Advertisement
E-Paper

পুতুলে পড়ুয়াদের সচেতনতার পাঠ

উপকরণ যত্‌ সামান্য। সাদা কাগজ আর দু’চারটে মোম রং। তাই দিয়েই তৈরি হয়ে গেল শয়ে শয়ে ব্যাঙ। কচি কাঁচাদের হাতে হাতে সেই ব্যাঙ ডেকে উঠল ‘গ্যাঙর গ্যাং’। কবি শুভ দাশগুপ্তও খুদেদের জন্য সেখানে বসেই লিখে ফেললেন ব্যাঙের নাটক। বেলপাহাড়ি ব্লকের বাঁশপাহাড়ি অঞ্চলের ন’টি প্রাথমিক স্কুলের ১০২ জন পড়ুয়াদের তৈরি ব্যাঙেদের দাপাদাপি দেখতে ভিড় জমালেন আশে পাশের উত্‌সাহী মানুষজন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ এপ্রিল ২০১৫ ০০:২৭
খেলার ছলে শেখা। বেলপাহাড়ির একটি স্কুলে তোলা নিজস্ব চিত্র।

খেলার ছলে শেখা। বেলপাহাড়ির একটি স্কুলে তোলা নিজস্ব চিত্র।

উপকরণ যত্‌ সামান্য। সাদা কাগজ আর দু’চারটে মোম রং। তাই দিয়েই তৈরি হয়ে গেল শয়ে শয়ে ব্যাঙ। কচি কাঁচাদের হাতে হাতে সেই ব্যাঙ ডেকে উঠল ‘গ্যাঙর গ্যাং’। কবি শুভ দাশগুপ্তও খুদেদের জন্য সেখানে বসেই লিখে ফেললেন ব্যাঙের নাটক। বেলপাহাড়ি ব্লকের বাঁশপাহাড়ি অঞ্চলের ন’টি প্রাথমিক স্কুলের ১০২ জন পড়ুয়াদের তৈরি ব্যাঙেদের দাপাদাপি দেখতে ভিড় জমালেন আশে পাশের উত্‌সাহী মানুষজন। পড়ুয়াদের পাশাপাশি, ওই সব স্কুলের শিক্ষকরাও মনোযোগ দিয়ে ‘পেপার গ্লাভস পাপেট’ তৈরি শিখলেন। সোমবার ঝাড়গ্রাম আর্ট অ্যাকাডেমির উদ্যোগে বেলপাহাড়ি ব্লকের বাঁশপাহাড়ি আংশিক বুনিয়াদী বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে পাপেট তৈরির ওই কর্মশালায় হাজির ছিলেন বিশিষ্ট কবি শুভ দাশগুপ্ত। কবিকে পেয়ে আপ্লুত প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের শিক্ষক ও পড়ুয়ারা। প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের সহযোগিতায় এ দিন বেলপাহাড়ি পশ্চিম চক্রের অন্তর্গত বাঁশপাহাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের ন’টি স্কুলের উত্‌সাহী পড়ুয়া ও শিক্ষকদের জন্য ওই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। পাহাড়-জঙ্গল ঘেরা প্রত্যন্ত এলাকার স্কুল পড়ুয়াদের জন্য এমন উদ্যোগ আগে কখনও নেওয়া হয় নি বলে দাবি স্থানীয়দের। পাপেট তৈরির তালিম নেওয়ার পরে পড়ুয়াদের হাতের সঞ্চালনে ব্যাঙের নাটকটি মঞ্চ স্থ হয়। ছোট্ট পাপিয়া, নাজ়মা, দীপক, অপর্ণা, সুমন-রা অবাক চোখে জানায়, “কাগজ দিয়েও যে এত সুন্দর পুতুল তৈরি করা যায়, জানতাম না।”

বাঁশপাহাড়ি আংশিক বুনিয়াদী বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণচন্দ্র মুড়া, পচাপানি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমৃতলাল পাল, সহ শিক্ষক সুব্রত দেবনাথ, প্রদীপকুমার সাউ-রা বলেন, “এমন কাগজ-পুতুল দিয়ে খেলাচ্ছলে শিশুদের অনেক কিছুই শেখানো যাবে। স্কুলের বাকি পড়ুয়াদের শেখানোর জন্য আমরাও পাপেট তৈরি শিখে নিয়েছি।” এ দিন শিক্ষকদের মুঠোয় ধরা ব্যাঙ-পুতুল বলে উঠল, “সবাই শৌচাগার ব্যবহার করব। খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে হাত ধোব। নিয়মিত হাতের নখ কাটব। খেলব যত, পড়ব তত, লিখব তারও বেশি। কখনও স্কুল কামাই করব না।” ব্যাঙের সংলাপে আর্ট অ্যাকাডেমির অধ্যক্ষ সঞ্জীব মিত্র বলে ওঠেন, “আমার কথা মন দিয়ে শুনলে পরেব বার জিরাফ, বাঁদর, জলহস্তিরাও তোমাদের বন্ধু হবে।” খুদেরা হইহই করে সমস্বরে বলে ওঠে, “আমরা লিখব, পড়ব, শৌচাগার ব্যবহার করব। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকব।”

বেলপাহাড়ি পশ্চিম চক্রের অবর বিদ্যালয় পরিদর্শক চন্দন খুঁটিয়া বলেন, “এখানেই উদ্যোগের সার্থকতা। যে শিক্ষকরা এ দিন প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তাঁরা এবার চক্রের বাকি ৪১টি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়াদের পাপেট তৈরি শেখাবেন।”

awareness campaigning students jhargram education primary school
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy