Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
kerala

Mamata Hansda: জাতীয় শিবিরে জঙ্গলমহলের লড়াকু মমতা

ছোটবেলায় পাড়ার দাদাদের সঙ্গে খেলা শুরু। বাবা কুনার হাঁসদা দিনমজুরি করতেন।

বাড়ির সামনে মমতা। নিজস্ব চিত্র

বাড়ির সামনে মমতা। নিজস্ব চিত্র

সৌমেশ্বর মণ্ডল
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:০৯
Share: Save:

লাখ টাকার স্বপ্ন নয়। হাজারো দর্শকের সামনে দেশের হয়ে খেলছেন, এমন স্বপ্নই দেখেছিলেন মমতা।

ঝাড়গ্রামের কেশিয়াপাতা রাঙাডিহার মেয়ে মমতা হাঁসদা। মাটির এক চিলতে ঘর। খড়ের চাল। এই বাড়িতে বাবার পাশে শুয়ে ছোট্ট মমতা নিজের স্বপ্ন স্পষ্ট করেছিল। তা পূরণ হতে আর এক ধাপ বাকি। অল ইন্ডিয়া ফুটবল ফেডারেশন (এআইএফএফ) কেরলে মেয়েদের জাতীয় দলের বাছাই শিবির করছে। এই শিবিরে ডাক পেয়েছেন মমতা।

ছোটবেলায় পাড়ার দাদাদের সঙ্গে খেলা শুরু। বাবা কুনার হাঁসদা দিনমজুরি করতেন। মা কণিকা কেশিয়াপাতা পঞ্চায়েত অফিসে চা-জল দেওয়ার কাজ করেন। তিন মেয়ে, এক ছেলে নিয়ে সংসার সামলাতে হিমসিম খেতেন বাবা। তবে ফুটবল ছাড়েননি মমতা। কেশিয়াপাতা জিএম হাইস্কুলের ছাত্রীটি স্কুলের দলে জোর কদমে ফুটবল খেলা শুরু করেন। ২০১২ সালে তাঁরা বাবা মারা যান। বিপর্যয়ের মধ্যেও খেলায় একাগ্র ছিলেন। পান্তা ভাত খেয়ে স্কুলে যেতেন। বাড়ি ফিরে মুড়ি খেয়ে
মাঠে ছুট।

আর্থিক সমস্যা বড় বাধা। অনুশীলনের সমস্যাও কম নয়। জঙ্গল পরিষ্কার করে ছোট্ট জায়গাতেই প্রশিক্ষণ চলে। মমতার প্রশিক্ষক অশোক সিংহ খেলার সামগ্রী, পুষ্টিকর খাবার দিয়ে সাহায্য করেছেন। নভেম্বরে কেরলে জাতীয় প্রতিযোগিতায় নির্বাচকদের নজরে পড়েন মমতা। প্রশিক্ষক অশোক বলেন, ‘‘এআইএফএফ থেকে মমতাকে ফোন করেছিল। বাড়ির কাছাকাছি বড় রেল স্টেশন, কাছাকাছি বিমানবন্দরের নাম জিজ্ঞাসা করেছেন। শীঘ্রই মেল পাঠাবেন বলে জানিয়েছে।’’ আইএফএ সভাপতি অজিত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ওরা (এআইএফএফ) আমাদের কোচ দোলা মুখোপাধ্যায়কে বলেছিল। তবে অফিশিয়াল চিঠি এখনও আসেনি।’’ মমতা বলছেন, ‘‘নিজের সেরাটা দিয়ে প্রথম একাদশে থাকার চেষ্টা করব। জাতীয় দলের জার্সি পেলে আমার এতদিনের লড়াই সম্পূর্ণ হবে।’’ মমতার মা-র কথায়, ‘‘ভাল লাগছে। ও যদি দেশের হয়ে খেলে আরও ভাল লাগবে।’’

মমতাকে বাড়ি গিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছেন স্থানীয় বিধায়ক খগেন্দ্রনাথ মাহাতো। বিধায়ক বলেন, ‘‘মমতা আমাদের জঙ্গলমহলের গর্ব। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে অভিনন্দন জানিয়েছি।’’ বিধায়ক সমস্যার কথা জানতে চেয়েছিলেন। বাড়িতে বহু অভাব। মমতা কিন্তু বলেছেন, ‘‘আমাদের খেলার মাঠ নেই। জঙ্গলের মধ্যে ছোট্ট জায়গায় খেলি। ভাল মাঠ হলে সবাই আরও ভাল কিছু করতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

kerala football midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE