প্রতিরোধ তো হবে। কিন্তু ভরসা দেবে কে? জেলা নেতৃত্বের দিকে এমনই প্রশ্ন তুলছেন নীচুতলার বিজেপি নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা।
মনোনয়ন জমার প্রথম দিনেই হলদিয়ার সুতাহাটায় শাসক দলের হাতে মার খেয়েছিলেন বিজেপির সাংগঠনিক জেলা তমলুকের সভাপতি প্রদীপ দাস। তারপর থেকে প্রায়ই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি চলছে। মনোনয়ন দাখিলের সময় কোনও জেলা নেতা পাশে না দাঁড়ানোয় রীতিমতো হতাশ নন্দীগ্রামের নীচুতলার একাধিক নেতা। স্থানীয় এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘‘জেলা কমিটি দায়িত্ব না নিলে আমাদের উপর চাপ বাড়ছে। কত দিন এ ভাবে চালাব।’’
নন্দীগ্রাম তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটি। নন্দীগ্রাম ১ ও ২ ব্লকে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতে আগের তুলনায় অনেক বেশি সংখ্যক মনোনয়ন জমা দিয়েছে বিজেপি। তবে এর মূল্য চোকাতে হচ্ছে। অভিযোগ, হুমকির পাশাপাশি চলছে মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয়। কয়েকদিন আগে নন্দীগ্রাম ২ ব্লকে মনোনয়ন জমা দিয়ে বেরোনোর সময় তৃণমূল ও বিজেপি-র মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৬ জন গ্রেফতার হয়েছে। সুতাহাটাতে বহুবার চেষ্টা করেও, মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি নেতাদের দাবি, জেলা নেতারা পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পারেননি। যদিও, বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মানস কুমার রায়ের কথায়, ‘‘জেলা কমিটি সর্বদা সহযোগিতা করে। আসলে জেলা পুলিশ এবং প্রশাসনের আধিকারিকেরা শাসক দলের নেতার ভূমিকা নিয়েছে। তাই কোনও প্রতিরোধ গড়ে ওঠেনি।’’
স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর গড়ে ভোটার এবং সংগঠন আগের চেয়ে বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুরে তেমন প্রতিরোধ গড়ে তোলার মতো নেতা পাওয়া যায়নি। সংগঠন বাড়ানোর জন্য একসময়কার সাংসদ তথা দাপুটে সিপিএম নেতা লক্ষ্মণ শেঠকে দলে নিয়েছিল বিজেপি। এ বার পঞ্চায়েত ভোটে তাঁকে দেখাই যায়নি। নন্দীগ্রাম ১ ব্লকের এক বিজেপি নেতার কথায়, ‘‘জেলা কমিটির কোনও সাড়া শব্দ নেই। এত আক্রমণ চলছে। তারপরও কোনও আন্দোলন কিংবা প্রতিরোধের উদ্যোগ নেই।’’
বিজেপি-র নীচুতলার কর্মী-সমর্থকেরা চাইছেন, পথে নেমে পাশে দাঁড়িয়ে সাহস জোগান জেলার নেতারা। আর জেলা নেতারা প্রতিরোধ গড়ে তুলতে না পারার কারণ হিসাবে সামনে আনছেন শাসকদলের নেতাদের ভূমিকাকে। সব দেখে শুনে, নীচুতলার কর্মীদের অনেকেই বলছেন, প্রয়োজনে আরও মার খেতে হবে। কিন্তু ভোটের ময়দান ছেড়ে একেবারেই পালানো চলবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy