ফাইল চিত্র।
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় স্কুল পরিদর্শনের উপরে বিশেষ ভাবে জোর দিচ্ছেন। কিন্তু স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে পরিদর্শক দেখছেন, তাঁর পরামর্শ লিখে জানানোর নির্দিষ্ট ‘ইনস্পেকশন রেজিস্টার’ই নেই! একটি-দু’টি স্কুলে নয়, এমন ঘটনা রাজ্যের বেশ কিছু স্কুলেই ঘটছে বলে বিকাশ ভবন সূত্রের খবর। এই অবস্থায় কলকাতা জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানিয়ে দিয়েছেন, স্কুলে অবশ্যই এই রেজিস্টার রাখতে হবে।
স্কুল পরিদর্শনে গুরুত্ব দেওয়ার কারণ হিসেবে শিক্ষামন্ত্রীর যুক্তি, ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে সরকার অনেক প্রকল্প চালু করেছে। কিন্তু পড়ুয়ারা তার ফল আদৌ পাচ্ছে কি না, সেটা দেখা দরকার। এর জন্য শুধু পুরনো তালিকা দেখে কাজ না-করে সব জায়গায় গিয়ে পরিদর্শন প্রয়োজন।
পরিদর্শনের জন্য অগস্টে স্কুলশিক্ষার কমিশনার, যুগ্মসচিব পদমর্যাদার বেশ কিছু অফিসার ও কমিশনারেটের আধিকারিকদের মধ্যে জেলা ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল। সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন স্কুলশিক্ষা সচিব। তার পরে নজিরবিহীন ভাবে স্কুলশিক্ষা সচিব থেকে স্কুলশিক্ষা দফতরের সব আধিকারিককে নিয়মিত স্কুল পরিদর্শনের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। সেই অনুযায়ী সম্প্রতি সচিব কলকাতার বেশ কিছু স্কুল পরিদর্শনও করেছেন।
বিকাশ ভবনের এক কর্তা জানান, পরিদর্শনে গিয়ে আধিকারিকেরা ‘ইনস্পেকশন রেজিস্টার’ বা ‘ভিজিট বুক’-এ মতামত লিখে থাকেন। স্কুলের পরিকাঠামো-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কোথায় কতটা খামতি রয়েছে, স্কুলের উন্নতিতে কোন কোন বিষয়ে মন দেওয়া উচিত— সবই লিখে জানানোর কথা। যাতে পরবর্তী কালে স্কুলগুলি সেই পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে পারে। কিন্তু পরিদর্শক তাঁর পর্যবেক্ষণ ও পরামর্শ লিখবেন কোথায়? রেজিস্টারই যে নেই বহু জায়গায়। আগে যাঁরা পরিদর্শন করে পরামর্শ দিয়েছিলেন, নতুন পরিদর্শকেরা স্কুলে গিয়ে তার লিখিত প্রমাণ কিছুই পাচ্ছেন না। অথচ স্কুলের পরিকাঠামো, মিড-ডে মিল, কন্যাশ্রী প্রকল্পের অগ্রগতি-সহ সব বিষয়েই পরিদর্শকের লিখিত মন্তব্য থাকার কথা ওই রেজিস্টারে। নতুন পরিদর্শকেরা আগের সেই নথি তো পাচ্ছেনই না। নিজেরাও যে লিখে আসবেন, রেজিস্টার না-থাকায় তা-ও সম্ভব হচ্ছে না। এই সমস্যা রয়েছে মূলত উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক এবং উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে। তাই রেজিস্টার রাখার জন্য নতুন নির্দেশ দিতে হয়েছে। বিকাশ ভবনের খবর, শুরু হল কলকাতায়। এর পরে সব জেলা পরিদর্শকই এমন নির্দেশ দেবেন।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, হালে স্কুল পরিদর্শনকে এত গুরুত্ব দিচ্ছে রাজ্য সরকার। আগে তো বছরের পর বছর পরিদর্শনই হত না। তাই স্কুলগুলিতে এই সব রেজিস্টারের বালাই ছিল না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy