দৌড়: চিঠি দিতে দৌড়চ্ছিলেন রাজেনবাবু। তাঁর হাত থেকে চিঠি নিয়ে নিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। নিজস্ব চিত্র
এলাকায় নেই পানীয় জলের ব্যবস্থা। নেই রাস্তা। নেই কোনও নিকাশি ব্যবস্থারও।
স্থানীয় পঞ্চায়েতও ঠিকমত কাজ করেনি বলে অভিযোগ। তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হওয়ার কথা ভেবেছিলেন জলপাইগুড়ির পাহাড়পুরের বর্ষীয়ান তৃণমূল কর্মী রাজেন রায়।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি থেকে চ্যাংরাবান্ধা যাওয়ার কথা ছিল মুখ্যমন্ত্রীর। সে কথা জানতে পেরে এ দিন বেলা ১১টা থেকেই জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন গোশালা মোড়ে আসেন রাজেনবাবু। তার সঙ্গে ছিলেন এলাকার ২০-২৫ জন বাসিন্দাও। সকলের হাতেই ছিল দলীয় পতাকা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে ভিড় জমিয়েছিলেন কয়েকশো বাসিন্দা। মুখ্যমন্ত্রীর কনভয় গোশালা মোড়ে এসেই গতি কমিয়ে দেয়। তখন পুলিশের নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেদ করে দৌড়ে যান রাজেন রায়। পুলিশ বাধা দেওয়ার সুযোগই পায়নি। মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির পিছন পিছন ছুটতে ছুটতে চিঠিটি বাড়িয়ে দেন জানালা দিয়ে। হাত বাড়িয়ে চিঠিটি নিয়েও নেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজেনবাবুর বিশ্বাস, চিঠিটি যখন দলনেত্রীর হাতে পৌঁছেছে তখন সমস্যার সমাধান হবেই।
তাঁর মুখ থেকেই জানা গেল পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বেহাল দুর্দশার কথা। পরিস্রুত পানীয় জল নেই। নেই নিকাশি ব্যবস্থাও। বৃষ্টির সময় জল জমে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে এলাকা। একটি পাকা রাস্তা ছাড়া বাকি সব রাস্তাই কাঁচা, বেহাল।
রাজেনবাবুর অভিযোগ, শুধু স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত নয়, সদর বিডিও অফিসে একাধিকবার জানিয়েও লাভ হয়নি। তাই গতকাল যখন জানতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী এই রাস্তা দিয়ে চ্যাংড়াবান্ধা যাবেন, তখনই চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। রাত জেগে এলাকার সমস্যার কথা তুলে ধরে সেই চিঠি লেখেন। আজ সেই চিঠি মুখ্যমন্ত্রী অবধি পৌছে দিতে পেরে তিনি নিশ্চিন্ত।
যদিও এই ঘটনা দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। কারণ বিগত পাঁচবছর পাহাড়পুর পঞ্চায়েত তৃণমূলের দখলেই ছিল। এ বারও তৃণমূলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে সেখানে। অস্বস্তি আরও বাড়িয়েছেন পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান রাহেনা খাতুন নিজেই। তাঁর বক্তব্য, ‘‘দলের কোনও নেতাই রাজেনবাবুকে উস্কে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন। না হলে একজন সাধারণ কর্মীর মুখ্যমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার সাহস হত না।’’ প্রধানের দাবি,চলতি বছরেই প্রতিটি বুথে ১২টি করে কুয়ো দেওয়া হয়েছে। কিছু রাস্তা তৈরি হয়েছে,আর কিছু তৈরি করা হচ্ছে।
এ দিকে রাজেনবাবুর হঠাৎ মুখ্যমন্ত্রীর গাড়ির দিকে ছুটে যাওয়া নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এর আগে দক্ষিণবঙ্গে নিরাপত্তা বেষ্টনী ভেঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর মঞ্চে উঠেছিলেন দুই বোন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy