Advertisement
০৯ মে ২০২৪

চিঠি মুখ্যসচিবকে, লরি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে সন্ধির রাস্তায় বন্দর

কলকাতা পুলিশের নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আজ, শনিবার থেকেই বন্দরে দিনের বেলায় ট্রেলার-লরি ঢোকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। ঠিক তার আগে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানালেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:৫৩
Share: Save:

কলকাতা পুলিশের নতুন বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আজ, শনিবার থেকেই বন্দরে দিনের বেলায় ট্রেলার-লরি ঢোকা বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। ঠিক তার আগে এই সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য অনুরোধ জানালেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ। বন্দরের আর্থিক ক্ষতির দিকটি বিচার করে রাজ্যের মুখ্যসচিব বাসুদেব বন্দ্যোপাধ্যায়কে এই সিদ্ধান্ত ফের বিবেচনার আর্জি জানান বন্দরের চেয়ারম্যান টি কৃষ্ণবাবু। নতুন করে কিছু ভাবনাচিন্তা চলছে কি না, শুক্রবার রাত পর্যন্ত সেই ব্যাপারে সরকারের বক্তব্য জানা যায়নি।

অনুরোধ-উপরোধের রাস্তা ছাড়াও অন্য একটি পথে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা চালাচ্ছেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ। দিনের বেলায় বন্দর এলাকায় লরি নিয়ন্ত্রণের কারণ হিসেবে যানজটের কথা বলেছে লালবাজার। এই অবস্থায় ডক এলাকায় যানজট কমাতে তৎপর হয়েছেন বন্দর-কর্তৃপক্ষ। ট্রেলার, লরি রাখার ‘পার্কিং লট’ তো তৈরি হচ্ছেই। সেই সঙ্গে বন্দর এলাকার রাস্তাঘাট সারাতে রাজ্য সরকার যে-প্রস্তাব দিয়েছিল তা কার্যত মেনে নিয়েছেন বন্দরকর্তারা। পুলিশ দিনের বেলায় বন্দরে ট্রেলার-লরি ঢুকতে না-দিলে রোজ বন্দরের দু’‌কোটি টাকা ক্ষতি হতে পারে বলে প্রাথমিক হিসেব। সেই জন্যই রাজ্যের দাবি মেনে বন্দর-কর্তৃপক্ষ আপাতত সন্ধির রাস্তায়।

বন্দর এলাকায় যানজট ঠেকাতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, কর্তৃপক্ষের তরফে এক প্রেস-বিবৃতিতে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই বিজ্ঞপ্তি জানাচ্ছে, ভূতঘাট ও সোনাই এলাকায় পার্কিং লটের জন্য আরও ২১ হাজার বর্গমিটার জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানে ২৪০টি ট্রেলার দাঁড়াতে পারবে। চার মাসের মধ্যেই কলকাতা বন্দরের হাতে পার্কিংয়ের জন্য

৫৮ হাজার বর্গমিটার জায়গা চলে আসবে। সেখানে অন্তত ৬০০

লরি-ট্রেলার দাঁড়াতে পারবে। এ ছাড়া হাইড রোডে পরিবহণ দফতরকে এক সময় ওয়েব্রিজ তৈরির জন্য যে-জমি দেওয়া হয়েছিল, তা ফিরিয়ে নিয়ে পার্কিং লট হিসেবে ব্যবহার করতে চান বন্দর-কর্তৃপক্ষ।

সোনাই রোড, সোনারপুর রোড এবং কোল ডক রোডের সংস্কারের জন্য ইতিমধ্যেই ১৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে বন্দরের বিবৃতিতে। অন্যান্য রাস্তা সারাতে খরচ করা হবে ৮৮ লক্ষ টাকা। বন্দর-কর্তৃপক্ষের আশা, পার্কিং লটে বাড়তি জায়গার সংস্থান হয়ে গেলে ডক এলাকায় যানজট অনেকটাই কমবে।

দিনের বেলায় বন্দরে লরি নিয়ন্ত্রণের কারণ হিসেবে পুলিশ-প্রশাসন প্রকাশ্যে যানজট কমিয়ে আমজনতার সুরাহা করার কথা বললেও এই সিদ্ধান্তের পিছনে রাজনীতির খেল্‌ আছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ। তাদের বক্তব্য, বিভিন্ন বিষয়ে বন্দরের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সংঘাত চলছে নবান্নের। লরি নিয়ন্ত্রণের পুলিশি বিজ্ঞপ্তি তারই অঙ্গ। তার মধ্যেই বন্দর-কর্তৃপক্ষ যে সন্ধির রাস্তায় হাঁটতে চাইছেন, মুখ্যসচিবকে লেখা চিঠি এবং লরি-ট্রেলার রাখার বিস্তৃত বন্দোবস্ত তারই প্রমাণ। তবে পুলিশ-প্রশাসন এই সন্ধির উদ্যোগে সাড়া দেবে কি না, দিলে কী ভাবে কতটা দেবে, এখন সেটাই দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chief secretary port
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE