Advertisement
০৪ মে ২০২৪

দেব দর্শনে চেয়ার ফাঁকা

ঘাটাল লোকসভার মধ্যে পড়ে পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা। গত বার সাংসদ হওয়ার পরেও এই এলাকায় দেব সে ভাবে না আসায় এলাকাবাসীর একটা ক্ষোভ ছিল।

মঞ্চে তখন দেব। অথচ খালিই রয়েছে চেয়ার। নিজস্ব চিত্র

মঞ্চে তখন দেব। অথচ খালিই রয়েছে চেয়ার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাঁশকুড়া শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ০০:৫৭
Share: Save:

আশঙ্কা ছিল। তা সত্যি করেই শনিবার পাঁশকুড়ায় দেবের কর্মিসভায় খালি থেকে গেল প্রায় ২৫ শতাংশ চেয়ার।

ঘাটাল লোকসভার মধ্যে পড়ে পাঁশকুড়া পশ্চিম বিধানসভা। গত বার সাংসদ হওয়ার পরেও এই এলাকায় দেব সে ভাবে না আসায় এলাকাবাসীর একটা ক্ষোভ ছিল। তার উপর রয়েছে পাঁশকুড়ার কাউন্সিলর আনিসুর রহমানের বিজেপিতে যোগদানের অঙ্ক। এই সব সমীকরণেই এ দিন বিকেলে রোদ পড়ে যাওয়ার পরেও দেবের কর্মিসভার সব চেয়ার ভরেনি বলে মনে করছেন তৃণমূলেরই একাংশ।

সমস্যা যে হতে পারে পাঁশকুড়া ব্লক তৃণমূল নেতৃত্বের কাছে হয়তো তার আঁচ ছিল। তাই পাঁশকুড়া শহরের বড় পিডব্লুডি মাঠ ছেড়ে এ দিন কর্মিসভার জন্য বেছে নেওয়া হয় বহুগুণে ছোট পাঁশকুড়া সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডকে। কর্মী-সমর্থকদের বসার জন্য ছিল চেয়ার। বিকেল ৩টেয় দেবের সভা শুরুর কথা থাকলেও দেব পৌঁছন বিকেল ৫টে নাগাদ। মঞ্চে তখন বক্তৃতা করছিলেন সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। দেব মঞ্চে আসার পরেও মাঠ ভিড় না জমায় বক্তৃতা চালিয়ে যান সৌমেনবাবু। তখনও খালি সভাস্থলের ২৫ শতাংশ চেয়ার। এরপর বক্তৃতা শুরু করেন পাঁশকুড়া পশ্চিমের বিধায়ক ফিরোজা বিবি। ফিরোজা বিবির বক্তব্যের পরে বক্তব্য রাখেন দেব।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

দেবের বক্তৃতার বেশিরভাগটা জুড়েই ছিল ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান। তবে দেব বক্তৃতা শুরু করার কিছুক্ষণের মধ্যেই চেয়ার ছেড়ে অনেকে উঠে যান। তা দেখে দেবও তড়িঘড়ি বক্তৃতা শেষ করেন। তখন দেবের কাছে এগিয়ে যান পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র। দেখা যায়, দেবের কানে কানে তিনি কিছু বলছেন। এরপরই দেব বলেন, ‘‘এ বার আমি আবার জিতলে পাঁশকুড়ায় উড়ালপুল বানানোর জন্য সংসদে সরব হব।’’ ক্ষোভে অবশ্য মলম পড়েনি তাতে। পাঁশকুড়ার তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের কয়েকজনকে নিজেদের মধ্যে আলোচনা করতে শোনা যায়, ‘‘মিনিট দশেকের বক্তৃতায় দেব ঘাটাল নিয়েই বলে গেলেন। পাঁশকুড়ার উন্নয়ন নিয়ে কিছু বললে ভাল হত।’’

পাঁশকুড়ার সভা মঞ্চে দেব। শনিবার। নিজস্ব চিত্র

২০১৪ সালে পাঁশকুড়া ব্লকে দেবের রোড শোয়ের ভিড় সামলাতে হিমশিম খেতে হয়েছিস পুলিশকে। এ বার সেখানে উলটপুরাণ কেন?

তৃণমূলের একাংশই মনে করিয়ে দিচ্ছেন, পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্রের অনুগামীদের সঙ্গে ব্লক নেতা কুরবান শা-এর ঘনিষ্ঠদের বিরোধ বহু দিনের। তা ছাড়া, কাউন্সিলর আনিসুর রহমান তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়ার পরে পাঁশকুড়ায় রাজনৈতিক সমীকরণ বদলেছে। আনিসুর অনুগামী অনেকেই এখন রয়েছেন গেরুয়া শিবিরে। এই সব অঙ্কেই এ দিন দেব আসা সত্ত্বেও মাঠ পুরো ভরেনি বলে তৃণমূলেরই এক সূত্রের দাবি। পুরপ্রধান নন্দ মিশ্র যদিও বলছেন, ‘‘দেবকে সকলে কাছ থেকে দেখতে চায়। তাই গোটা ভিড়টাই ছিল মঞ্চের কাছে। পিছনে হয়তো কিছু আসন ফাঁকা ছিল।’’ আর কুরবানের দাবি, ‘‘আমাদের এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বলে কিছু নেই। আর দেব আসার পরে তো সভাস্থল ভরে গিয়েছিল।’’ যদিও তৃণমূলের এক সূত্রে খবর, ব্লকের বিভিন্ন এলাকা থেকে এ দিন কর্মী-সমর্থকেরা বিশেষ আসেননি। তাঁদের যাতায়াতে গাড়ির ব্যবস্থাও করেননি।

পাঁশকুড়ার সভাস্থলে আবার সবুজ, বাদামি, ছাই রঙা চেয়ারের ভিড়ে অনেক লাল চেয়ারও ছিল। তা নিয়েও জোর চর্চা হয়েছে এ দিন। তৃণমূলের পাঁশকুড়া ব্লক সভাপতি দীপ্তি জানা অবশ্য বলেন, ‘‘আমরা ডেকরেটরকে চেয়ারের কোনও রং বলিনি। রঙে কী আসে যায়। আর দেব তো সকলের মনে ঘাসফুলের রং ধরিয়ে দিয়েছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE