নাগরাকাটায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক
নাগরাকাটাতে যদি সরাসরি সাদরি, কোচবিহারে তা হলে কথায় বাঙাল টান। সোমবার প্রচারের শেষ লগ্নে এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরের নানা প্রান্তে এক রকম ঘরের মানুষ হয়ে উঠলেন তাঁর ভাষা ব্যবহারে। তাই যখন বাঙাল টানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণের সময় বলে উঠলেন, ‘‘আমি নাকি রেল মিনিস্টার থাকার সময় কিছুই করি নাই! জিজ্ঞেস করুন চ্যাংরাবান্ধা-মালবাজার কে করসিল, আপনি করসিলেন? ওপর থেকে আইস্যা আইস্যা?’’ সারা মাঠ তখন হেসে গড়ায়। কোচবিহারের এক তৃণমূল নেতা সভা শেষ হওয়ার পরে বললেন, ‘‘দিদি শুধু মোদীকে মুখের মতো জবাবই দিলেন না, এমন ভাবে দিলেন যেন ঘরের মানুষ।’’
নাগরাকাটায় এ দিন তাঁর মুখে ঝরঝরে সাদরি শুনে অবাক হয়ে যান সাদরি ভাষাভাষীরা। মুখ্যমন্ত্রী সেখানে বলেন, “কি কর বাত শুনকে গলত রাস্তা মে মত যাবা, তৃণমূল কংগ্রেস আপকা আসলি রাস্তা হ্যায়, অউর তৃণমূল কংগ্রেস কা বাত শুনকর ভোট দেবা জনম হউক বা দেহান্ত তৃণমূল কংগ্রেস আপকা সাথ দেবু।” এ দিন আলিপুরদুয়ার কেন্দ্রের নাগরাকাটা চা বলয়ের ইউরোপিয়ান ক্লাব ময়দানে মুখ্যমন্ত্রী পুরো বক্তৃতাই দিয়েছেন হিন্দিতে। তার মধ্যেই তিনি জনজাতি আদিবাসীদের মূল কথ্য ভাষা সাদরিতেও বার্তা দেন। একই সঙ্গে রাউরামন, জোহার, জয় আদিবাসী ধরনের আদিবাসীদের নিজেদের ভাষায় জমায়েতকে সম্বোধন করেন।
নিজেদের ভাষাতেই মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে দেখে বেজায় খুশি চা শ্রমিকরা। মেটেলির চা বাগান থেকে আসা চা শ্রমিক ইন্দ্রকুমার টোপ্পো বলেন, “বাংলা আমরা বেশ ভালই বুঝি, কিন্তু তারপরেও আমাদের কথা ভেবে যে ভাবে নেত্রী আমাদের ভাষাতে বক্তৃতা দিলেন তাতে আমরা সন্তুষ্ট।” এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “মা মাটি মানুষ রাউরামনকে পাশমে হাইক।” নিজের ভাষাতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর থেকে পাশে থাকার এই বার্তা ভোট বৈতরণী পার করাতে বড় ভূমিকা নেবে বলেই তৃণমূল নেতাকর্মীদের আশা। চা বাগানের থেকে উঠে এসে মালবাজার এবং নাগরাকাটা থেকে বিধায়ক হয়েছেন বুলু চিক বড়াইক এবং শুক্রা মুন্ডা। তাঁরা জানান, মুখ্যমন্ত্রী যে ভাবে সাদরিতে পর্যন্ত কথা বললেন, তাতে তাঁর প্রতি চা বাগানের বিশ্বাস আরও বেড়ে গেল। তাঁকে নিজেদের লোক বলেই মনে করছে চা বাগান।যেমন হল কোচবিহারেও। সেখানে তৃণমূল নেতাদের কথায়, মোদীকে শুধু যুক্তিতে নয়, ভাষাতেও হারিয়েছেন মমতা। মোদী দু’লাইন বাংলা বলেন। দিদি ঘরের ভাষায় কথা বললেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy