চাষিদের উৎসাহ দিতে কম খরচে বিভিন্ন কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া দেওয়ার ব্যবস্থা শুরু হয়েছিল বছর তিনেক আগে। গ্রামীণ কৃষি সমবায় সমিতিগুলিকে কৃষি যন্ত্র কেনার জন্য ভর্তুকি দেয় কৃষি দফতর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ‘কাস্টম হায়ারিং সেন্টার’ চালু হয়েছিল বেশ কয়েকটি গ্রামীণ সমবায় সমিতিতে। কিন্তু জেলার অধিকাংশ সমবায় সমিতি এই হায়ারিং সেন্টার চালানোয় আগ্রহ দেখাচ্ছে না বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি বিবেচনা করে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যারা এই সেন্টার চালাতে চান তাঁদের ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্র কেনার জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হচ্ছে।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কৃষি দফতরের উপ-অধিকর্তা সুশান্ত মহাপাত্র বলেন, ‘‘সমবায় সমিতিগুলিকে ‘কাস্টম হায়ারিং সেন্টার’ চালানোর জন্য অর্থ সাহায্য করা হলেও অধিকাংশ সমবায় সমিতিগুলি থেকে আশানুরূপ সাড়া মেলেনি। তাই এখন ব্যক্তিগত উদ্যোগে ‘কাস্টম হায়ারিং সেন্টার’ চালুর জন্য ভর্তুকি মূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি কেনায় অর্থ সাহায্য করার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
জেলা কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কৃষিকাজে ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার, ধান রোয়া ও কাটার যন্ত্র, বীজ বোনার যন্ত্র, নিড়ানি দেওয়ার যন্ত্র-সহ বিভিন্ন আধুনিক কৃষি যন্ত্র ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে চাষিদের কাছে তা কম মুল্যে ভাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ জন্য গ্রামীণ এলাকায় থাকা কৃষি সমবায় সমিতিগুলিতে ওইসব যন্ত্রপাতি রাখার জন্য ‘কাস্টম হায়ারিং সেন্টার খোলার ব্যবস্থা
করা হয়।
কৃষি দফতরের নির্ধারিত হারে ভাড়ায় ওইসব যন্ত্র দেওয়া হয়। এজন্য সমবায় সমিতিগুলি যাতে কম খরচে যন্ত্র কিনতে পারে মোট খরচের ৪০ শতাংশ টাকা ভর্তুকি হিসেবে দিতে রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় অর্থ বরাদ্দ করা হয়।
কৃষি দফতরের হিসেব অনুযায়ী,২০১৪-১৫ আর্থিক বছরে এই খাতে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার জন্য ১ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু পরের বছর একই খাতে ৯০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হলেও সমবায় সমিতিগুলির কাছ থেকে তেমন সাড়া মেলেনি। মাত্র ৪ টি সমবায় সমিতি এই সেন্টার খোলার জন্য আগ্রহ দেখিয়েছিল। ফলে এই খাতে বরাদ্দ পুরো টাকা খরচ করতে পারেনি কৃষি দফতর। চলতি আর্থিক বছরে এই খাতে ৩৪ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তবে সমবায় সমিতিগুলি এই সেন্টার খোলায় আগ্রহী না হওয়ায় ব্যক্তিগত উদ্যোগীদের মাধ্যমে এই সেন্টার খোলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে জেলা কৃষি দফতর।
কেন আগ্রহী হচ্ছে না সমবায়গুলি?
দু’বছর আগে যন্ত্র ভাড়া কেন্দ্র খুলেছিলেন মহিষাদল ব্লকের ভোলসরার জনতা কো-অপারেটিভ এগ্রিকালচার ক্রেডিট সোসাইটি। ওই সমিতির সম্পাদক চন্দন পণ্ডা বলেন, ‘‘আমাদের সমবায় একটি ট্রাক্টর, দুটি পাওয়ার টিলার, ৪ টি ধান ঝাড়াই মেশিন ও একটি কীটনাশক স্প্রে মেশিন কিনে তা ভাড়ায় দেওয়া শুরু করেছিল। কিন্তু চাষিদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা এবং ভাড়ার টাকা আদায় করার জন্য কর্মীদের যে সময় দিতে হয় তাতে সমিতির কাজে অসুবিধা হচ্ছিল। তাই অধিকাংশ যন্ত্র স্থানীয়ভাবে লিজে দেওয়া হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy