E-Paper

অধিকার বুঝে নিতে আন্দোলনে ভূমিজরাও

ভূমিজদের দাবি, আদিবাসী হলেও এ রাজ্যে তাঁরা বঞ্চিত। ভূমিজ সাংস্কৃতিক দলগুলিকে সরকারি সাহায্য করা হচ্ছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:২২
ডিএম অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়ে ভূমিজ সংগঠনের পোস্টার ঝাড়গ্রামে।

ডিএম অফিস ঘেরাওয়ের ডাক দিয়ে ভূমিজ সংগঠনের পোস্টার ঝাড়গ্রামে। নিজস্ব চিত্র।

এক গোষ্ঠী থেকে অন্যতে, এক সম্প্রদায় থেকে অন্য সম্প্রদায়ে— জাতিসত্তার আন্দোলন ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে জঙ্গলমহলে। লোকসভা ভোটের আগে জাতিসত্তার দাবিটিকে আরও জোরালভাবে প্রশাসনের নজরে আনতে এ বার পথে নামছেন আদিবাসী ভূমিজরা।

নিজেদের অধিকার বুঝে নিতে আগামী বুধবার ঝাড়গ্রামে জেলাশাসকের দফতরের সামনে ঘেরাও কর্মসূচির ডাক দিয়েছে ভারতীয় আদিবাসী ভূমিজ সমাজ। পশ্চিমবঙ্গ আদিবাসী উন্নয়ন সমবায় নিগমের (টিডিসিসি) ঝাড়গ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়েও ওই দিন তালা ঝোলানোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংগঠনটি। ভূমিজ ভাষাকে রাজ্যের দ্বিতীয় সরকারি ভাষার স্বীকৃতি,পৃথক উন্নয়ন পর্ষদ, ভূমিজ বিদ্রোহের মহানায়ক শহিদ গঙ্গানারায়ণ সিং ও চূয়াড় বিদ্রোহের মহানায়ক শহিদ রঘুনাথ সিংয়ের জন্মজয়ন্তীর দিনগুলিতে সাধারণ ছুটি ঘোষণা এবং সরকারি উদ্যোগে দুই শহিদের মূর্তি স্থাপন সহ বিভিন্ন দাবিতে ৮ নভেম্বর ‘ঝাড়গ্রাম চলো’-র ডাক দিয়েছে তারা। সংগঠনের দাবি, ওই দিন জঙ্গলমহলের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রচুর আদিবাসী ভূমিজ ঝাড়গ্রামে এসে কর্মসূচিতে শামিল হবেন। পোস্টার সাঁটিয়ে প্রচারও চলছে।

ভূমিজদের দাবি, আদিবাসী হলেও এ রাজ্যে তাঁরা বঞ্চিত। ভূমিজ সাংস্কৃতিক দলগুলিকে সরকারি সাহায্য করা হচ্ছে না। টিডিসিসি পরিচালিত আদিবাসী সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় ভূমিজ সাংস্কৃতিক দলগুলিকে গুরুত্ব ও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে না।অভিযোগ, তাঁদের লোকপ্রসার শিল্পীর তালিকায় অন্তর্ভুক্তও করা হয়নি। এ ছাড়া ‘মোড়ল’-‘লায়া’-‘ডাকুয়া’র মতো ভূমিজ সমাজের গ্রাম্য ব্যবস্থার পদাধিকারী বিশিষ্টজনদের সরকারি স্বীকৃতি এবং ভাতার দাবি করেছে ভারতীয় ভূমিজ সমাজ। ভূমিজদের ধর্মীয় জাহের থান, গরাম থান, শারুল থান এবং শ্মশান (হাড়শালী) সংরক্ষণেরও দাবি তোলা হয়েছে।

এর আগে একটানা বেশ কয়েকদিন পুরসভা ঘেরাও করে প্রশাসনের কাছ থেকে অরণ্যশহরে জমি আদায় করে সেখানে গত ৪ সেপ্টেম্বর চুয়াড় বিদ্রোহের মহানায়ক রঘুনাথ সিংয়ের পূর্ণাবয়ব মূর্তি বসিয়েছে ভূমিজ সংগঠনটি। ভারতীয় ভূমিজ সমাজের কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক নিত্যলাল সিং বলছেন, ‘‘বেশ কয়েকবার স্মারকলিপি দেওয়া হয়েছে। অবস্থান বিক্ষোভও হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ হয়নি।’’ সংগঠনের সর্বভারতীয় সভাপতি তপনকুমার সর্দারের কথায়, ‘‘প্রশাসনকে বার বার জানিয়ে আমরা চূড়ান্ত আশাহত। সেই কারণে এবার জেলা শাসকের দফতর ঘেরাও এবং টিডিসিসি দফতরে তালা লাগানোর কর্মসূচির ডাক দেওয়া হয়েছে।’’

জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলছেন, ‘‘ভূমিজ সংগঠনটির চিঠি পেয়ে তাঁদের প্রতিনিধিদের আলোচনায় ডাকা হয়। কিন্তু কেউ আলোচনায় আসেননি।’’ তপনের পাল্টা জবাব, ‘‘আমরা দফতর ঘেরাও করব বলায় এখন প্রশাসনের ঘুম ভেঙেছে। আমাদের ডাকাডাকি করা হচ্ছে। ৮ নভেম্বরই আমরা যাব।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

jangalmahal

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy