লরি থামিয়ে তল্লাশি। বালিভাসায় ৬ নম্বর জাতীয় সড়কে। নিজস্ব চিত্র।।
একেই বলে দাঁতালের দাদাগিরি! রবিবার বিকেলে ঝাড়গ্রামের বালিভাসার জঙ্গল রাস্তায় একটি বুনো হাতি উঠে পড়ায় ঘণ্টা দু’য়েক ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক মুম্বই রোডে থমকে গেল যান চলাচল।
বন দফতর সূত্রের খবর, পূর্ণবয়স্ক রেসিডেন্ট হাতিটি গত কয়েকদিন ধরে বালিভাসার জঙ্গলে ঘাঁটি গেড়েছে। রবিবার বিকেল ৩ টে নাগাদ আচমকা হাতিটি বালিভাসার জঙ্গল থেকে বেরিয়ে জাতীয় সড়কে উঠে পড়ে। হাতি দেখে লরি ও যানবাহনগুলি দাঁড়িয়ে যায়। হাতিটি ততক্ষণে দাঁড়িয়ে থাকা লরিগুলির ডালার ত্রিপল সরিয়ে শুঁড় ঢুকিয়ে খাবার খুঁজতে থাকে। হাতি দেখে লরি ও যানবাহন থেকে চালক ও আরোহীরা নেমে পিছনের দিকে সরে যান। মিনিট কুড়ি পরে হাতিটি ফের জাতীয় সড়কের পাশের জঙ্গলে ঢুকে পড়ে। সাড়ে তিনটে নাগাদ যান চলাচল শুরু হতেই ফের হাতিটি জাতীয় সড়কে উঠে পড়ে। ওই সময় নয়াগ্রাম থেকে ব্যারাকপুরগামী রাজ্য সশস্ত্র পুলিশের একটি মিনি বাস থেমে যায়। পুলিশ কর্মীরা বাস থেকে নেমে পড়েন। দ্বিতীয় দফায় লরি গুলিতে খানা তল্লাশি করে তেমন কিছু না মেলায় মেজাজ বিগড়ে যায় দস্যি দাঁতালটির। শুঁড় দিয়ে পুলিশের গাড়িটি পিছন দিকে ঠেলার চেষ্টা করে হাতিটি। পুলিশের গাড়ির সামনের দিকের কিছুটা অংশ তেবড়ে যায়। এর পর জাতীয় সড়কের ধারে দাঁড়িয়ে থাকে হাতিটি।
খবর পেয়ে চলে আসেন স্থানীয় মানিকপাড়া বিট হাউসের পুলিশ ও মানিকপাড়া রেঞ্জের বন কর্মীরা। কিন্তু হাতিটিকে সহজে জঙ্গলের দিকে তাড়ানো যাচ্ছিল না। ধীরে ধীরে কয়েকটি লরি পাশ দিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই রুখে দাঁড়ায় হাতিটি। প্রতিটি লরিকে শুঁড় দিয়ে খানাতল্লাশি করে তবে ছাড়ছিল সে। হাতি দেখার জন্য কৌতূহলি লরি ও যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা ভিড় করেন। যানজট ঠেকাতে হিমসিম খায় পুলিশ।
বালিভাসার একটি ধাবার মালিক অভিষেক পাল বলেন, “৩২ বছর এখানে হোটেল চালাচ্ছি। প্রায়ই জঙ্গলের হাতি রাস্তার ধারে বা হোটেলের সামনেও চলে আসে। কিন্তু এ দিন হাতিটি অনেকক্ষণ ধরে জাতীয় সড়কে ছিল। জঙ্গলে খাবার না থাকার জন্যই হাতিরা লোকালয়ে চলে আসছে।” লরির চালক এস মুথুকৃষ্ণন বলেন, “আগে রাতবিরেতে রাস্তায় হাতি উঠতে দেখেছি। এখন দিনের বেলা হাতি জাতীয় সড়কে উঠে পড়ছে, খুবই বিপজ্জনক ব্যাপার। বন দফতর করছে কী!” লরির খালাসি পবন মিশ্র বলেন, “জাতীয় সড়কে এমন সার্কাস দেখব কোনও দিন ভাবিনি। বিষয়টা আমরা সবাই বেশ উপভোগ করছিলাম।”
বিকেল ৫ টা নাগাদ বনকর্মীরা পটকা ফাটিয়ে হাতিটিকে জঙ্গলের দিকে খেদিয়ে দেন। মানিকপাড়ার ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার বিজনকুমার নাথ বলেন, “রেসিডেন্ট হাতিটি দিন দশেক ধরে বালিভাসার জঙ্গলে রয়েছে। হাতিটিকে এলাকা থেকে সরানোর চেষ্টা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy