Advertisement
১৬ জুন ২০২৪

সচেতনতা শিকেয়, ঝুঁকির পারাপার চলছেই বিধাননগরে

ওভারব্রিজ আছে। সাবওয়ে আছে। তবুও বিধাননগর স্টেশনে যাত্রীদের একাংশ প্রতি দিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাইন পেরিয়েই যাতায়াত করেন। তাঁদের যুক্তি, ওভারব্রিজ বা সাবওয়ে ব্যবহার করলে অনেকটা ঘুরপথে যেতে হয়, সময় নষ্ট হয়। এ ভাবে পারাপারের ফলে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তবু ছবিটি বিশেষ বদলায়নি।

এ ভাবেই যাতায়াত। ছবি: শৌভিক দে।

এ ভাবেই যাতায়াত। ছবি: শৌভিক দে।

আর্যভট্ট খান
শেষ আপডেট: ০১ মার্চ ২০১৪ ০৫:৩৮
Share: Save:

ওভারব্রিজ আছে। সাবওয়ে আছে। তবুও বিধাননগর স্টেশনে যাত্রীদের একাংশ প্রতি দিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লাইন পেরিয়েই যাতায়াত করেন। তাঁদের যুক্তি, ওভারব্রিজ বা সাবওয়ে ব্যবহার করলে অনেকটা ঘুরপথে যেতে হয়, সময় নষ্ট হয়। এ ভাবে পারাপারের ফলে মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটেছে। তবু ছবিটি বিশেষ বদলায়নি।

বিধাননগর রোড স্টেশনে রয়েছে চারটি প্ল্যাটফর্ম। এর মধ্যে এক নম্বর ও দু’ নম্বরে আসে আপ লাইন অর্থাৎ দমদমমুখী ট্রেন। অন্য দিকে, তিন নম্বর ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসে ডাউন লাইনের অর্থাৎ শিয়ালদহমুখী ট্রেন। এক ও দুই নম্বর থেকে তিন ও চার নম্বর প্ল্যাটফর্ম একটু দূরে। তিন বা চার থেকে এক বা দুইয়ে যাওয়ার জন্য রয়েছে ওভারব্রিজ। কিন্তু যাত্রীদের একাংশ ওই ওভারব্রিজ ব্যবহার না করে তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে সোজা লাইনে নেমে পড়েন। লাইন ধরে হেঁটে দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওঠেন। দু’নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে মূল রাস্তায় চলে যান। প্রতি দিনই এমন ঘটছে।

সকাল ন’টা। ডাউন রানাঘাট লোকাল ঢোকার পরেই যাত্রীরা লাইন নেমে পড়লেন। কিছুটা হেঁটে রেলিংয়ের ফাঁক গলে চলে গেলেন দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মের লাইনে। লাইন দিয়ে হেঁটে সোজা উঠে পড়লেন দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মে। যাত্রীদের মধ্যে পুরুষ, মহিলা দুই আছেন। কয়েক জন আবার মোবাইলে কথা বলতে বলতে হাঁটছিলেন। ডাউন রানাঘাট লোকাল ঢোকার কিছুক্ষণের মধ্যেই প্ল্যাটফর্মে ঢুকছিল একটি আপ ট্রেন। আপ ট্রেনটি ঠিক সময়ে থেমে যাওয়ায় সবাই নিরাপদে লাইন পেরিয়ে প্ল্যাটফর্মে উঠলেন। এক যাত্রী বললেন, “সমস্যা হয় থ্রু ট্রেন থাকলে। যাত্রীরা ভাবেন ট্রেন দাঁড়িয়ে যাবে। কিন্তু দাঁড়ায় না। এ ভাবেই কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে।”

কেন ওভারব্রিজ ব্যবহারে অনীহা? নিত্যযাত্রীরা জানাচ্ছেন, তিন নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে উল্টোডাঙা রোডের খন্নার দিকে যেতে গেলে অনেকটা ঘুরপথে যেতে হয়। এই স্টেশন দিয়ে সেক্টর ফাইভের একটি তথ্যপ্রযুক্তি অফিসে যাতায়াত করেন অনামিকা রায়। তিনি বলেন,“অফিস যাওয়ার সময় এত তাড়াহুড়ো থাকে যে লাইন দিয়ে ওটুকু পথ হাঁটলে অনেকটা সময় বেঁচে যায়।” এটা যে বিপজ্জনক তা তিনি স্বীকার করে নেন। প্রায় একই মত শ্যামবাজারের এক হকারের। তিনি বলেন, “আমার সঙ্গে অনেক মালপত্র থাকে। অত মাল নিয়ে ওভারব্রিজ ওঠা শক্ত। তাই লাইন দিয়ে হেঁটে যাই।”

কী ব্যবস্থা নিয়েছেন রেল কর্তৃপক্ষ? পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক রবি মহাপাত্র বলেন, “যাত্রীদের সচেতন করার জন্য প্রায়ই ঘোষণা করা হয়।

আধিকারিকরা বোঝানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু যাত্রীদের সচেতন হওয়ায় জরুরি।” তিন নম্বর এবং দু’নম্বর প্ল্যাটফর্মের লাইনের মাঝে রেলিংয়ের একটি ফাঁকা জায়গা আছে। অভিযোগ, ওই জায়গাটি বন্ধ করে দিলেই দুই নম্বর প্ল্যাটফর্মে যাওয়া শক্ত। কিন্তু ফাঁকা জায়গাটি বন্ধ করতে রেল কর্তৃপক্ষ উদ্যোগী নয়। এ বিষয়ে রবিবাবু বলেন, “ভাল করে খোঁজ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bidhannagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE