমাত্রা নেমে আসে ২৫.১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। “এটাই এ দিনের সর্বনিম্ন।”বলছেন এক আবহবিজ্ঞানী।
এ দিনই আবার দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা আসার সম্ভাবনা ঘোষণা করেছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। তার পর-পরেই এমন বৃষ্টি স্বস্তির বার্তা এনেছে বাসিন্দাদের মনে। কেউ কেউ বারান্দায় দাঁড়িয়ে বৃষ্টির মজা নিয়েছেন। কেউ ছাদে উঠে বৃষ্টিতে ভিজেছেনও। চোখে পড়েছে ঘনঘন বাজের ঝিলিকও। সন্ধ্যাতেও টিপটিপ করে বৃষ্টি চলেছে। তার মধ্যেই ছাতা মাথায় শহর ঘুরতে বেরিয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ সদলবলে সান্ধ্য আড্ডা জমিয়েছেন চায়ের দোকানে।
এমন মেজাজ নিখাদ বর্ষারই। তা হলে শহরে বর্ষার ইনিংস শুরু হল?
খাতায়-কলমে বর্ষা আসার আগে একটা বৃষ্টি মেলে। হাওয়া অফিসের খাতায় যার নাম ‘প্রাক-বর্ষা’। কিন্তু এই বৃষ্টি তা নয় বলেই দাবি আবহবিজ্ঞানীদের। আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলেন, “এই বৃষ্টির পিছনে রয়েছে বজ্রগর্ভ মেঘ।” গত কয়েক দিনে একই কারণে ঝড়বৃষ্টি হয়েছে। হাওয়া অফিস সূত্রের খবর, দুপুরে বীরভূম, নদিয়া জেলায় ছোট বজ্রগর্ভ মেঘ তৈরি হয়েছিল। পরে সেগুলি মিলে বড় মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়। সেটিই বয়ে এসেছে কলকাতার দিকে।
জোরালো বৃষ্টির জেরে এম জি রোড, স্ট্র্যান্ড রোড, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাস কানেক্টর, কাঁকুড়গাছি ও উল্টোডাঙা আন্ডারপাস-সহ কিছু এলাকায় অল্প-বিস্তর জল জমে। তবে যান চলাচল তেমন ব্যাহত হয়নি বলেই কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে। জল নামতেও খুব বেশি সময় নেয়নি।
তবে খারাপ আবহাওয়ায় বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ঝোড়ো হাওয়ার দাপটে ৯টি বিমান ঘণ্টাখানেক চক্কর কাটার পরে একে একে নামতে পেরেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy