প্রতীকী ছবি।
দলের শো-কজের মুখে পড়তে চলেছেন মেদিনীপুরের যুব তৃণমূল নেতা সৌরভ বসু। দলের কাউন্সিলরকে জড়িয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত মন্তব্য করায় তাঁকে শো-কজ করা হচ্ছে। তৃণমূলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি তথা বিধায়ক আশিস চক্রবর্তী মানছেন, “সৌরভের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাওয়া হচ্ছে।” তাঁর কথায়, “দলের কথা এ ভাবে বাইরে আনা ঠিক নয়। কারও কিছু নিয়ে অসন্তোষ থাকতেই পারে। তা দলের মধ্যে জানানো যায়।”
দলের এক সূত্রে খবর, ইতিমধ্যে ওই যুবনেতার সঙ্গে কথা হয়েছে আশিসবাবুর। তিনি সৌরভকে সতর্ক করে দিয়েছেন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতিও এই যুবনেতাকে ভৎর্সনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, ফেসবুকে ওই মন্তব্য করা ঠিক হয়নি। সোমবার সৌরভ বলেন, “দল যা জানতে চাইবে জানিয়ে দেবো।” তাঁর দাবি, দলের সবস্তরে অভিযোগ জানিয়েছিলাম। কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে দল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। তাই ফেসবুকে ওই পোস্ট করেছি।
মেদিনীপুরে তৃণমূলের এই কোন্দল নিয়ে এখনও জলঘোলা চলছে। আদপে এই বিতর্কের শেষ কোথায়, তাই বুঝতে পারছেন না শাসক দলের অনেকে! বিতর্কের সূত্রপাত গত ৪ অক্টোবর। শহরের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনিলচন্দ্র দলবেরাকে তোলাবাজ বলে গালমন্দ করে ওই দিন ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন সৌরভ। মেদিনীপুরের এই যুব নেতা এই ওয়ার্ডেরই বাসিন্দা। পোস্টে এও লেখা হয়, ‘আর নেই দরকার, তোলাবাজ কমিশনার।’ বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে মেদিনীপুরে। চরম অস্বস্তিতে পড়েন জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব।
তৃণমূলের এক জেলা নেতার স্বীকারোক্তি, “যে ভাবে দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল প্রকাশ্যে এসেছে তা অস্বস্তিরই। সাধারণ মানুষের কাছে দলের সম্পর্কে ভুল বার্তা পৌঁছচ্ছে।” অনিলচন্দ্রবাবুর দাবি, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই তাঁর নামে কুত্সা-অপপ্রচার করা হয়েছে। তাঁর আশা, দল নিশ্চয়ই এ ব্যাপারে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। এমনকী সৌরভের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল কাউন্সিলর। সৌরভও জানিয়েছেন, মামলা হলে তিনি লড়বেন।
বছর ঘুরলে মেদিনীপুরে পুরসভা নির্বাচন। তার আগে তৃণমূলের এই কোন্দল অন্য মাত্রা পেয়েছে। ইতিমধ্যে কোন্দলে ঢুকে পড়েছে মুকুল রায়ের প্রসঙ্গও। কাউন্সিলরের অনুগামীদের দাবি, মুকুল রায়ের সঙ্গে সৌরভ বসুর যোগাযোগ রয়েছে। দলের ভাবমূর্তি নষ্ট করতেই কাউন্সিলরকে নিয়ে ফেসবুকে বিতর্কিত পোস্ট করেছেন তিনি। জেনেবুঝেই এ ভাবে দলের নামে কুত্সা রটানো হয়েছে। গত বছর সৌরভের অনুরোধে এক কালীপুজোর উদ্বোধনেও এসেছিলেন মুকুল রায়।
যুব নেতার অনুগামীদের অবশ্য দাবি, গুরুতর অভিযোগ থেকে বাঁচতে সৌরভকে মিথ্যে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। যখন দলে ছিলেন, তখন মুকুল রায়ের সঙ্গে অনেক জেলা নেতার মতো সৌরভেরও সম্পর্ক ছিল। মুকুল দল ছাড়ার পরে আর কোনও সম্পর্ক নেই। আর পুজোর উদ্বোধনে শুধু মুকুল রায় নন, অজিত মাইতি, দীনেন রায়, উত্তরা সিংহদের মতো জেলা তৃণমূলের শীর্ষ নেতা-নেত্রীরাও ছিলেন। তৃণমূলের মেদিনীপুর শহর সভাপতি আশিস চক্রবর্তী বলেন, “মেদিনীপুরের ওই বিষয়টি দল গুরুত্ব দিয়েই দেখছে। জেলা সভাপতির সঙ্গে কথা হয়েছে। দলের নীতি ও শৃঙ্খলাভঙ্গের প্রবণতাকে প্রতিহত করা হবেই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy