E-Paper

নাম দিয়েও মাধ্যমিকে নেই, ওরা কি স্কুলছুট

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, চলতি বছরে মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কেন কমল তা নিয়ে সমীক্ষা করবে স্কুলশিক্ষা দফতর।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩২
Picture of students.

নবম শ্রেণিতে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ‘রেজিস্ট্রেশন’ বা নাম নথিভুক্ত করা পড়ুয়ার সংখ্যার থেকেও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এ বার দু’লক্ষ কম। ফাইল চিত্র।

মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ঘোষণা অনুযায়ী গত বছরের তুলনায় এ বার মাধ্যমিকে চার লক্ষাধিক পরীক্ষার্থী কমেছে। নিবিড় পরিসংখ্যান বলছে, নবম শ্রেণিতে মাধ্যমিক পরীক্ষার জন্য ‘রেজিস্ট্রেশন’ বা নাম নথিভুক্ত করা পড়ুয়ার সংখ্যার থেকেও মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী এ বার দু’লক্ষ কম। এই দু’লক্ষ শিক্ষার্থী কোথায় গেল, শিক্ষক শিবির তা নিয়ে দুর্ভাবনায় পড়েছে। এক পর্ষদকর্তা বলেন, ‘‘ড্রপ আউট বা স্কুলছুট কেউ হয়নি। এ বার অনেক ছাত্রছাত্রী যে টেস্টে উত্তীর্ণ হতে পারেনি, সেটাও মনে রাখতে হবে।’’ বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ, এই দু’লক্ষের অধিকাংশই ড্রপ আউট।

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে জানান, চলতি বছরে মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা কেন কমল তা নিয়ে সমীক্ষা করবে স্কুলশিক্ষা দফতর। নবম শ্রেণিতে নাম নথিভুক্তির পরেও কেন বহু পড়ুয়া মাধ্যমিকে বসার ফর্ম পূরণ করল না, তার কারণ জানতেই সমীক্ষা করা হবে। শিক্ষামন্ত্রী জানান, দফতরের পক্ষ থেকে কোনও সরকারি সংস্থাকে দিয়ে এই সমীক্ষা করানো হবে। ওই পড়ুয়াদের মধ্যে কেউ যদি পরীক্ষা দিতে চায়, সেটা মধ্যশিক্ষা পর্ষদকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।

চার লক্ষেরও বেশি পরীক্ষার্থী কমে যাওয়ার ব্যাপারে পর্ষদের ব্যাখ্যা, ২০১৭ সালে ষষ্ঠ শ্রেণিতে বয়সের কারণে অনেকে ভর্তি হতে না-পারায় এবং করোনাকালে শ্রেণিকক্ষের শিক্ষার অভাবে প্রস্তুতি ঠিকমতো না-হওয়ায় কমেছে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা।

কিন্তু নাম নথিভুক্ত করিয়েও অনেকে পরীক্ষা দিচ্ছে না কেন? অ্যাডভান্স সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স অ্যান্ড হেডমিস্ট্রেসেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক চন্দন মাইতি বলেন, ‘‘নাম নথিভুক্ত করেও যে-দু’লক্ষ ছাত্রছাত্রী মাধ্যমিক দিচ্ছে না, তাদের অধিকাংশই স্কুলছুট। করোনার প্রকোপে গ্রামের বহু ছেলেমেয়ের পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ হয়েছে। অনেকে কাজে চলে গিয়েছে।’’ চন্দনের অভিযোগ, নানান প্রকল্প চললেও বহু স্কুলে লেখাপড়ার পরিকাঠামোই নেই। স্কুল পরিকাঠামোর উন্নয়নে অর্থ বরাদ্দ হচ্ছে না। দেওয়াল চাপা পড়ে পড়ুয়াদের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে।

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা অনিমেষ হালদারের অভিযোগ, ‘‘সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা দিতেই ব্যস্ত। তার চেয়ে শিক্ষক নিয়োগের উপরে জোর দিলে ভাল হত। এ বার মাধ্যমিকে ছেলেদের তুলনায় মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা যে বেশি, তার অন্যতম প্রধান কারণ কন্যাশ্রী প্রকল্প। ওই প্রকল্পের সুবিধা পেতে অনেক মেয়ে ১৮ বছর বয়স পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।’’

মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের নিরাপত্তার খাতিরে প্রথম দিন থেকেই অভিভাবকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে পর্ষদ। কেন্দ্রের ভিতরে পুলিশ থাকবে। মোবাইল বন্ধ রেখে নজরদারি চালাবে তারা। সিসি ক্যামেরা থাকবে কেন্দ্রের গেটে ও স্কুলের করিডরে। শৌচালয়ে আলাদা নজরদারির ব্যবস্থা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Madhyamik examination Students

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy