—ফাইল চিত্র।
বাংলার পুলিশকে মোদী ‘অপমান’ করেছেন। তাঁর দল রাজ্য পুলিশের উপর ‘আক্রমণ’ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পুরুলিয়ার সভায় ‘বিশৃঙ্খলা’র প্রসঙ্গ তুলে অভিযোগ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
তাঁর কটাক্ষ, ‘‘যিনি একটা সভা আয়োজন করতে পারেন না, তিনি দেশ চালাবেন কী করে?’’
একই সঙ্গে গুজরাত, রাজস্থান, মহারাষ্ট্রের মতো বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির কথা তুলে মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, ওই সব রাজ্যের ভোটে রাজ্য পুলিশের উপর ‘ভরসা’ করলেও বাংলার পুলিশকে ‘অবিশ্বাস’ করে এখানে ১০০% বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানো হয়েছে। এটা অসাংবিধানিক, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর বিরোধী। মমতার অভিযোগ, ‘‘বাংলায় ভয় দেখিয়ে নির্বাচন জিততে চাইছে বিজেপি।’’
বৃহস্পতিবার বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়ায় কাছাকাছি সময়ে আলাদা আলাদা সভা ছিল মোদী-মমতার। মোদী পুরুলিয়ার সৈনিক স্কুল সংলগ্ন মাঠে সভা করে চলে যাওয়ার খানিকক্ষণ পর শিমুলিয়ায় সভা শুরু করেন মমতা। সেখানেই প্রধানমন্ত্রীর সভায় বিশৃঙ্খলা প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আপনি কেন রাজ্য পুলিশের উপর অত্যাচার করবেন? কেন আপনার এসপিজি-র সামনে দলের কর্মীরা পুলিশকে চেয়ার ছুড়ে মারবে? জলের বোতল ছুড়ে মারবে? আপনার লজ্জা করে না? কই আমাদের মিটিংয়ে তো এ সব হয় না! বাংলায় এলে বাংলার সংস্কৃতিটাও শিখে আসুন।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
তবে এখানেই থেমে থাকেননি মুখ্যমন্ত্রী। গণতন্ত্রের তিনটি মূল স্তম্ভের কথা মনে করিয়ে দিয়ে মমতা অভিযোগ করেন, সংবিধান স্বীকৃত বিভাগগুলিকে মান্যতা দিচ্ছেন না মোদী। যা দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো বিরোধী। সে কারণেই রাজ্যের পুলিশকে ‘অবিশ্বাস’ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমি চ্যালেঞ্জ করছি। গুজরাত তো মোদীর জায়গা। রোজ দাঙ্গা করে লোক মারে। হার্দিকদের ভোটে দাঁড়াতে দেয়নি। ভোটে ক’জন কেন্দ্রীয় বাহিনী গিয়েছে সেখানে? মহারাষ্ট্রে গিয়েছে? উত্তরপ্রদেশে রোজ দাঙ্গা হয়। সেখানে গিয়েছে? বিহারে গিয়েছে? বিজেপির রাজ্যগুলিতে কত কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠিয়েছে? সব পাঠিয়েছে বাংলায়। বাংলাকে এত অসম্মান কেন? আপনি বিহার, উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্রের রাজ্য পুলিশকে বিশ্বাস করলে বাংলার পুলিশকে বিশ্বাস করবেন না কেন?’’
এর পরেই অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিনি কেন্দ্রীয় বাহিনীর বিরোধী নন। বাংলায় যে জওয়ানরা এসেছে তাঁদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয়, রাজ্য প্রশাসন তা দেখছে। কিন্তু আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয়। যেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর প্রয়োজন ছিল সেই জঙ্গলমহল থেকে বাহিনী তুলে নেওয়া হয়েছে। আর যেখানে প্রয়োজন নেই, সেখানে ১০০ শতাংশ বুথে বাহিনী পাঠানো হচ্ছে।
পাঁচ দফার ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে বলেও এ দিন অভিযোগ করেন তৃণমূলনেত্রী। তাঁর বক্তব্য, ‘‘ওরা কিন্তু প্রসূনকে (হাওড়ার তৃণমূল প্রার্থী প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়) মেরেছে। মামলা কিন্তু হয়ে গিয়েছে। মোদীবাবু মনে রাখবেন, বাংলা আপনার গুজরাত নয়। যা বলবেন তাই আমরা মেনে নেব না। বাংলার মানুষ আপনাকে উত্তর দেবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, ‘‘২৩ তারিখ বিজেপির মৃত্যু ঘণ্টা বাজবে। বিদায় বেলার আর বেশি দেরি নেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy