Advertisement
২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

পৃথক রাজ্য চেয়ে হঠাৎ প্রার্থী হরকা বাহাদুর

হরকার মনোনয়ন পেশের পর থেকেই অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছে পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে।

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৯ ০৩:৫৭
Share: Save:

চেয়েছিলেন পাহাড়ে ১১ দলের সর্বসম্মত প্রার্থী, যাঁকে সমর্থন করবে বাম ও কংগ্রেস। সিপিএম তো বটেই, কংগ্রেসও দার্জিলিং আসনে প্রার্থী দিয়ে দেয়। তখন ভোট প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকবেন বলেই সিদ্ধান্ত নেন হরকাবাহাদুর ছেত্রী। দার্জিলিং আসনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিনে এসে তিনি চমক দিলেন। মনোনয়ন পেশ করলেন নির্দল প্রার্থী হিসেবে। মুখে পৃথক রাজ্যের দাবি।

হরকার মনোনয়ন পেশের পর থেকেই অঙ্ক কষা শুরু হয়ে গিয়েছে পাহাড়ের বিভিন্ন রাজনৈতিক শিবিরে। বলা হত, বিমল গুরুং একবার ডাক দিলে পাহাড়বাসীরা চোখ বুজে সেই চিহ্নে ছাপ দিয়ে আসবেন। ২০০৯ ও ২০১৪ সালে গুরুংয়ের ডাকেই বিজেপি প্রার্থীদের জিতিয়েছিল পাহাড়। এমন ‘লিড’ দিয়েছিল যা সমতলে এসেও অন্য প্রার্থীদের পক্ষে অতিক্রম করা সম্ভব ছিল না। কিন্তু পরিস্থিতি কিছুটা বদলাল ২০১৬-এর বিধানসভা ভোটে। গুরুংয়ের এক সময়ের ঘনিষ্ঠ এবং মোর্চার ‘থিঙ্ক ট্যাঙ্ক’ হিসেবে পরিচিত হরকাবাহাদুর ছেত্রী নয়া দল গড়লেন। তবে তাঁর সেই জন আন্দোলন পার্টির (জাপ) প্রার্থী হিসেবে নয়, বিধানসভা ভোটে হরকা দাঁড়ালেন তৃণমূল সমর্থিত নির্দল হিসেবে। ফল, ২০১৪-তে যে কালিম্পং আসন থেকে লোকসভা ভোটে ৫৮ হাজার ৭৪৯ ভোটের ‘লিড’ নিলেন মোর্চা সমর্থিত প্রার্থী, ২০১৬ সালে সেটাই তারা জিতল ১১ হাজার ৪৩১ ভোটে।

এই অঙ্কের হিসেবই আবার উঠে এসেছে পাহাড়ে। পাহাড়বাসীর একাংশ বলছেন, দার্জিলিং ও কার্শিয়াংয়ে ঘর গোছানো শুরু করলেও কালিম্পংয়ে বিনয় তামাং, অনীত থাপাদের শক্তি বেশি নয়। এখানে এখনও গুরুংয়ের প্রভাব যথেষ্ট। রাজু বিস্তাকে গুরুং ও মন ঘিসিং একযোগে প্রার্থী করায় কালিম্পংয়ে তাদের ‘লিড’ পাওয়া সহজ হয়েছিল বলে ধারণা অনেকের। কিন্তু হরকা লড়াইয়ে নামায় সেই অঙ্ক কঠিন হল বলেই তাঁদের দাবি।

আরও পড়ুন: দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

জাপ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আলোচনায় বসে দলের কেন্দ্রীয় কমিটি। সেই বৈঠকেই ঠিক হয়, প্রার্থী হবেন হরকা। মঙ্গলবার নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেশ করেন তিনি। তার পরে জানান, আলাদা রাজ্যের দাবিকেই সামনে রেখে তিনি ভোটে লড়ছেন। এখন প্রশ্ন, এতে কি তৃণমূলের প্রার্থী অমর সিংহ রাইয়ের সুবিধা হবে। পাহাড়ে বিরোধী দলগুলির তা-ই দাবি করছে।

কিন্তু জাপের নেতারা জানান, কয়েক দিন ধরে দলের তো বটেই, নানা সংগঠন, সংস্থার তরফে হরকাকে প্রার্থী হওয়ার অনুরোধ করা হয়। শেষ অবধি তিনি আলাদা রাজ্যের দাবিকে সংসদে তোলার অ্যাজেন্ডা সামনে রেখে ভোটে দাঁড়িয়ে গেলেন। হরকা নিজে বলেন, ‘‘আমরা তো ১১টি দল মিলে সর্বসম্মত প্রার্থীই চেয়েছিলাম। তা হলে ভালই হত। অন্য দলগুলির কয়েকটি তো প্রার্থী দিয়েছে। তা হলে আমি ভোট ভাগের জন্য কেন দায়ী হব? সবাই তো ভোট ভাগ করছে। আসলে ভোট এলে এ সব নানা কথা হবেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Lok Sabha Election 2019 Harka bahadur Chhetri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE