ব্যাঙ্কের কাজকর্ম শুরু হয়নি। সবে কর্মীরা পৌঁছেছেন। এমন সময় সেখানে ঢুকে লুঠপাট চালিয়ে পালাল চার দুষ্কৃতী। তবে লুঠপাটের আগে তারা ব্যাঙ্কের ভিতরের ‘ক্লোজড সার্কিট টিভি’ (সিসিটিভি)-র যন্ত্রাংশ খুলে নেয়। চম্পট দেওয়ার আগে ব্যাঙ্কের দরজায় মেরে যায় তালা।
মঙ্গলবার সকালে পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক শহরের হাসপাতাল মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় ওই হামলার খবর পেয়ে ভিতরে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করে পুলিশ। জেলার পুলিশ সুপার সুকেশকুমার জৈন বলেন, “প্রায় সাড়ে ১১ লক্ষ টাকা লুঠ হয়েছে বলে অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনায় জড়িতদের বিষয়ে কিছু সূত্র মিলেছে।”
হাসপাতাল মোড়ে একটি চারতলা বাড়ির দোতলায় ওই ব্যাঙ্কের শাখা। সেখানে কোনও নিরাপত্তা রক্ষী নেই। কাজকর্ম শুরু হওয়ার কথা সকাল ১০টায়। পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন তার মিনিট পনেরো আগেই ওই শাখা অফিসে ম্যানেজার, ক্যাশিয়ার ও পিয়ন পৌঁছন। এসে পড়েন দুই বৃদ্ধ গ্রাহকও। শাখার ভিতরেই তাঁদের বসতে দেওয়া হয়। সেই সময় দু’টি মোটরবাইকে আসে চার জন। তিন জন ব্যাঙ্কের ভিতরে ঢোকে। এক জন ছিল পাহারায়।
ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজার বিনোদ আর্য বলেন, “হাজিরা-খাতায় সই করার সময় আচমকা এক জন আমার কোমরে রিভলবার ঠেকালো। বলল, ‘চিল্লাও মত’। ব্যাঙ্কের ভিতরে থাকা সবার মোবাইল কেড়ে নিল। তার
পরে সবাইকে একটা জায়গায় মাথা নিচু করে বসিয়ে রাখল।’’ ম্যানেজারের দাবি, এরই মধ্যে আরও তিন জন গ্রাহক এসে পড়েন। তাঁদেরকেও একই জায়গায় বসিয়ে রাখে দুষ্কৃতীরা। এর পরেই তারা তাঁর ঘরে ঢুকে সিসিটিভি-র হার্ড ডিস্ক খুলে নেয়। অফিসঘর থেকে ভল্টের চাবি বার করে এনে তাঁকে এবং ক্যাশিয়ারকে ভল্ট খুলতে বাধ্য করে। ভল্ট খোলা হতেই সঙ্গে আনা ব্যাগে টাকার বান্ডিল ভরে নেয়। ব্যাঙ্কের ক্যাশিয়ার সন্দীপ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “লুঠপাটের আগে লোকগুলোকে রিভলভার বার করতে দেখেই বিপদজ্ঞাপক অ্যালার্ম-এর স্যুইচ টিপেছিলাম।
কিন্তু অ্যালার্ম বাজেনি।” পুলিশ জানিয়েছে, ওই অ্যালার্ম কেন বাজেনি, তা দেখা হচ্ছে।
ব্যাঙ্ক-কর্মীরা জানান, দুষ্কৃতীরা হিন্দিতে কথা বলছিল। প্রত্যেকের হাতেই ছিল রিভলভার। মিনিট কুড়ির মধ্যে কাজ সেরে ব্যাঙ্ক থেকে বেরনোর সময়ে তারা আলো নিভিয়ে চেঁচাতে নিষেধ করে বেরিয়ে যায়।
টাকা জমা দিতে ব্যাঙ্কে এসে দুষ্কৃতীদের খপ্পরে পড়েছিলেন তমলুকের দুই যুবক কার্তিক প্রামাণিক এবং গণেশ বাগ। তাঁদের অভিজ্ঞতা, “সিঁড়ি দিয়ে উঠতেই ব্যাঙ্কের দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা এক জন মাথায় রিভলবার ঠেকিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে অন্যদের সঙ্গে বসিয়ে দিল। মোবাইলও কেড়ে নিল। বাধা দিতে সাহস পাইনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy