প্রতীকী ছবি
করোনা রুখতে জীবাণুনাশক হিসেবে নির্বিচারে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দ্রবণ ব্যবহার করলে তা মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গের তো বটেই, বায়ুমণ্ডল-সহ পরিবেশেরও ক্ষতি করতে পারে। এই বিষয়ে ‘এরোসল অ্যান্ড এয়ার কোয়ালিটি রিসার্চ’ নামে একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে।
ওই গবেষণাপত্রের লেখক, কলকাতার বোস ইনস্টিটিউটের পরিবেশবিজ্ঞানী অভিজিৎ চট্টোপাধ্যায় জানান, হাইপোক্লোরাইট দ্রবণ নির্বিচারে ব্যবহার করলে বাতাসে এরোসলের মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। ক্ষতি হতে পারে ওজ়োন স্তরের। সেই সঙ্গে এই দ্রবণ কিডনি, ত্বক ও রক্তনালির ক্ষতি করতে পারে।
করোনা-আতঙ্কের শুরুতেই জলে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট মিশিয়ে তা দিয়ে জীবাণু ধ্বংসের কাজ চালানো হচ্ছিল। এই রাসায়নিক ব্যবহার নিয়ে বিতর্ক শুরু হতেই সরকারি সংস্থাগুলি বিকল্প রাসায়নিক ব্যবহারের কথা জানিয়েছে। কিন্তু অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এখনও সেই স্যানিটাইজ় টানেলে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ। পরিবেশবিদদের অনেকে বলছেন, জলের পরিমাণের তুলনায় এক শতাংশ হারে এই রাসায়নিক মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু অভিজিৎবাবুর প্রশ্ন, কত পরিমাণ জলে কত পরিমাণে সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট মেশানো হচ্ছে, সেটা দেখার লোক কোথায়?
অভিজিৎবাবুর গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, সোডিয়াম হাইপোক্লোরাইট দ্রবণ থেকে রাসায়নিক ভাবে অতিসক্রিয় ক্লোরিন (ক্লোরিন র্যাডিক্যাল) তৈরি করে। সেই ক্লোরিন বাতাসের হাইড্রোকার্বনের সঙ্গে বিক্রিয়া করে ভাসমান কণা তৈরি করে, যা পরিবেশের পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর। তা ওজ়োন স্তরের ক্ষতি করতে পারে। ক্লোরিন র্যাডিক্যাল বাতাসের সালফার ডাই-অক্সাইড গ্যাসকে এরোসলে পরিণত করে। তাতেও পরিবেশের ভারসাম্য ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর পাশাপাশি ক্লোরিন গ্যাস শরীরে ঢুকে রক্তনালি, শ্বাসনালি, মূত্রনালি, কিডনির
অসুখ বাধিয়ে দিতে পারে। তিনি বলেন, ‘‘রোদে এই দ্রবণ ছিটোলে তা বেশি ক্ষতি করে। সূর্যের তাপে দ্রবণ দ্রুত ভেঙে গিয়ে ক্ষতিকর রাসায়নিক উৎপন্ন করে।’’ তাঁর পরামর্শ, মানবশরীরে তো বটেই, যে-কোনও জায়গাতেই এই দ্রবণ ব্যবহার বন্ধ করা উচিত। একান্ত প্রয়োজনে সূর্যাস্তের পরে ছিটোনো যেতে পারে। সে-ক্ষেত্রেও জনস্বাস্থ্য রক্ষায় সচেতনতার ব্যবস্থা করে এবং বিশেষজ্ঞদলের নজরদারিতে তা ব্যবহার করতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy