Advertisement
E-Paper

সিঁদুরখেলা-ফেসবুক লাইভে বিসর্জন

সকালে সিঁদুরের রঙে রাঙা মায়ের মুখ। বেলা বাড়তেই বিসর্জনের মিছিলের গোলাপি আবিরে ঢেকে গেল উত্তরের রাস্তাঘাট। শিলিগুড়ির মহানন্দার বিসর্জনঘাট থেকে জলপাইগুড়ির করলা কিংবা আত্রেয়ী পাড়ের বালুরঘাট— একই দৃশ্য।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৬ ০১:৩০
ফ্রেমবন্দি সিঁদুরখেলা। শিলিগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

ফ্রেমবন্দি সিঁদুরখেলা। শিলিগুড়িতে বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।

সকালে সিঁদুরের রঙে রাঙা মায়ের মুখ। বেলা বাড়তেই বিসর্জনের মিছিলের গোলাপি আবিরে ঢেকে গেল উত্তরের রাস্তাঘাট। শিলিগুড়ির মহানন্দার বিসর্জনঘাট থেকে জলপাইগুড়ির করলা কিংবা আত্রেয়ী পাড়ের বালুরঘাট— একই দৃশ্য।

সাবেক রীতি মেনে তিন বার রাইফেল গর্জে ওঠার পরে নীলকণ্ঠ পাখি উড়িয়ে বিসর্জন হল জলপাইগুড়ির রাজবাড়ির পুজোয়। দিঘির দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হল দেবী প্রতিমাকে। নীলকণ্ঠ পাখি দুটি ধীরে ধীরে ছোট হওয়ার পরে বিন্দুর মতো মিলিয়ে গেল আকাশে। মহরমের প্রস্তুতি সেরে বিসর্জনের দৃশ্য দেখার পরে মোস্তাক আলির মতো অনেকেই বললেন, ‘‘বিসর্জনের শোভাযাত্রা, জাঁকজমকও দেখার মতো হয়। আমাদের মহরমের তাজিয়াও এলাকার সকলের কাছে প্রশংসিত হয়।’’ তখনই বিষণ্ণতা, বিদায়ের সুরকে ছাপিয়ে সম্প্রীতির ঝকঝকে ছবি মন ভাল করে দিল সকলের। এ দিন জলপাইগুড়িতে মহরমেরও মহড়া ছিল। মহরম কমিটির সম্পাদক মোহাসিন আলি বলেন, ‘‘এ দিন যে যার নিজের এলাকায় অল্পবিস্তর মহড়া দিয়েছে।’’

বহু নদী বয়ে গিয়েছে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার জেলা দিয়ে। দশমীতে জমজমাট ছিল সেই নদীগুলি। দুপুর গড়াতেই বিভিন্ন মণ্ডপ থেকে প্রতিমা বের করে শোভাযাত্রা শুরু হয়। কোচবিহার শহরে তোর্সা নদীতে চলে বিসর্জন। তোর্সার ঘাটে মেলাও বসে। তুফানগঞ্জে রায়ডাক নদীতে, মাথাভাঙ্গায় সুটুঙ্গা নদীতে, দিনহাটার থানা দিঘিতে ও মেখলিগঞ্জের তোর্সা নদীতেও প্রতিমা বিসর্জন দেখতে তিলধারণের জায়গা ছিল না। বক্সিরহাটে বিসর্জন উপলক্ষে অসম-বাংলার পুজো উদ্যোক্তারা মিলনমেলায় মাতেন। তবে মহরম ও বৃষ্টির কারণে পুজো উদ্যোক্তাদের অনেকেই বৃহস্পতিবার বিসর্জন দেবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জায়সবাল বলেন, “মঙ্গলবার রাতের মধ্যে প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ বিসর্জন হয়ে যাবে বলে আশা করছি। বাকি বিসর্জন পর্ব বৃহস্পতিবার হয়ে যাবে।” এ দিন সকালে কোচবিহারের রাজ আমলের ঐতিহ্যবাহী বড়দেবী প্রতিমার বিসর্জন হয় লম্বাদিঘিতে। দেবোত্তর ট্রাস্ট বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, দশমীর বিসর্জনের আগে দিঘির পাড়ে পায়রা ও শুয়োর বলি দেওয়া হয়। বিকেলে মদনমোহন মন্দিরের কাঠামিয়া দুর্গাপ্রতিমা বিসর্জন হয় তোর্সার ফাঁসিরঘাটে। পুরানো রেওয়াজ মেনে বিসর্জনের আগে প্রতিমা নিয়ে নৌকায় নদীতে পরিক্রমা হয়। ভিড় ছিল সেখানেও।

শিলিগুড়িতেও বেলা ১২টার মধ্যেই বিসর্জনের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। বাড়ির অধিকাংশ পুজোর বিসর্জন বিকেলের মধ্যেই হয়ে যায়। বেশ কয়েকটি ক্লাবের বিসর্জন হয়েছে। তবে পুলিশ জানিয়েছে, শিলিগুড়ির বেশির ভাগ পুজোর বিসর্জন হবে শুক্রবার। বালুরঘাটেও সন্ধ্যা থেকেই বিসর্জন দেখতে পথে নামে মানুষ। রায়গঞ্জ, আলিপুরদুয়ারেও বিসর্জন ঘাটে উপচে পড়ে ভিড়। কয়েকটি শহরে স্থানীয় কেবল চ্যানেলে ‘লাইভ বিসর্জন’ দেখানোর ব্যবস্থা হয়। ফেসবুকেও লাইভ ভিডিও দেখানোর সুযোগ মিলছে। করলা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে প্রতিমা বিসর্জনের লাইভ ভিডিও দেখিয়েছে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের যুবক-যুবতীরা। যাঁরা কোনও কারণে বাড়ি থেকে বের হতে পারেননি, তাঁদের জন্য এই সুযোগ।

Live telecast immersion
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy