ভারতী ঘোষ। ফাইল চিত্র
সোনা আছে কত শুনি!
বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই গুঞ্জন চলছিল মেদিনীপুর কালেক্টরেটে। সরকারি কর্মী থেকে পুলিশ সকলেরই জিজ্ঞাসা, ভারতী ঘোষের জিম্মায় ঠিক কতটা সোনা রয়েছে। কেউ কেউ তো অত্যুৎসাহী হয়ে খোঁজ নিচ্ছিলেন নমিনেশন সেলের কর্মীদের কাছে।
জবাব মিলল বিকেলে, নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে। তথ্য বলছে, বিজেপি প্রার্থী ভারতী মনোনয়নের সঙ্গে জমা দেওয়া হলফনামায় জানিয়েছেন, তাঁর নিজের কাছে রয়েছে প্রায় ৯১ ভরি (১,০৬১.৪২ গ্রাম) সোনা, যার মূল্য ৩২ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৭০ টাকা। আর তাঁর স্বামী এমএভি রাজুর কাছে সোনা রয়েছে প্রায় ৬০ ভরি (৬৯৯.৮৪ গ্রাম), অর্থমূল্য ২১ লক্ষ ৩৪ হাজার ২০০ টাকা।
নোটবন্দির সময় সোনা-প্রতারণার মামলায় নাম জড়ানোর পরেই ভূমিকা বদল হয়েছে জেলার প্রাক্তন পুলিশ সুপার ভারতীর। পুলিশের চাকরি ছেড়েছেন, দীর্ঘ দিন আত্মগোপন করে থাকার পরে এ বার লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন। সোনা প্রতারণার মামলাতেই ভারতীর বাড়ি, তাঁর দেহরক্ষী সুজিত মণ্ডলের বাড়িতে হানা দিয়েছিল সিআইডি। ভারতীর মাদুরদহের বাড়ি থেকে উদ্ধার হওয়া টাকা ও সোনার গয়না ট্রাঙ্কে করে নিয়ে গিয়েছিলেন সিআইডি অফিসারেরা। ভারতীর কত সোনা, জল্পনা শুরু হয়েছিল তখন থেকেই। পরে দক্ষিণ কলকাতার এক রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে ভারতীর দু’টি লকার থেকে ১,১০০ গ্রাম সোনা বাজেয়াপ্ত করে সিআইডি। ভারতী সেই সময় দাবি করেছিলেন, ওই গয়না তাঁর এবং তাঁর স্বামীর উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া।
সেই সোনা-প্রতারণা মামলাতেই বৃহস্পতিবার ভারতীকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চেয়েছিল সিআইডি। কিন্তু এ দিনই মেদিনীপুরে মনোনয়ন জমা দেন ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী। মনোনয়নের জন্য যেতে পারবেন না বলে সিআইডি-কে চিঠিও দিয়েছেন ভারতী। একই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এটা ১৪ মাসের পুরনো মামলা। সিআইডি ১৪ মাস কোনও নোটিস দেয়নি। এখন হঠাৎ সিআইডির মনে হল, ভারতী ঘোষ যেদিন বিজেপির হয়ে মনোনয়ন জমা দেবেন, সে দিনই তাঁকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রয়োজন রয়েছে। মানুষ কিন্তু সব বোঝেন।’’
হলফনামায় ভারতী আরও জানিয়েছেন, তাঁর স্থাবর সম্পত্তি ৭ কোটি ২ লক্ষ ২৪ হাজার ৯৭৮ টাকার, অস্থাবর সম্পত্তি ২ কোটি ৫৮ লক্ষ ৭৫ হাজার ৫৫৮ টাকার। ভারতীর স্বামীর স্থাবর সম্পত্তি ৫ কোটি ২৮ লক্ষ ৯৪ হাজার ৩৬০ টাকার, অস্থাবর সম্পত্তি ৩ কোটি ১১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৭৯১ টাকার। ভারতীর কাছে নগদ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা ও রাজুর কাছে নগদ ১ লক্ষ ৭৮ হাজার ৫০০ টাকা রয়েছে।
তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি বিঁধছেন, ‘‘উনি কী হিসেব দিয়েছেন সেটা বড় কথা নয়। দাসপুর, মেদিনীপুর, খড়্গপুরের বহু সোনাওয়ালা ওকে খুঁজছেন। উনি সোনা-মামলাতেই ফাঁসবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy