ফাইল চিত্র।
সাত বারের কংগ্রেস বিধায়ক মানস ভুঁইয়া সোমবার দলের পরিষদীয় কক্ষে বসার জায়গা পাওয়া তো দূরের কথা, ঘরে ঢুকতেই পারলেন না! বিধানসভার লবিতেই সময় কাটালেন।
কংগ্রেসে ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য দিগ্বিজয় সিংহ এ দিন ব্যক্তিগত কাজে কলকাতায় এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে দেখা করে মানসবাবু এই অসহায় পরিস্থিতির কথা জানান। মানসবাবুর দাবি, ‘‘দিগ্বিজয় বলেছেন, তোমার প্রতি যা হচ্ছে তা কাঙ্খিত নয়। পুরো বিষয়টি হাইকম্যান্ডকে জানাব।’’ আজ, মঙ্গলবার তিনি বিষয়টি স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানাবেন। কারণ, গোটা বিধানসভা ভবনই স্পিকারের এক্তিয়ার ভুক্ত।
এ দিন রাজ্যের নাম পরিবর্তন ও ডেঙ্গি নিয়ে বিধানসভায় আলোচনা ছিল। সভায় মধ্যে মানসবাবু তাঁর নিজের চেয়ারে কংগ্রেসের বিধায়কদের পাশে বসলেও পরিষদীয় ঘরের দিকে যাননি। শুক্রবারই দল তাঁকে সাসপেন্ড করার সুপারিশ করেছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর পাঠানো সেই চিঠি এখন দিল্লিতে এআইসিসি-র কাছে। সরকারি ভাবে এখনও দল থেকে সাসপেন্ড না করলেও পরিষদীয় দলনেতা আব্দুল মান্নান ঘোযণা করেছেন, মানসবাবুকে বিধায়কেরা ‘বয়কট’ করবেন। এমনকী, মানসবাবু পরিষদীয় ঘরে প্রবেশ করলে তাঁর কোনও দায়িত্বও মান্নান নিতে পারবেন না। কোনও কংগ্রেস বিধায়ককে এ দিন মানসবাবুর সঙ্গে কথা বলতেও দেখা যায়নি। বস্তুত, তাঁকে একঘরে করে ফেলার যে প্রচেষ্টা অধীর-মান্নানরা করছিলেন, প্রাথমিক ভাবে তা সফল।
দলের শাস্তির মুখে পড়ায় এ দিন মানসবাবু আলোচনায় অংশ নিতে পারেননি। অন্য দিকে, কংগ্রেসের হুইপও অমান্য করেননি। রাজ্যের নাম পরিবর্তন নিয়ে কংগ্রেস ওয়াক-আউট করে বেরিয়ে গেলেও মানসবাবু কিছুক্ষণ বসে থাকেন। কিন্তু তার পরে তিনিও ওয়াক-আউট করেন। কিছু ক্ষণ পরে ফিরে এসেও আবার সভার বাইরে চলে যান। তাঁর কথায়, ‘‘সারা দিনের ওয়াক-আউট ছিল না। তাই সভায় প্রবেশ করেছিলাম। যখন দেখলাম কংগ্রেসের কেউ নেই, আবার বেরিয়ে যাই।’’
ডেঙ্গি নিয়েও তিনি মান্নানের আনা প্রস্তাবের পক্ষেই ভোট দেন। এ সব দেখে শাসক দলের এক বর্ষীয়ান মন্ত্রীর মন্তব্য, ‘‘মানস সংসদীয় রীতি মেনে চলছেন। যাতে আরও শাস্তির মুখে না পড়েন।’’ সাংবাদিক বৈঠক ডেকে অবশ্য মানসবাবু রাজ্যের নাম পরিবর্তন ও কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে সমর্থন করেন। ডেঙ্গি নিয়ে সরকারকে কিছু পরামর্শ দেন। মুখ্যমন্ত্রীও নাম পরিবর্তন নিয়ে মানসবাবুকে তাঁর সহকর্মীদের বোঝানোর পরামর্শ দেন। সেই সঙ্গে চিকিৎসক হিসাবে ডেঙ্গি নিয়ে তাঁর মতামত চান। কিন্তু দলের কোপের কারণে সভায় মানসবাবু মুখই খুলতে পারেননি। ঘনিষ্ঠ মহলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘মানসদা’র প্রতি যা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। কিন্তু উনি বিরোধী দলের সদস্য। আমার কিছুই করার নেই!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy