কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে সিপিআই (এমএল) প্রার্থী সুবিমল সেনগুপ্ত।
দিনভর টানাপড়েনের পরে জিইয়েই রইল বাম-কংগ্রেস আসন সমঝোতার সম্ভাবনা। আর পূর্ব ঘোষণা মতো কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে প্রার্থী ঘোষণা করে দিল সিপিআই (এমএল) লিবারেশন। ফলে ওই কেন্দ্রে চতুর্মুখী প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিশ্চিত হয়ে গেল, বামেরা পিছু না হটলে যা পঞ্চমুখী লড়াইয়ে দাঁড়াবে।
সিপিআই (এমএল) লিবারেশনের সাধারণ সম্পাদক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য রবিবার জানিয়ে দিয়েছিলেন, বামফ্রন্ট তাঁদের সমর্থন দিক বা না দিক, হুগলি ও কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে প্রার্থী দেবেন। সেই মতোই সোমবার কৃষ্ণনগর কেন্দ্রে প্রার্থী হিসেবে সুবিমল সেনগুপ্তের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এই কেন্দ্রে মহুয়া মৈত্রকে দাঁড় করিয়েছে তৃণমূ ল। বিজেপি এখনও প্রার্থী ঘোষণা করতে না পারলেও অচিরেই করবে। যদি শেষ পর্যন্ত আসন সমঝোতা হয় এবং কৃষ্ণনগর কেন্দ্রটি কংগ্রেসকে ছেড়ে দেয় বামেরা, তা হলেও চতুর্মুখী লড়াই হবে। যদি সমঝোতা ভেস্তে যায় এবং নিজেরা প্রার্থী না দিয়ে লিবারেশনকে সমর্থন করে বামফ্রন্ট, তা হলেও তা-ই। কোনও সমঝোতা বা সমর্থনের রাস্তায় না গিয়ে বামেরাও যদি প্রার্থী দেয়, তবে লড়াই হবে পাঁচমুখী।
এ দিন সকালেও কৃষ্ণনগরে সিপিএমের পার্টি অফিসে টানাপড়েন এবং উদ্বেগের ছবিটা ছিল স্পষ্ট। দেওয়ালে লাগানো টিভিতে চালানো খবরের চ্যানেলে ভোট নিয়ে, প্রচার নিয়ে, বাম-কংগ্রেস জট নিয়ে নানা কথা। জেলা নেতারা নিজেদের মধ্যে নিচু স্বরে কথা বলতে ব্যস্ত। জেলা সম্পাদক সুমিত দে ছাড়াও ছিলেন জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য এস এম সাদি, মেঘলাল শেখ, অশোক মুখোপাধ্যায়েরা। খানিক পরে ঢুকলেন রানাঘাট কেন্দ্রের প্রার্থী তথা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর আর এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য রমা বিশ্বাস। জল্পনা বা হিসেব একটা জিনিস নিয়েই, জোট হলে অঙ্কটা কেমন দাঁড়ায়, না হলেই বা কী।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
বামফ্রন্ট এখনও যে ১৭টি আসন ছেড়ে রেখেছে, কৃষ্ণনগর তার একটি। তবে রাজ্যস্তরে যে হিসেবই চলুক, জেলা নেতাদের অনেকেই ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় দাবি করে এসেছেন, এই কেন্দ্রে তাঁরাই লড়াই করবেন। শনিবার থেকে সেই সম্ভাবনা আরও প্রবল হতে শুরু করে। এ দিনও এক জেলা নেতা বলেন, “১৭টি আসন ছাড়া হয়েছে আলোচনার পরিধিকে সঙ্কুচিত না করার জন্য। তার মানে এই নয় যে বামফ্রন্ট ১৭টি আসনই কংগ্রেসকে ছেড়ে দেবে। এটা কংগ্রেস নেতারাও জানেন।” জেলা সম্পাদক সুমিত দে সরাসরি না হলেও বলছেন, “আমাদের প্রত্যাশা যে আমরাই প্রার্থী দেব। তবে শেষ সিদ্ধান্ত নেবে রাজ্যে বামফ্রন্ট।” এবং সেই কারণে গোড়া থেকেই সব রকম ভাবে প্রস্তুত হয়ে আছেন সিপিএম কর্মীরা।
সারা দিন দাঁতে নখ কেটেছে জেলা কংগ্রেসও। প্রদেশ কংগ্রেসের বেশির ভাগ নেতা বামেদের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা করলেও জেলা নেতারা অনেকেই চাইথেন, জোটটা হোক। তাতে অন্তত বামেদের কাঁধে ভর করে তুলনায় ভাল জায়গায় পৌঁছনো যাবে। বিশেষ করে যেহেতু জোট হলে তাদের প্রার্থীরই দাঁড়ানোর দরজা খোলা থাকছে কৃষ্ণনগরে। শনিবার দুপুরে শেষ বার প্রদেশ নেতৃত্বের সঙ্গে প্রার্থী নিয়ে কথা হয়েছিল জেলা কংগ্রেস সভাপতি জ্যোর্তিময় ভট্টাচার্যের। তার পর আর কোনও নির্দেশিকা আসেনি। কর্মীরা তাঁর কাছে প্রার্থীর নাম জানতে চাইছেন। জ্যোতির্ময় বলেন, “জোট হলে তো ভালই হয়। তবে দলের সম্মান আগে। দল জোট না চাইলে আমরা একাই লড়াই করতে প্রস্তুত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy