পশ্চিমবঙ্গে সাত পর্বের ভোটে প্রতিটি দফায় একশো শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা দেওয়ার দাবি উঠছিল নির্বাচন পর্বের অনেক আগে থেকেই। পাঁচ-পাঁচটি পর্ব সাঙ্গ হলেও আধাসেনা মোতায়েন এবং তাদের সক্রিয়তা নিয়ে বিভিন্ন শিবির থেকে অভিযোগ উঠেছে। তা সত্ত্বেও ভোট-ষষ্ঠীতে সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকছে না। এই দফায় বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, পুরুলিয়া, ঝাড়গ্রাম, মেদিনীপুর, ঘাটাল, তমলুক ও কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের ১৫ হাজার ৪২৮ বুথে নির্বাচন হবে। কিন্তু আধাসেনা থাকবে ৭৩ শতাংশ বুথে। সব মিলিয়ে আসছে ৬৮৩ কোম্পানি বাহিনী।
এত বাহিনী আসা সত্ত্বেও সব বুথে তাদের দেওয়া যাচ্ছে না কেন?
নির্বাচন কমিশন জানাচ্ছে, এই দফায় আটটি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট হচ্ছে। কিন্তু অধিকাংশ বুথ গ্রামীণ এলাকায়। জঙ্গলমহলের প্রত্যন্ত এলাকায় কোনও কোনও গ্রামে একটি করে বুথ রয়েছে। কমিশন ঠিক করেছে, প্রত্যন্ত এলাকার সব বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে। ওই সব এলাকায় একটি বা দু’টি বুথ সংবলিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বেশি, তাই সেখানেই অধিকাংশ বাহিনী ব্যবহার করা হবে। শহরের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রগুলিতে তিন বা চারটি করে বুথ থাকলেও সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীর পরিবর্তে দেওয়া হবে রাজ্য পুলিশ।
নবান্নের এক কর্তা জানান, পঞ্চম দফায় প্রায় সমসংখ্যক ভোটগ্রহণ কেন্দ্র থাকলেও সব বুথেই কেন্দ্রীয় বাহিনী দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। কারণ, শহরাঞ্চলের লোকসভা আসনে দু’তিনটি বুথ সংবলিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বেশি ছিল। সেখানে চার জন জওয়ান রেখেই কাজ হয়েছে। ষষ্ঠ দফায় একটি বুথ সংবলিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১০,৯৮৬ এবং দুই বুথের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৯৩২। সেখানেই চার জন করে জওয়ান মোতায়েন করতে গিয়ে বাহিনীর অধিকাংশ চলে যাচ্ছে।
মাওবাদী অধ্যুষিত ঝাড়গ্রামে ১৯৯৪টি বুথ রয়েছে। সেখানে সব বুথেই থাকবেন এক সেকশন অর্থাৎ কেন্দ্রীয় বাহিনীর আট জন জওয়ান। কমিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, সেখানে ১১৪ কোম্পানি বাহিনী থাকবে। ঝাড়গ্রামের জন্য ছ’টি স্যাটেলাইট ফোনেরও ব্যবস্থা করছে কমিশন। বাঁকুড়ায় ১৩১, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৫৮, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৭২, পুরুলিয়ায় ৯৯ এবং পূর্ব বর্ধমানে নয় কোম্পানি বাহিনী ব্যবহার করা হবে। ন’টি কোম্পানি থাকবে স্ট্রংরুমের পাহারায়। সব মিলিয়ে আধাসেনা থাকবে ৭৩ শতাংশ বুথে। তবে কমিশনের এক কর্তার দাবি, বাহিনী আরও বাড়তে চলেছে।
শহরাঞ্চলের বুথে রাজ্য পুলিশ থাকবে। সপ্তম ও শেষ দফায় আবার ১০০% বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী। কারণ, কলকাতা সংলগ্ন লোকসভা আসনগুলিতে তিন বা চার বুথ সংবলিত ভোটগ্রহণ কেন্দ্রের সংখ্যা বেশি। তাই সেগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান দিয়েই ভোট হবে।