পুলিশ সুপারের সঙ্গে সুনীল ও দীপালি মাহাতো। নিজস্ব চিত্র।
জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের দফতরে এসে আত্মসমর্পণ করলেন মাওবাদী দম্পতি। সুনীল ও দীপালি মাহাতোর হাতে শুক্রবার সন্ধ্যায় ‘পুনর্বাসন প্যাকেজের’ নথিপত্র তুলে দেন জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) শচীন মাক্কার। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জানান, শালবনির বাসিন্দা এই দু’জনের নামে মোট ৮টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ ক্যাম্পে হামলা, ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের মতো অভিযোগের মামলাও রয়েছে। জেলায় কি নতুন করে মাওবাদীদের প্রভাব বাড়ার কোনও আশঙ্কা রয়েছে? জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ অবশ্য এই প্রশ্নের জবাব দেননি। জেলা পুলিশের অন্য এক কর্তা অবশ্য বলেন, “ভিন্ রাজ্যের সীমানায় মাওবাদী তৎপরতা রয়েছে। ওরা জেলায় ঢোকার চেষ্টা করছে। কিন্তু অভিযান চলায় পারছে না।”
আত্মসমর্পণকারী এই দম্পতি মাওবাদী নেতা শুকদেব মাহাতো ওরফে বাদলের স্কোয়াডের সঙ্গে যুক্ত ছিল। বাদলের স্কোয়াড মূলত শালবনি এবং কোতোয়ালি থানা এলাকায় নাশকতা চালাত। ২০০৮ সালে শালবনির কয়মায় পুলিশ ক্যাম্পে হামলা হয়েছিল। ওই বছরই কলাইমুড়িতেও পুলিশ ক্যাম্পে হামলা হয়। ক্যাম্পে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ২০০৯ সালে ভীমশোলে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। পুলিশ সূত্রে খবর, এই সব ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন সুনীল। ২০১০ সালে তাঁকে গ্রেফতারও করেছিল পুলিশ। পরে জামিনে ছাড়া পেয়ে ফের মাওবাদী কাজকর্মে যুক্ত হয়ে পড়েন। এ দিন সুনীলের স্বীকারোক্তি, “ওটা ভুল পথ ছিল এখন বুঝতে পারছি। যারা এখনও সমাজের মূলস্রোতে নেই, তাদের ফিরে আসার কথা বলব।” একই সুর দীপালির গলায়। তাঁর কথায়, “সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে পেরে ভাল লাগছে।” বাদল আগেই পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে।
পুলিশ জানিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী এই মাওবাদী দম্পতি সম্পূর্ণ ‘পুনর্বাসন প্যাকেজ’ই পাবে। ২ লক্ষ টাকা স্থায়ী আমানত, এককালীন ৫০ হাজার টাকা অনুদান ও প্রতি মাসে ৪ হাজার টাকা আর্থিক সাহায্যের পাশাপাশি চিকিৎসার খরচ বাবদ প্রতি মাসে ৫০০ টাকা পাবে। এঁরা থাকবে পুলিশের পুনর্বাসন কেন্দ্র। পরে পুলিশে চাকরিও পাবে। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আমরা চেয়েছিলাম, ওরা সমাজের মূলস্রোতে ফিরে আসুক। ওরাও তাই চেয়েছে। আবেদন করে বলেছে, আমরা ভাল হতে চাই।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy