বিদ্যুতের তার লাগানো হচ্ছে। নিজস্ব চিত্র।
সন্ধ্যা নামে। উজ্জ্বল হতে থাকে বন্দরে বিশ্রাম নেওয়া জাহাজগুলোর ডিজিটাল আলো। আর শিল্পশহরেরই দুই এলাকার বাড়ি বাড়ি জ্বলে ওঠে হারিকেন। দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালন করছে। কিন্তু এই দু’টো এলাকা এখনও বিদ্যুতের আলোর পরশ পায়নি।
শিল্পশহর হলদিয়ার দু’টি গ্রাম, বিষ্ণুরাম চক ও সাওতান চক। গ্রাম বলে উল্লেখ করা হলেও এই দুই চক কিন্তু হলদিয়া পুর এলাকার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের। এলাকা দু’টো থেকে শিল্পশহর দুই থেকে আড়াই কিলোমিটারের মধ্যে। পুর এলাকার জনপদ হলেও সর্বাঙ্গে তার গ্রামের পরশ। এমনকি সন্ধ্যায় বাড়ি বাড়ি হারিকেন জ্বলে। তবে অনেক বাড়িতেই মোবাইল চার্জ, টিভি চালানোর জন্য রয়েছে বিকল্প সোলার লাইট।
বিষ্ণুরাম চক ও সাওতান চকে সম্প্রতি বিদ্যুতের আলোর আশা দেখা দিয়েছে। চলছে বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ। বিদ্যুৎ পেতে ৫০০টি পরিবার আবেদন করেছেন। এলাকায় ক্যাম্প করে আবেদন নেওয়া হয়েছে। শনিবার এলাকায় দেখা গেল, জোর কদমে চলছে কাজ। বিদ্যুৎ দফতরের পদস্থ কর্তারা এলাকায় যাতায়াত করছেন ঘনঘন। ইতিমধ্যেই ৩৫০টি বিদ্যুতের খুঁটি পড়েছে। বসছে ২২টি ট্রান্সফরমার। ব্যয় হচ্ছে তিন কোটি টাকা। নতুন বছরেই মিলবে বিদ্যুৎ, আশা দুই চকের বাসিন্দাদের।
সম্প্রতি মাখনবাবুর বাজারে চা দোকানে এসেছিলেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তাঁকে স্থানীয়েরা বিদ্যুৎ না পাওয়ার বিষয়টি বলেন। কুণাল নিজেই গ্রামে যান। সেখান থেকেই তিনি বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসকে বিষয়টি জানান। বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীরা পরের দিন গ্রামে আসেন। সমীক্ষা হয় দ্রুত। ক্যাম্প করে বিদ্যুতের জন্য আবেদন নেওয়া হয়।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই দু’টি গ্রাম ষাটের দশকের শুরুতেই অধিগ্রহণ হয়। জমির মালিকানা বন্দরের। পুনর্বাসন সংক্রান্ত বিবাদ থেকেই বিষয়টি আদালতে গড়ায়। গ্রামবাসীদের একাংশ থেকে যান। নতুন করে বসতিও গড়ে ওঠে। কিন্তু বন্দর পানীয় জল পেতে বাধা না দিলেও বিদ্যুৎ সংযোগের অনুমতি দেয়নি। বন্দরের তরফে প্রশাসনিক ম্যানেজার প্রবীণ দাস বলেন, ‘‘বিদ্যুতের বিষয়ে প্রথাগত ভাবে বন্দরের কাছে কোনও আবেদন করা হয়নি। নেওয়া হয়নি অনুমতি। প্রশাসনিক ভাবে বিষয়টি জানানো হয়েছে।’’ বন্দর সূত্রে খবর, ওই এলাকা দিয়ে অতি দাহ্য পদার্থের একটি পাইপ লাইন গিয়েছে। বিষয়টি নিরাপত্তার দিক থেকেও ঝুঁকিপূর্ণ।
বিদ্যুৎ সংযোগের বিষয়টি তদারকি করছেন প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান দেবপ্রসাদ মণ্ডল। দেবপ্রসাদ বলেন, ‘‘জল ও বিদ্যুতের অধিকার মানুষের হক। আইন মেনে নতুন বছরে আলো জ্বলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy