E-Paper

মিছিলে কি টেক্কা ঘাসফুলের! চর্চা

সোমবার ছিল মনোনয়নের শেষ দিন। শেষ দিনেই মনোনয়ন করেছেন জুন। গত শুক্রবার মনোনয়ন করেছেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০২৪ ০৮:৩২
মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছেন জুন মালিয়া। রয়েছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা ও চন্দ্রিমা ভট্টচার্য।

মনোনয়ন জমা দিতে যাচ্ছেন জুন মালিয়া। রয়েছেন মন্ত্রী শশী পাঁজা ও চন্দ্রিমা ভট্টচার্য। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডলয়।

মনোনয়নের মিছিলের ভিড়ে কিংবা জোশে কে টেক্কা দিল! বিজেপি, না তৃণমূল? সোমবার দুপুরের পর থেকে চর্চা শুরু হয়েছে শহর মেদিনীপুরে। গেরুয়া শিবিরের দাবি ছিল, তাদের মিছিলে ১৫ হাজার লোক হেঁটেছেন। ঘাসফুল শিবির দাবি করেছে, তাদের মিছিলে ২০ হাজার লোক হেঁটেছেন। মেদিনীপুরের তৃণমূল প্রার্থী জুন মালিয়া বলছেন, ‘‘এটা কোনও প্রতিযোগিতা নয়। আমাদের মিছিল যেটা (ভিড়) দেখলেন, পুরো শহর যেটা দেখল, সেটা হচ্ছে আমাদের কর্মীদের আবেগ, ভালবাসা, স্বত:স্ফূর্ততা।’’

সোমবার ছিল মনোনয়নের শেষ দিন। শেষ দিনেই মনোনয়ন করেছেন জুন। গত শুক্রবার মনোনয়ন করেছেন বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল। মনোনয়ন উপলক্ষে সেদিনও মেদিনীপুরে মিছিল হয়েছিল। মিছিলে শামিল হয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, ১৫ হাজার লোক হেঁটেছেন মিছিলে। সোমবারও মিছিল হয়েছে। মিছিলে শামিল হয়েছেন দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শশী পাঁজা। বিজেপির মিছিল শুরু হয়েছিল অরবিন্দনগরের মাঠ থেকে। তৃণমূলের মিছিল শুরু হয়েছে কলেজ- কলেজিয়েট স্কুলের মাঠ থেকে। ভিড়ের নিরিখে গেরুয়া শিবিরকে টেক্কা দিতে চেয়েছিল ঘাসফুল শিবির। শনিবার থেকে শুরু হয়েছিল সেই প্রস্তুতি। সোমবার মেদিনীপুরে বর্ণাঢ্য মিছিলই হয়েছে। মিছিলের পথের দু’ধার দলের পতাকা, ফ্লেক্স, ফেস্টুনে ছয়লাপ করে দিয়েছিলেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা।

রাজনৈতিক মহলের মতে, মনোনয়নের মিছিল ভাল হলে, প্রচারে খানিকটা এগিয়ে থাকা যায়, এমনটাই মনে করেন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের অনেকে। ‘লড়াই’ সেখান থেকেই! জুনের মনোনয়নের মিছিলে থাকতে এ দিন সকালেই কলকাতা থেকে মেদিনীপুরে পৌঁছন দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং শশী পাঁজা। চন্দ্রিমা মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সভানেত্রীও। মিছিলে ছিলেন দলের রাজ্য সম্পাদক প্রদ্যোত ঘোষ, জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়, জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা প্রমুখ। ছিলেন বিধায়কেরা, দলের ব্লক সভাপতিরা। যেন বিজয় উৎসবই হল, মিছিলের চেহারা- সাজগোজ দেখে মনে হয়েছে মন্ত্রী চন্দ্রিমার। তাঁর কথায়, ‘‘মিছিল ঘিরে কর্মীদের উৎসাহ তো ছিলই, মেদিনীপুরবাসীর উৎসাহও ছিল। জুন মালিয়া বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে মেদিনীপুর থেকে, এটা শুধু সময়ের অপেক্ষাই।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘মিছিল এর প্রমাণ। আশেপাশের মানুষ প্রমাণ। এত উৎসাহ। নাচতে নাচতে সবাই এল। একটা উৎসব যেন হল। যেন বিজয় উৎসব হল।’’ মন্ত্রী শশী বলছিলেন, ‘‘বাংলা বিরোধী যারা আছে, যারা বাংলাকে বঞ্চনা করেছে, বাংলার টাকা আটকেছে, তাদের বিরুদ্ধে মানুষ রুখে দাঁড়িয়েছে।’’ তাঁর টিপ্পনী, ‘‘দিলীপ ঘোষকে বদল করেছে (মেদিনীপুর থেকে সরিয়েছে)। বদল করে ওরা (বিজেপি) নিজেরাই দেখিয়ে দিয়েছে, ওরা এখানে হেরে বসে আছে!’’ তৃণমূল প্রার্থী জুন বলছেন, ‘‘আমরা সবাই যে একটা পরিবার, শক্ত পরিবার, সেটা মেদিনীপুরবাসী দেখলেন। আমার মনোনয়নে দুই মন্ত্রী এসেছেন কলকাতা থেকে। চন্দ্রিমাদি, শশীদি এসেছেন। বিধায়কেরা ছিলেন। ব্লক সভাপতিরা ছিলেন। প্রদ্যোতদার মতো সিনিয়র নেতারা ছিলেন। আবেগ, ভালবাসা, স্বত:স্ফূর্ততা। মন থেকে কর্মীরা এসেছেন মিছিলে।’’

তৃণমূলের মিছিলে কত লোক হয়েছে, সে নিয়ে কাটাছেঁড়ায় যেতেই রাজি নয় গেরুয়া শিবির। জেলা বিজেপির মুখপাত্র অরূপ দাস বলেন, ‘‘ওদের মিছিলে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের অনেকেই বিজেপির ভোটার! ২০১৯- এও ওরা এমন মিছিল করেছিল। ভোটের ফল কী হয়েছিল? সবাই জানেন। বিজেপি ৮৭ হাজার ভোটে জিতেছিল। অর্থাৎ, এটা প্রমাণিত, যাঁরা ওদের মিছিলে হাঁটেন, তাঁদের অনেকে মন থেকে হাঁটেন না। তাঁদের হাঁটতে বাধ্য করা হয়!’’ বিজেপি কি এগিয়ে জোশে, তৃণমূল কি এগিয়ে ভিড়ে, চর্চা শুরু হয়েছে শহর মেদিনীপুরে। শেষমেশ কে কাকে টেক্কা দিল, সেটা অবশ্য জানা যাবে ভোটের ফলে, ৪ জুনে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Lok Sabha Election 2024 midnapore

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy