সৌন্দর্যায়ন হবে এই এলাকারও। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
বিবাদী বাগের পর এ বার কলেজ স্কোয়ার অঞ্চলকে হেরিটেজ সাজ দেওয়ার কাজ শুরু হচ্ছে। প্রকল্প রূপায়ণে কেন্দ্রের বরাদ্দ অর্থ কলকাতা পুরসভাকে দিয়েছে রাজ্য পর্যটন দফতর। ইউরোপের বিভিন্ন প্রাচীন শহরের কেন্দ্রস্থলে ফুটপাথে বিশেষ ধরনের টালি, বাতিস্তম্ভ, বসার চেয়ার, ডাস্টবিন বসানো আছে। সেই ধাঁচেই বিবাদী বাগ এবং সংলগ্ন এলাকাকে ঐতিহ্যবাহী অঞ্চল হিসেবে সাজাতে ২০১০-এর জুন থেকে ২০১২-র এপ্রিল পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে খরচ হয় ১৩ কোটি টাকা। এ কথা জানিয়ে পর্যটন-অধিকর্তা উমাপদ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ওই খরচের মধ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য বরাদ্দ করেছিল ৩৫ শতাংশ করে। বাকি ৩০ শতাংশ ছিল পুরসভার বরাদ্দ।” মহাকরণ, জিপিও, কারেন্সি হাউসের মতো প্রাচীন ভবনের সামনে ঐতিহ্যবাহী আদল আনার চেষ্টা হয়।
পুরসভার ডিজি (প্রোগ্রাম মনিটরিং ইউনিট) সুব্রত শীল বলেন, “বিবাদী বাগের ধাঁচেই মহাত্মা গাঁধী রোড থেকে ইডেন হসপিটাল পর্যন্ত ১৬৭৫ মিটার অংশে সাজানো হবে। বরাদ্দ হয়েছে ৫ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা।” প্রথম পর্যায়ে মহাত্মা গাঁধী রোড থেকে ১০০ মিটার অংশের কাজের জন্য ইতিমধ্যে প্রায় ১৭ লক্ষ টাকার বরাত দেওয়া হয়েছে। বিবাদী বাগ প্রকল্পে গ্রিলের কাজ যিনি করেছিলেন, সেই শশীকান্ত কাসাট কলেজ স্কোয়ার চত্বরে ঐতিহ্যবাহী আদলের লোহার রেলিং তৈরির দায়িত্ব পেয়েছেন। হাওড়ার বেনারস রোডের কারখানায় সেই রেলিং তৈরি হচ্ছে।
সৌন্দর্যায়নে ফুটপাথের দখল সরানোর কথা কি বিবেচনা করছে পুরসভা? ডিজি বলেন, “পার্ক ঘিরে থাকা বইয়ের দোকানগুলিকে ভিতরে ঢুকিয়ে ফুটপাথ সাজাতে ৮ কোটি টাকার একটি প্রকল্প আমরা পর্যটন দফতরকে পাঠিয়েছিলাম। কিন্তু ওদের পক্ষে সেটা বরাদ্দ করা সম্ভব হয়নি।” প্রায় এক যুগ আগে হেরিটেজ কমিশনের চেয়ারম্যান থাকাকালীন প্রতাপচন্দ্র চন্দ্র কলেজ স্কোয়ার সৌন্দর্যায়নের কিছু পরিকল্পনা নেন। স্থানীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি হয় ‘বিদ্যাসাগর উদ্যান সৌন্দর্যায়ন কমিটি’। পুর-সহযোগিতায় এই কমিটি কাজ করছে। সম্পাদক ভাস্কর সিংহ বলেন, “পরিস্থিতি, সাধ্য ও সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ চলছে। উল্লেখযোগ্য কিছু কাজের মধ্যে আছে পার্কে ডেভিড হেয়ারের সমাধি সংরক্ষণ। শহরবাসীর একটি বড় অংশ হেয়ারের এই সমাধির কথা জানেন না।” ভাস্করবাবু বলেন, “এই সমাধি সংস্কারে প্রশান্ত চট্টোপাধ্যায় ও অনাদি সাহু যথাক্রমে সাংসদ ও বিধায়ক তহবিল থেকে ৪ ও ৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন।”
ওই এলাকায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রেসিডেন্সি কলেজ, হিন্দু-হেয়ার-সংস্কৃত কলেজিয়েট স্কুলের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকায় কলেজ স্ট্রিট অঞ্চলকে সাজাতে কেন্দ্রের কাছে আর একটি প্রকল্প পাঠিয়েছেন পুর-কর্তৃপক্ষ। জেএনএনইউআরএম প্রকল্পে এ জন্য ৩৮.৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy