Advertisement
E-Paper

হুডখোলা ‘থরে’ কল্যাণ, অপরূপার প্রচার টোটোয়

গাড়িটি অবশ্য কল্যাণবাবুর নয়। তাঁর ঘনিষ্ঠ, হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়ের।

প্রকাশ পাল 

শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৪৭
টোটোর ছাউনি খুলে নিয়েই প্রচার সারছেন অপরূপা। —নিজস্ব চিত্র।

টোটোর ছাউনি খুলে নিয়েই প্রচার সারছেন অপরূপা। —নিজস্ব চিত্র।

প্রচারে তাঁর পরণে সব সময় দুধসাদা পাজামা-পাঞ্জাবি। গাড়িটি কুচকুচে কালো। মহিন্দ্রার ‘থর’।

হুডখোলা সেই গাড়িতে দাঁড়িয়ে শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় যখন ভোট চাইতে বেরোচ্ছেন, সাধারণ মানুষের অনেকের চোখ পড়ছে। গাড়ির সাউন্ড-সিস্টেমে কখনও স্লোগান চলছে, কখনও উন্নয়নের ফিরিস্তি।

গাড়িটি অবশ্য কল্যাণবাবুর নয়। তাঁর ঘনিষ্ঠ, হুগলি জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর মুখোপাধ্যায়ের। মাস তিনেক আগে সুবীর এক জনের থেকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকায় ছয় আসনের বাতানুকূল গাড়িটি কেনেন। ওই গাড়িতে জেলা পরিষদ বা রাজনৈতিক কর্মসূচিতেও গিয়েছেন তিনি। তবে দলের প্রার্থী ঘোষণার আগেই ঠিক করে ফেলেছিলেন, নতুন গাড়ি ভোটের কাজে লাগাবেন। গ্যারাজে নিয়ে গিয়ে কিছু অদলবদল করেন। পাদানি তৈরি করা হয় (যাতে প্রচারের সময় ভিড় সামালাতে নিরাপত্তারক্ষীরা দাঁড়াতে পারেন)। ভিতরে দাঁড়ানোর জায়গা করা হয়। রেক্সিন মোড়া হাতল লাগানো হয়। হুড খুলে ফেলা হয়। ফ্লেক্স লাগানোর জ‌ন্য দু’ধারে ফ্রেম লাগানো হয়। এই ক’দিন নিজের পুরনো গাড়িই ব্যবহার করছেন সুবীর।

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

নতুন কেনা গাড়ি এ ভাবে ব্যবহার করতে বুকটা চিনচিন করছে না? প্রশ্ন শুনে সুবীর হেসে বলেন, ‘‘এ ভাবে ব্যবহারের জন্যই তো গাড়িটা কিনেছি। সদ্ব্যবহার হচ্ছে বলতে পারেন। ভোট মিটলে হুড লাগিয়ে নেব। এটায় চড়ে তারাপীঠ

আর দিঘা যাওয়ার ইচ্ছে আছে।’’ আর কল্যাণবাবু বলছেন, ‘‘হুডখোলা গাড়িতে প্রচার করতে ভালই লাগছে। বেশি এলাকা ঘোরা যাচ্ছে, হাঁটার ক্লান্তিও কমছে।’’

আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দার অন্য পন্থা নিয়েছেন। টোটোর হুড খুলে চলছে তাঁর প্রচার। তারকেশ্বরের বালিগোড়িতে, সন্তোষপুর, কেশবচকে, খানাকুলে কম গতির এই গাড়িতেই চলছে প্রচার। অপরূপা বলছেন, ‘‘এই গাড়িতে সুবিধা অনেক। চার্জ করে নিলেই হল। গ্রামের সরু রাস্তাতেও দিব্যি চলছে। পাঁচটা পুরসভা, ১০৬টা পঞ্চায়েত এলাকায় যেতে হবে প্রচারে। টোটোতেই হয়ে যাবে মনে হচ্ছে।’’ অপরূপার স্বামী, রিষড়ার তৃণমূল কাউন্সিলর সাকির আলি ব‌লেন, ‘‘টোটোতে খরচ সামান্য। ৩-৪ ঘণ্টায় দু’-তিনশো টাকা। দলীয় কর্মীরাই এগিয়ে আসছেন। টোটোর হুড খো‌লা এবং লাগানো খুবই সহজ। সেটা ওঁরা নিজেরাই করছেন।’’

শ্রীরামপুরের সিপিএম প্রার্থী তীর্থঙ্কর রায়কে শনিবার বালি-জগাছা এলাকায় দেখা গে‌ল ম্যাটাডরে প্রচার করতে। তাতে মাইক লাগানো। তীর্থঙ্কর জানান, প্রতিদিন প্রায় পনেরো কিলোমিটার হেঁটে প্রচার করছেন। দলের সতীর্থদের কথায় ওখানে ম্যাটাডর চাপেন। তবে অপেক্ষাকৃত ফাঁকা জায়গাতেই চেপেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা হুডখোলা জিপ কোথায় পাব? আমরা অত্যন্ত সাধারণ। ঘুরিও সাধারণ ভাবেই।’’

প্রচারে বেরিয়ে শনিবার হুগলির বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায় সিঙ্গুরে সাইকেল চালিয়েছেন। শ্রীরামপুরের বিজেপি প্রার্থী দেবজিৎ মিনিট খানেক রিকশা চালিয়েছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, এখন বাড়ি বাড়ি নিবিড় প্রচার সারছেন। শেষ দিকে হুডখোলা জিপে ঘুরতে পারেন। আরামবাগের সিপিএম প্রার্থী শক্তিমোহন‌ মালিকের এ ব্যাপারে এখনও কোনও পরিকল্পনা নেই। তাঁর কথায়, ‘‘দলের লোকসভা কমিটির বৈঠকেই ঠিক হবে, কী ভাবে প্রচার চলবে। আপাতত হেঁটেই ঘুরছি।’’

BJP TMC Kalyan Banerjee Lok Sabha Election 2019
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy