ধৃত শম্ভুনাথ। নিজস্ব চিত্র।
মালিককে খুন করে সোনার গয়না লুঠের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শম্ভুনাথ শাসমলকে গ্রেফতার করল পুলিশ। সোমবার রাতে দাসপুর থানার জয়রামচক এলাকা থেকে পুলিশ তাকে ধরে। মঙ্গলবার ধৃতকে ঘাটাল আদালতে তোলা হয়। তদন্তের স্বার্থে শম্ভুনাথকে ট্রানজিট রিমান্ডে নিয়েছে রাজস্থান পুলিশ। রবিবার রাতেই শম্ভুনাথের বাবামা-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। উদ্ধার হয়েছে লুঠ হওয়া গয়নাও।
রাজস্থানের চমু শহরে সোনা ব্যবসায়ী মূলচাঁদ সোনির দোকানে কাজ করত কোলাঘাটের কিসমত খয়রা গ্রামের যুবক শম্ভুনাথ। অভিযোগ, গত ১৩ সেপ্টেম্বর দুপুরে মালিক মূলচাঁদকে খুন করে শম্ভুনাথ দোকান থেকে প্রায় চার কিলোগ্রাম সোনার গহনা লুঠ করে পালায়। ঘটনার পর মৃতের ভাই চমু থানায় শম্ভুনাথের বিরুদ্ধে খুন ও ডাকাতির অভিযোগ করেন।
দিন চারেক আগে মোবাইল টাওয়ার লোকেশন দেখেও শম্ভুনাথের নাগাল পায়নি পুলিশ। পরে সিআইডি-র সাহায্য নিয়ে দাসপুরের জোতঘনশ্যাম গ্রাম থেকে অভিযুক্তের বাবা কালিপদ শাসমল, মা পূর্ণিমা শাসমল ও জামাইবাবু বিশ্বজিৎ মাঝিকে ধরা হয়। পরে দাসপুর থানারই দুধকোমরা গ্রামে অভিযুক্তের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে আরও দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ সূত্রে খবর, চুরির ঘটনায় যে আগেই তার পাঁচজন পরিজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেই খবর শম্ভুনাথের কাছে ছিল না। মঙ্গলবার রাতে একটি গাড়ি ভাড়া করে পাঁশকুড়া থানার মেছোগ্রাম থেকে দাসপুরের জোতঘনশ্যামে দিদির বাড়িতে সোনার গয়না নিতে আসছিল শম্ভুনাথ। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে রাজস্থান পুলিশ ও পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পুলিশ একাধিক ভাগে ভাগ হয়ে আগে থেকেই ওঁত পেতে ছিল। গাড়িটি দাসপুরের জয়রামচকের কাছে আসতেই ঘাটালের সিআই শুভঙ্কর দের নেতৃত্বে শম্ভুনাথকে পাক়ড়াও করে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শম্ভুনাথের থেকে নগদ প্রায় আশি হাজার টাকা ও তিনশো গ্রাম সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়। আগেই আরও দু’কিলোগ্রাম আটশো গ্রাম সোনার গয়না উদ্ধার করা হয়েছিল। পুলিশ সূত্রে দাবি, জেরায় শম্ভুনাথ জানিয়েছে, ইদানীং দোকানের মালিক ঠিকমতো বেতন দিতেন না। মালিক খারাপ ব্যবহারও করতেন। এ নিয়ে মালিকের উপর ক্ষোভ ছিলই। তার জেরেই সে মালিককে খুন করে দোকান থেকে সোনার গয়না লুঠ করে পালিয়ে আসে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ সেপ্টেম্বর ঘটনার পর রাজস্থানের চমু শহরের একটি প্রত্যন্ত এলাকায় আত্মগোপন করেছিল শম্ভুনাথ। পরদিন ভোরেই রাজস্থান থেকে পালায় সে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সকালে খড়্গপুরে ট্রেন থেকে নেমে শম্ভুনাথ সোজা জোতঘনশ্যামে দিদির বাড়িতে চলে যায়। সেখানে দিদির বাড়ি ও দিদির এক আত্মীয়ের বাড়িতে তিন কিলোগ্রাম সোনার গয়না রাখে সে। বাকি সোনা নিয়ে ঘণ্টাখানেকের মতো কোলাঘটের কিসমত খয়রা গ্রামের নিজের বাড়িতে যায় শম্ভুনাথ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দিন রাতেই স্থানীয় একটি দোকানে কিছু গয়না বিক্রি করে শম্ভুনাথ নতুন একটি মোটরবাইক কিনে। বাড়ির লোকেদের গয়না লুঠের কথা জানালেও খুনের কথা গোপন করে গিয়েছিল সে। গত রবিবার রাতেই গোটা বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যায় পুলিশের কাছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy