Advertisement
E-Paper

পাহাড়ি পথে মমতা বারবার শুনলেন, থ্যাঙ্ক ইউ দিদি!

কালিম্পং যে নতুন জেলা হবে, সে কথা আগেই জানা ছিল পাহাড়ের। জানা ছিল, সেই জেলার উদ্বোধনে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে দেখতে পাওয়াও তো বিরল ঘটনা নয়। তা হলে বাগডোগরা থেকে কালিম্পং, সোয়া দু’ঘণ্টার রাস্তায় কেন বারবার দাঁড়াতে হল তাঁকে অভ্যর্থনা সামলাতে?

কিশোর সাহা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:২০
বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার।ছবি:বিশ্বরূপ বসাক

বাগডোগরা বিমানবন্দরে মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার।ছবি:বিশ্বরূপ বসাক

কালিম্পং যে নতুন জেলা হবে, সে কথা আগেই জানা ছিল পাহাড়ের। জানা ছিল, সেই জেলার উদ্বোধনে আসবেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে দেখতে পাওয়াও তো বিরল ঘটনা নয়। তা হলে বাগডোগরা থেকে কালিম্পং, সোয়া দু’ঘণ্টার রাস্তায় কেন বারবার দাঁড়াতে হল তাঁকে অভ্যর্থনা সামলাতে? কেন পাহাড়ি শহরে পৌঁছতে লেগে গেল চার ঘণ্টার কিছু বেশি? কেন তাঁকে দেখতে রাস্তায় জড়ো হওয়া মেয়েরা হাত নেড়ে চেঁচিয়ে উঠলেন, ‘‘থ্যাঙ্ক ইউ, দিদি!’’

কারণ একটাই, বলছিলেন কালিম্পঙের এক দোকানি— ‘‘এত দিনে মুখ্যমন্ত্রী আমাদের হাত ভরিয়ে উপহার দিলেন। তা-ও আস্ত একটা জেলা!’’

মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে এলে বরাবরই গোটা রাস্তায় জায়গায় জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকেন পাহাড়ি মানুষেরা। কেউ ফুল নিয়ে, কেউ খাদা নিয়ে স্বাগত জানান তাঁকে। মমতাও তাঁদের দেখে দাঁড়ান। গাড়ি থেকে মুখ বাড়িয়ে কথা বলেন। জানতে চান, কী খবর? এ দিন সেই উচ্ছ্বাসই বেরিয়ে পড়ছিল বারবার। বিশেষ করে পাহাড়ি মেয়েদের মধ্যে। কেউ নাকে নথ, খোপায় ফুল গুঁজে চলে এসেছেন দিদিকে স্বাগত জানাতে। কেউ আবার টপ-জিনসে। তাঁদের কেউ মুখ্যমন্ত্রীকে দেখে হাত নাড়তে এতটাই ব্যস্ত হয়ে পড়লেন যে, অন্য হাতে ধরে রাখা ফুলের কথা ভুলে গেলেন। কেউ বা দু’হাত দিয়ে ফুল ছিটিয়ে দিলেন গাড়িতে। মেয়ে-পুরুষ নির্বিশেষে অনেকেই আবার রাস্তার পাশে গিটার নিয়ে ভিড় জমিয়েছেন। কেউ কেউ আবার দলবল নিয়ে হাততালি দিয়ে নেপালি গান গেয়ে গিয়েছেন সমানে।

এঁদের মধ্যেই কেউ কেউ চিৎকার করে ধন্যবাদ দিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। যার জবাবে তিনি বললেন, ‘‘সবাই ভাল থাকুন। হাসি-খুশি থাকুন। আপনাদেরও ধন্যবাদ।’’ বললেন, ‘‘এমন হাসিখুশি পাহাড়ই আমি পছন্দ করি। পাহাড় হাসিখুশিই থাকবে।’’

বাগডোগরা থেকে ৭০ কিলোমিটার রাস্তা পেরিয়ে কালিম্পঙে যখন পৌঁছলেন মুখ্যমন্ত্রী, তখন সন্ধ্যা হয়ে গিয়েছে। পাহাড়ের এই শহরে এলে সাধারণত তিনি ডেলো বাংলোয় থাকেন। তাঁর কনভয় সোজা সেখানেই চলে গেল। আজ, মঙ্গলবার সেখান থেকে কালিম্পঙের মেলার মাঠে আসবেন তিনি, জেলা ঘোষণার অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। দুপুর দু’টোয় সরকারি সভা। অনুষ্ঠান হয়ে গেলে বিকেল সাড়ে তিনটে থেকে সাংস্কৃতিক উৎসব। যে উৎসবের আয়োজন হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রীরই নির্দেশে।

মঙ্গলবার অনুষ্ঠান মঞ্চে কালিম্পঙের পাঁচ জন বিশিষ্টকে সম্মান জানাবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই তালিকায় রয়েছেন মুম্বইয়ের জনপ্রিয় সঙ্গীত শিল্পী উদিত নারায়ণের স্ত্রী দীপা নারায়ণ। দীপা কালিম্পঙেরই মেয়ে। যথেষ্ট পরিচিত শিল্পী। অন্যান্য ক্ষেত্রে অবদানের জন্য কালিম্পঙের নবীন-প্রবীণ নানা ব্যক্তিত্বকে বাছা হয়েছে। প্রবীণ সংবাদকর্মীদেরও সংবর্ধনা জানানো হবে। শুধু পাহাড় নয় সংবর্ধনা প্রাপকদের মধ্যে সমতলের প্রতিনিধিরাও রয়েছে।

তবে সকলের নজর থাকবে প্রশাসনিক ঘোষণার দিকে। মমতার সঙ্গে সফরে এসেছেন পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস, পর্যটন প্রতিমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেনরাও কালিম্পঙে এসেছেন। রয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ পুরকায়স্থ-সহ অন্য আধিকারিকেরা। মঙ্গলবারের অনুষ্ঠানে থাকবেন দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তবও। সেই মঞ্চ থেকেই নতুন জেলার জেলাশাসক ও জেলা পুলিশ সুপারের নাম ঘোষণা করা হবে। এবং জেলার প্রশাসনিক কাজকর্মও পুরোদস্তুর শুরু হয়ে যাবে।

আগামী বুধবার টাউন হলে পাহাড়ে গঠিত হওয়া সব বোর্ডের প্রতিনিধিদের নিয়ে সভা করবেন মুখ্যমন্ত্রী। নিয়ম করে প্রতিটি ঘরোয়া এবং প্রকাশ্য সভায় রাজ্যের বিরুদ্ধে বোর্ড গড়া নিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছেন মোর্চা প্রধান বিমল গুরুঙ্গ। মনে করা হচ্ছে, গুরুঙ্গের আক্রমণে যে রাজ্য বিন্দুমাত্র বিচলিত নয়, সেটা বোঝাতেই বোর্ড নিয়ে বৈঠক। চাপ আরও বাড়াতে বুধবারের ওই সভায় বোর্ডগুলিকে নতুন বরাদ্দ বা ঘোষণার চমকও থাকতে পারে বলে পাহাড়ের তৃণমূল নেতাদের একাংশের দাবি।

Mamata Banerjee CM Thank You
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy