কুড়ি মাসেরও বেশি তিনি জেলে আছেন। এবং বহাল তবিয়তে আছেন বা বুধবার সকাল পর্যন্ত ছিলেন বিভিন্ন স্কুল ও কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি-পদেও! কোনও কলেজের পরিচালন সমিতির মাথায় মন্ত্রীদের থাকা আদৌ উচিত কি না, তা নিয়ে প্রবল চাপান-উতোরের মধ্যে এ দিন সব স্কুল ও কলেজের পরিচালন সমিতি থেকে পদত্যাগ করেছেন প্রাক্তন ক্রীড়া ও পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র।
জোড়া দফতরের পূর্বতন মন্ত্রী এ দিন ছাড়লেন বেলঘরিয়ার ভৈরব গাঙ্গুলি কলেজ, দক্ষিণেশ্বরের হীরালাল মজুমদার মেমোরিয়াল কলেজ, বাগবাজার উইমেন্স কলেজ এবং কামারহাটির আরও বেশ কয়েকটি কলেজ ও স্কুলের সভাপতির পদ। সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অন্যতম অভিযুক্ত হিসেবে মদনবাবু ২০১৪ সালের ডিসেম্বর থেকে জেলে বন্দি। জেলে থেকে, মন্ত্রিত্ব খোয়ানোর আগে-পরে দীর্ঘদিন ধরে তিনি কী ভাবে ওই সব স্কুল-কলেজের পরিচালন সমিতির শীর্ষ পদ অলঙ্কৃত করে গেলেন, সেই প্রশ্ন উঠছে। কিছু দিন আগেও ঠিক যে-ভাবে প্রশ্ন উঠছিল, লৌহকপাটের আড়ালে থাকা সত্ত্বেও ক্রীড়া ও পরিবহণের মতো দু’টি গুরুত্বপূর্ণ দফতরের মন্ত্রীর কাজ তিনি চালিয়ে যাচ্ছিলেন কী করে? কেনই বা তাঁকে সেটা চালাতে দেওয়া হচ্ছিল?
ট্রেড ইউনিয়নের মাথায় বা কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতির মাথায় মন্ত্রীদের থাকা উচিত নয় বলে মন্তব্য করে বিতর্ক উস্কে দিয়েছেন মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে। তাঁর এই মন্তব্যকে ভাল চোখে দেখেননি শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সংবাদমাধ্যমের সামনে এই মন্তব্য করার জন্য দলের তরফে সাধনবাবুর কাছে চিঠি পাঠানোর কথাও জানান তিনি। পার্থবাবু বুধবারেও বলেন, ‘‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পরিচালন সমিতিতে জনপ্রতিনিধিরা যে থাকতে পারেন, সেটা তো আইনেই আছে। যদি তাঁদের রাখা না-যায়, তা হলে তো আইনের বদল প্রয়োজন। আলোচনা করতে হবে।’’ তবে সংবাদমাধ্যমের কাছে ওই মন্তব্য করে সাধনবাবু যে মোটেই উচিত কাজ করেননি, তা এ দিনও জানিয়ে দেন শিক্ষামন্ত্রী। মদনবাবুর ইস্তফা প্রসঙ্গে অবশ্য পার্থবাবু বলেন, ‘‘ও বুঝেছে, জেলে থেকে কলেজের কাজ করতে পারবে না। তাই নীতিবোধ থেকেই এই কাজ করেছে।’’