Advertisement
৩০ এপ্রিল ২০২৪
আটকে ইন্দিরা আবাসের বরাদ্দ

বিরোধী এলাকার বাসিন্দা, তাই বঞ্চনার অভিযোগ

বেলপাহাড়ির বেঙবুটা গ্রামের বাসিন্দা বিলাসী মাহাতো। ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর তৈরির পুরো টাকা না মেলায় এখনও নতুন বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না।

অসমাপ্ত: নিজের শেষ না হওয়া বাড়িতে বিলাসী মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

অসমাপ্ত: নিজের শেষ না হওয়া বাড়িতে বিলাসী মাহাতো। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বেলপাহাড়ি শেষ আপডেট: ১১ জুলাই ২০১৭ ০১:০৬
Share: Save:

জঙ্গলমহলে গরিব মানুষের কাছে পরিষেবা পৌঁছে দিতে বদ্ধ পরিকর তাঁর প্রশাসন। এমনটাই দাবি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। বছর খানেক পরেই পঞ্চায়েত ভোট। পঞ্চায়েত স্তরে মানুষের দাবি-দাওয়া নিয়ে স্থানীয় নেতৃত্বকে সক্রিয় হওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শাসকদল। কিন্তু এক সময়ের মাওবাদী প্রভাবিত বেলপাহাড়ির প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলের ছবিটা বাস্তবে অন্যরকম।

বেলপাহাড়ির বেঙবুটা গ্রামের বাসিন্দা বিলাসী মাহাতো। ইন্দিরা আবাস যোজনায় ঘর তৈরির পুরো টাকা না মেলায় এখনও নতুন বাড়িতে ঢুকতে পারছেন না। ২০১৫ সালে বিপিএল তালিকাভুক্ত এই মহিলার নামে শিমূলপাল পঞ্চায়েত থেকে ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির জন্য ৭৫ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ২০১৫-র ডিসেম্বরে প্রথম কিস্তির ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা পেয়ে বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেন তিনি। ২০১৬-র মে মাসে দ্বিতীয় কিস্তির ৩০ হাজার টাকা পান বিলাসীদেবী। কিন্তু প্রকল্পে বরাদ্দ পুরো টাকা না মেলায় এখনও বাড়ির জানালা দরজা তৈরি করতে পারেননি তিনি। ফলে ঘর তৈরি হলেও সেখানে থাকতে পারছেন না।

ইন্দিরা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির কাজে শ্রমদান করলে উপভোক্তাকে একশো দিনের প্রকল্পে মজুরি দেওয়া হয়। কিন্তু বিলাসীদেবী তাও পাননি বলে অভিযোগ। সম্বল বলতে সামান্য চাষজমি। স্বামী খেতমজুর। বিলাসীদেবীও খেতমজুরি করেন। তাঁর অভিযোগ, “বহুবার ব্লক অফিসে গিয়ে আবেদন করেছি। কিন্তু বকেয়া টাকা দেওয়া হচ্ছে না। কোনওরকমে ঘর তৈরি হয়েছে। কিন্তু জানলা-দরজা ছাড়া বাড়িতে থাকব কী করে!” স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যা কংগ্রেসের সলমা মাণ্ডি বলেন, “বিরোধী এলাকার বাসিন্দা হওয়াতেই বিলাসীদেবীকে বকেয়া টাকা ও মজুরি মেটানো হচ্ছে না। অথচ শাসক দলের সমর্থক হওয়ার সুবাদে বাড়ি তৈরি না করেও পুরো টাকা পেয়ে যাওয়ার নজির রয়েছে।”

বিলাসীদেবীর মতোই বেঙবুটা গ্রামের মঞ্জু মাহাত, গণ্ডাপাল গ্রামের সুলোচন কর্মকাররা বাড়ি তৈরি করলেও একশো দিনের প্রকল্পে তাঁদের প্রাপ্য মজুরি পাননি বলে অভিযোগ। তৃণমূলের বেলপাহাড়ি ব্লক সভাপতি তথা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বংশীবদন মাহাত বলেন, “বাড়ি তৈরি করে থাকলে বকেয়া টাকা আটকে থাকার কথা নয়।” বেলপাহাড়ির বিডিও সন্তু তরফদার বলেন, “প্রথম কিস্তির টাকা পাওয়ার ১৮ মাসের মধ্যে বাড়ি তৈরি না করলে বাকি টাকা আর পাওয়া যায় না। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে খোঁজ নিয়ে পদক্ষেপ করব।”

বেলপাহাড়ি পঞ্চায়েত সমিতির বিরোধী সদস্য কংগ্রেসের সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি তৈরির প্রমাণপত্র জমা দেওয়া হয়েছিল। বাড়ি তৈরির মজুরির মাস্টার রোলও যথা সময়ে প্রশাসনের কাছে জমা পড়েছিল। কিন্তু বিরোধী এলাকার বাসিন্দা হওয়ার জন্যই এ ভাবে বেছে বেছে হয়রান করা হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE