Advertisement
০৬ মে ২০২৪

পাথরায় এএসআই, আশায় ইয়াসিন

শনিবার পাথরায় এসেছিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা কেন্দ্রীয় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) একটি দল। মন্দিরগুলো ঘুরে দেখে সেগুলিকে সংস্কার করে এই এলাকাকে সাজিয়ে তোলার আশ্বাসও দেওয়া হয়।

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইয়াসিন পাঠান। নিজস্ব চিত্র

ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণের প্রতিনিধিদের সঙ্গে ইয়াসিন পাঠান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
পাথরা শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০০:৩৯
Share: Save:

কংসাবতীর পাশে সার দিয়ে একের পর এক মন্দির। নিখুঁত টেরাকোটার কাজ, সঙ্গী অপরূপ নিসর্গ। সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও মন্দিরময় পাথরা এখনও সে ভাবে পর্যটন মানচিত্রে জায়গা পায়নি। এ বার সেই তোড়জোড় শুরু হল।

শনিবার পাথরায় এসেছিল ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বা কেন্দ্রীয় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়ার (এএসআই) একটি দল। তিন সদস্যের দলে ছিলেন এএসআই-এর পূর্বাঞ্চলের রিজিওন্যাল ডিরেক্টর নন্দিনী ভট্টাচার্য, কলকাতা মণ্ডলের সুপারিনটেন্ডিং আর্কিওলজিস্ট জি মহেশ্বরী প্রমুখ। পাথরায় জমি অধিগ্রহণের সমস্যার দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেয় দলটি। পাশাপাশি, মন্দির সংস্কার করে এই এলাকাকে সাজিয়ে তোলার আশ্বাসও দেওয়া হয়।

মন্দিরগুলো ঘুরে দেখে এএসআই-এর পূর্বাঞ্চলের রিজিওন্যাল ডিরেক্টর নন্দিনীদেবী বলছিলেন, “মন্দিরগুলো এত ভাল করে স্থানীয়রা আগলে রেখেছেন, এটা দেখেও ভাল লাগছে।” তাঁর আশ্বাস, “এখানে জমি অধিগ্রহণের ছোট একটা সমস্যা হচ্ছিল। আমরা আশাবাদী, এ বার তাড়াতাড়ি সমস্যার সমাধান হবে।’’ জমি কি সরাসরি এসএসআই কিনে নেবে? নন্দিনীদেবীর জবাব, “রাজ্য সরকারকে আমরা খুব একটা মাঝখানে আনি না। জমির মূল্য রাজ্য সরকার নির্ধারণ করে। পরে সেই জমি কেনা হয়।’’

এসএসএআইয়ের পরিদর্শনের পরে আশার আলো দেখছে পাথরাও। পাথরা পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ইয়াসিন পাঠান বলছিলেন, “প্রায় ১৪ বছর বিষয়টি ঝুলে রয়েছে। এতদিনে আশার আলো দেখছি।’’ পাথরায় জমি রয়েছে আশুতোষ মজুমদারের। তাঁর কথায়, “মন্দিরগুলো ভাল ভাবে সংরক্ষণ হোক, পাথরার আরও উন্নয়ন হোক। আমরা সকলে এটাই চাই।’’

মেদিনীপুর সদর ব্লকের এই এলাকায় হিন্দু মন্দির বাঁচিয়ে রাখতে এক মুসলমান যুবকের সংগ্রাম দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। ইয়াসিন পাঠানের সূত্রেই পাথরা এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও ঐক্যের পীঠস্থান। ইয়াসিনের আর্জিতে কংসাবতীর তীরে ৩৪টি মন্দির এবং মন্দির সংলগ্ন ২৫ বিঘা জমি অধিগ্রহণ করে কেন্দ্রীয় আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই)। সেটা ২০০৩ সাল। পরে ১৯টি মন্দির সংস্কার হয়। তবে পাথরায় পর্যটন কেন্দ্র গড়ে ওঠেনি। ত্রে পাথরা জায়গা পেতে চলেছে।’’

পরিদর্শন শেষে এএসআই-এর দলটি এ দিন যখন পাথরা ছাড়ছে, তখন ইয়াসিনের জিজ্ঞাসা, ‘‘১৪ বছর পেরিয়ে গিয়েছে। এ বার সব কাজ তাড়াতাড়ি এগোবে তো?” এএসআইয়ের কলকাতা মণ্ডলের সুপারিনটেন্ডিং আর্কিওলজিস্ট জি মহেশ্বরীকে বলতে শোনা গেল, “যা বলছি, হৃদয় থেকেই বলছি।’’

ইয়াসিনের ঠোঁটের কোণে তখন হাসির ঝিলিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE