Advertisement
১৮ মে ২০২৪
নির্বাচন বিধি ভাঙার অভিযোগ

তৃণমূলের শিবির ঘিরে বিতর্ক

বিরোধীদের অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনে তৃণমূল লোকজন জড়ো করে রেখে বিরোধী দলের লোকজনকে অফিসে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে যাতে প্রার্থী পদে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারে।

তমলুকে জেলা প্রশাসনিক ভবনের উল্টোদিকে তৃণমূলের এই ক্যাম্প অফিস ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

তমলুকে জেলা প্রশাসনিক ভবনের উল্টোদিকে তৃণমূলের এই ক্যাম্প অফিস ঘিরেই তৈরি হয়েছে বিতর্ক। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
তমলুক ও কাঁথি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০১:৪৫
Share: Save:

পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়াকে কেন্দ্র করে অশান্তির আঁচ লেগেছে রাজ্য জুড়ে। গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী পদে মনোনয়ন জমা দিতে বিডিও অফিসে যাওয়া বামফ্রন্ট, বিজেপি, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। আবার কোথাও তৃণমূলের সমর্থকরা আক্রান্ত হওয়ার অভিযোগও উঠেছে।

বিরোধীদের অভিযোগ, বিডিও অফিসের সামনে তৃণমূল লোকজন জড়ো করে রেখে বিরোধী দলের লোকজনকে অফিসে ঢুকতে বাধা দিচ্ছে যাতে প্রার্থী পদে মনোনয়নপত্র জমা দিতে না পারে। ফলে বিডিও অফিসগুলিতে মনোনয়ন জমা দিতে যাওয়া প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। এই পরস্থিতিতে রাজ্য নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবার নির্দেশ দিয়েছে প্রয়োজন হলে আগামী ৭ এবং ৯ এপ্রিল গ্রামপঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী পদের জন্য মনোনয়নপত্র মহকুমা শাসকের অফিসে জমা দেওয়া যাবে।

শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের আসনগুলিতে তৃণমূলের তরফে প্রচুর মনোনয়ন জমা পড়ে। কাঁথিতে এ দিন জেলা পরিষদের আসনে মনোনয়ন জমা দেন তৃণমূল প্রার্থীরা। ছিলেন সাংসদ শিশির অধিকারী। জেলা পরিষদের বিদায়ী সভাধিপতি মধুরিমা মণ্ডল এদিন কাঁথি-১ ব্লক থেকে ফের জেলা পরিষদের তৃণমূল প্রাথী হিসেবে মনোনয়ন জমা দেন। তিনি বলেন, “গত পাঁচ বছরে জেলা জুড়ে তৃণমূল প্রচুর উন্নয়ন করেছে। সেই উন্নয়নকে তুলে ধরেই ফের জনতার আদালতে ভোট চাইতে যাবো আমরা।’’

পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থীদের মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন জমার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে বিরোধী দলগুলির কর্মী-সমর্থকরা মহকুমাশাসকের অফিসে মনোনয়ন জমার প্রস্তুতি শুরু করেছেন। সুতাহাটা, নন্দীগ্রাম-১, পাঁশকুড়া, শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকে মনোনয়ন জমা দেওয়া নিয়ে ইতিমধ্যে গোলমাল হয়েছে। সবর্ত্রই অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে।

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী, বিডিও এবং মহকুমা শাসকের অফিস চত্বরের ১০০ মিটারের মধ্যে পাঁচ জনের বেশি লোকের জমায়েত থাকতে পারবে না। কিন্তু তৃণমূলের মনোনয়ন জমাকে কেন্দ্র করে খোদ তমলুকে জেলা প্রশাসনিক অফিস ভবনের সামনে ৫০ মিটারের মধ্যে শাসকদলের দু’টি শিবির হয়েছে অস্থায়ী ছাউনি দিয়ে। তমলুক শহর তৃণমূলের ব্যানার, দলীয় পতাকায় মুড়ে দেওয়া ছাড়াও ওই শিবিরে চেয়ার রাখা হয়েছে। শুক্রবার তমলুক মহকুমাশাসকের দফতরে জেলাপরিষদ প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে এসে তৃণমূল নেতা-কর্মী- সমর্থকরা ওই শিবিরে জমায়েত হন।

জেলা বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, নির্বাচন কমিশনের বিধি ভেঙে জেলাশাসক ও মহকুমাশাসকের অফিসের ৫০ মিটারের মধ্যে তৃণমূল শিবির করেছে। বিজেপি’র তমলুক জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নবারুণ নায়েকের অভিযোগ, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অমান্য করে জেলা প্রশাসনের সদর দফতরের সামনে তৃণমূল শিবির করলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। মনোনয়ন জমা দিতে আসা বিরোধী প্রার্থী-নেতা-কর্মীদের উপর আক্রমণের পরিকল্পনা নিয়েই তৃণমূল ওই শিবির করেছে। ওই বেআইনি শিবিরগুলি উচ্ছেদের জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে দাবি জানিয়েছি।’’

অভিযোগ অস্বীকার করে তমলুক শহর তৃণমূল সভাপতি দিব্যেন্দু রায় বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ হল, জেলাশাসক ও মহকুমা শাসকের অফিসে ১০০ মিটারের মধ্যে জমায়েত বা শিবির করা যাবে না। আমরা নিয়ম মেনে ১০০ মিটারের বাইরেই শিবির করেছি। প্রশাসনের অনুমতিও নেওয়া হয়েছে।’’ তমলুকের মহকুমা শাসক শুভ্রজ্যোতি ঘোষ বলেন, ‘‘এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Panchayat Election 2018 TMC Camp
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE