যে জমিতে আইটিআই গড়ে ওঠার কথা, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষিত সেই প্রকল্প এখন বিশ বাঁও জলে। ইতিমধ্যেই ওই জমি মালিকদের হস্তান্তর করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট। কিন্তু আদালতের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা পেরিয়ে গেলেও জমি তাঁদের হাতে ফেরত আসেনি বলে অভিযোগ মালিকদের।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের সাউথখালিতে জানা পাড়ার একটি জমিতে আইটিআই গড়তে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। ২০১৩ সালে আইটিআই-এর শিলান্যাস করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরই বেঁকে বসেন জমিদাতারা। জোর করে জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে বলে হাইকোর্টে অভিযোগ জানান জমিদাতারা। হাইকোর্ট আইটিআই তৈরিতে স্থগিতাদেশ জারি করে। সেইমত তৎকালীন জেলাশাসক অন্তরা আচার্য নন্দীগ্রামে গিয়ে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের তরফে হাইকোর্টের রায়ের প্রেক্ষিতে একটি মামলা করা হয় তমলুক জেলা আদালতে। সেই মামলাকে চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে ফের ‘কোয়ান্টেম’ মামলা দায়ের করেছিলেন জমিদাতারা। গত ২ জানুয়ারি হাইকোর্ট জানিয়ে দেয় ওই জমি মালিকপক্ষকে হস্তান্তর করে দিতে হবে।
কিন্তু হাইকোর্টের ওই নির্দেশের পর ৬ মাস কেটে গেলেও ওই জমি মালিকপক্ষকে হস্তান্তর করা হয়নি বলে অভিযোগ। এর মধ্যে জমিদাতাদের তরফে আইনজীবী সঞ্জীব বন্দোপাধ্যায় জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার-সহ স্থানীয় থানার ওসিকে আইনি নোটিস পাঠিয়েছিলেন। তাতে গত ২৪ অগস্ট চূড়ান্ত সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই সময়ও পেরিয়ে গিয়েছে। অথচ জমি ফেরত নিয়ে প্রশাসন কিংবা পুলিশ এখনও কোনও সাড়া দেয়নি বলে অভিযোগ।
প্রশাসন ও স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে, সাউথখালিতে তিন একর জমিতে আইটিআই তৈরি করতে চেয়েছিল রাজ্য সরকার। সেখানে কলেজের পরিকাঠামো গড়ে তোলার পাশাপাশি ইমারতি দ্রব্যও মজুত রয়েছে। জমি মালিকদের তরফে গোবিন্দ পাত্র বলেন, ‘‘দীর্ঘদিন আগে জমি ফেরতের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু সেই নির্দেশ মানা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে নন্দীগ্রাম-১ এর বিডিও সুব্রত মল্লিক জানিয়েছেন, বিষয়টি জেলাশাসকের এক্তিয়ারভুক্ত। তাই তিনি কোনও মন্তব্য করবেন না।
জেলাশাসক রশ্মি কমলের প্রতিক্রিয়া জানার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি। জেলার পুলিস সুপার ভি সলোমন নেসাকুমার জানিয়েছেন, কবে চিঠি এসেছে, জানি না । চিঠি দেখে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।