টিকিট কাউন্টারে দু’হাজার টাকার নোট হাতে যাত্রী। —নিজস্ব চিত্র
এটিএম থেকে টাকা তুলতে গিয়েছিলেন স্কুল শিক্ষক জ্যোতিন্দ্রনাথ দাস। একশো অথবা নতুন পাঁচশো টাকার নোট। এটিএম থেকে বেরিয়েছিল শুধু দু’হাজার টাকার নোট। অগত্যা তাই নিতে হয়েছিল। খুচরোর অভাব। মাসের চতুর্থ শনিবার ব্যাঙ্কও ছিল বন্ধ।
পরে খড়্গপুর স্টেশনে এসে ওই দু’হাজার টাকা দিয়ে বালিচকের টিকিট কাটতে গিয়েছিলেন। টিকিটের দাম ১০টাকা। নোট দেখে চোখ কপালে ওঠার জোগার টিকিট কাউন্টারের কর্মীর। টিকিট দিতে অস্বীকার করলেন তিনি। এর পরে খড়্গপুর গ্রামীণের বেনাপুরের বাসিন্দা জ্যোতিন্দ্রনাথবাবু বলেন, “স্কুল থেকে ফিরে বালিচক যাওয়ার কথা। পুরনো একটি পাঁচশো টাকার নোট ছাড়া পকেটে কিছুই নেই। ভেবেছিলাম নোট বদল করব। কিন্তু ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় তা হয়নি। আর এটিএম থেকে দু’হাজার টাকার কমে নোট পেলাম না।”
শনিবার খুচরো যন্ত্রণায় দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে বহু মানুষকে। একদিকে ব্যাঙ্ক বন্ধ। অন্যদিকে এটিএমে নতুন পাঁচশো টাকার নোট আসেনি। আবার একশো টাকার নোটের অভাব।
যেখানে টাকা পাওয়া গিয়েছে সেখানেই দু’হাজার টাকা তুলতে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। আর সেই নোট নিয়ে ঘুরে বেড়াতে হয়েছে। এতেই ক্ষোভ বেড়েছে সর্বত্র। এ দিন শহরের বোগদা, মালঞ্চ, ইন্দা, খরিদা, ঝাপেটাপুর, প্রেমবাজার, আইআইটি, কৌশল্যা এলাকার বহু এটিএমে এমন দুর্ভোগের বহু ছবি সামনে এসেছে। ব্যাঙ্ক থেকেও টাকা না পাওয়ায় দুর্ভোগ বেড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দু’হাজার টাকার নোট দেখে ফিরে গিয়েছেন সাধারণ মানুষ।
এ দিন চাহিদা মতো নোট না পাওয়ায় এটিএম কাউন্টারের সামনে ভিড় ছিল না। শহরের বোগদায় এটিএম থেকে থেকে বেরিয়ে বুলবুলচটির বাসিন্দা আনসারুল হক বলেন, “ব্যাঙ্ক বন্ধ থাকায় এটিএমে ভরসা করেছিলাম। বেশিরভাগ এটিএম নোটের অভাবে অচল। বোগদার ডিআরএম অফিসের সামনে স্টেট ব্যাঙ্ক শাখার এটিএম ফাঁকা শুনে ছুটে এলাম। কিন্তু এখানে দু’হাজার টাকার নোট।” আশায় এ দিন শহরের মানুষ ঘুরলেও পাঁচশো টাকার নোট মেলেনি।
তবে প্রয়োজন বুঝে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন রেলের টিকিট কাউন্টারের কর্মীরা। এ দিনই দু’হাজার টাকার নোট দিয়ে টিকিটও পেয়েছেন দূরের যাত্রীরা। যেমন পূর্ব মেদিনীপুরের মরিশদার বাসিন্দা পেশায় মার্বেল মিস্ত্রি অরুণ মণ্ডল বলেন, “বিজয়ওয়াড়াতে কাজে যাব। হাতে দু’হাজার টাকার নোট। স্টেশনে তিনটি কাউন্টারে টিকিট পাইনি। অবশেষে এই কাউন্টারের এক মহিলা কর্মী ৫৮০টাকার এই টিকিট দিলেন।”
রেলের সিনিয়র ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ইন্সপেক্টর কুলদীপ তিওয়ারি বলেন, “কম মূল্যের টিকিট নিয়ে দু’হাজার টাকার নোট দিলে তো সমস্যা হবেই। এত খুচরোর জোগান কী ভাবে আমাদের কর্মীরা দেবেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy